পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক নজির গড়ার পর কুম্বলেকে ঘিরে সতীর্থদের উচ্ছ্বাস। ফাইল চিত্র
আজ থেকে ২২ বছর আগের কথা। ৭ ফেব্রুয়ারি দিল্লির এক কনকনে শীতের সকাল। ফিরোজ শাহ কোটলার বাইশগজে যেন রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেন অনিল কুম্বলে। স্পিনের ছোবলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে একাই শেষ করে দিলেন। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অফ স্পিনার জিম লেকরের পর ‘জাম্বো’ হলেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে দ্বিতীয় বোলার যিনি এক ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়ার নজির গড়েছিলেন। তাঁর কীর্তির সুবাদে প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে ২১২ রানে জিতেছিল টিম ইন্ডিয়া। তাই এই বিশেষ দিনে দেশের প্রাক্তন অধিনায়ক ও প্রাক্তন কোচকে ধন্যবাদ জানাল বিসিসিআই।
সেই ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচ শুধু কুম্বলের অনন্য নজিরের জন্য বিখ্যাত নয়। একইসঙ্গে একক দক্ষতায় সেই টেস্ট জেতানোর জন্য দুই টেস্টের সিরিজেও সমতা ফিরিয়েছিল মহম্মদ আজহারউদ্দিনের ভারত। কারণ চেন্নাইতে প্রথম টেস্টে সচিন তেন্ডুলকর ১৩৬ রান করলেও সেই টেস্টে ১২ রানে হেরেছিল ভারত। তাই ২২ বছর আগে দিল্লিতে সেই ঐতিহাসিক টেস্ট জয় দেশের ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে আরও গুরুত্বপূর্ণ।
টসে জিতে ব্যাট করে প্রথম ইনিংসে ২৫২ রান তোলে ভারত। আজহার সর্বাধিক ৬৭ ও সদগোপান রমেশ ৬০ রান করেন। জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৭২ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। প্রথম ইনিংসেও কুম্বলে ৭৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন। হরভজনের ঝুলিতে এসেছিল ৩০ রানে ৩ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসেও ৯৬ রান করেছিলেন বাঁহাতি ওপেনার রমেশ। ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ফলে সেই টেস্ট জেতার জন্য পাকিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪২০ রান।
দুই পাক ওপেনার সইদ আনোয়ার ও শাহিদ আফ্রিদি প্রথম উইকেটে ১০১ রান যোগ করলেও শেষরক্ষা হয়নি। অনিল কুম্বলে হাতে বল নেওয়ার পরেই পাকিস্তানের ব্যাটিং তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ে। ৬০.৩ ওভারে মাত্র ২০৭ রানে শেষ হয়ে যায় ওয়াসিম আক্রমের দল। দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৪ রান দিয়ে ১০ উইকেট নেন এই প্রবাদপ্রতিম লেগ স্পিনার। দেশের হয়ে ১৩২ টেস্টে ৬১৯ উইকেট নিয়ে ২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে চির বিদায় জানান তিনি। মুথাইয়া মুরলিথরন (৮০০) ও শেন ওয়ার্নের (৭০৮) পর তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিদের হিসেবে রয়েছেন অনিল কুম্বলে।