পরামর্শ: কোহালি ও রাহানের আলোচনা। শনিবার। পিটিআই/বিসিসিআই
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচের প্রথম দু'দিনে মোট ১৯টি নো-বল করেছে ভারত। পেসাররা করেছেন ১১টি। আটটি নো-বল করেছেন স্পিনাররা। যা একেবারেই মানতে পারছেন না প্রাক্তন ক্রিকেটারদের অনেকেই।
চেন্নাইয়ের পিচে এমনিতেই সাহায্য পাচ্ছেন না বোলাররা। তার উপরে একাধিক নো-বল করে রানের গতি বাড়াতে সাহায্য করছেন শাহবাজ় নাদিম, যশপ্রীত বুমরারা। নাদিম ও বুমরা দু'জনেই ছ'টি করে নো-বল করেছেন। পাঁচটি নো-বল করেন ইশান্ত শর্মা। দু'টি আর অশ্বিন।
পেসাররা নো-বল করলে তবুও মার্জনা করা যায় বলে কেউ কেউ মানছেন। অনেকটা দৌড়ে এসে বল করেন তাঁরা। কিন্তু স্পিনাররা কী করে এতগুলো নো-বল করলেন? সাংবাদিক বৈঠকে এসে নিজের ভুল স্বীকার করে নেন ভারতের বাঁ-হাতি স্পিনার শাহবাজ় নাদিম। তিনি বলেছেন, “প্রথম দিন থেকেই অ্যাকশনে সমস্যা হচ্ছে আমার। ডেলিভারির সময় অনেকটাই দেরিতে লাফাচ্ছি। তাই হয়তো নো-বলকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না।” শাহবাজ় যোগ করেন, “প্রথম দিন সমস্যাটা বেশি হচ্ছিল। দ্বিতীয় দিন কিছুটা হলেও সেটাকে নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে।”
কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান সুনীল গাওস্করও অসন্তুষ্ট। ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় বলছিলেন, “ছোটবেলায় আমাদের বলা হত, একজন স্পিনার নো-বল করা মানে অপরাধ। কারণ স্পিনারদের বড় রান-আপ নিয়ে বল করতে হয় না। কয়েক পা দৌড়ে বল করতে হয় স্পিনারদের। শাহবাজ়ের নো-বল করার প্রবণতা আমাকে অবাক করেছে।” সানি যোগ করেন, “কোনও একটি ম্যাচে উইকেট থেকে সাহায্য কম পেতেই পারে স্পিনাররা। তাই বলে নো-বল করে বিপক্ষের উপর চাপ আলগা করে দেওয়ার মানে হয় না। মেডেন ওভার করার চেষ্টা করে রান আটকানো উচিত ছিল স্পিনারদের।”
প্রাত্তন ভারতীয় ব্যাটসম্যান সঞ্জয় মঞ্জরেকর বলেছেন, “এত নো-বল করলে কখনও বিপক্ষকে চাপে ফেলা যায় না। পিচেও স্পিনাররা সে রকম সাহায্য পাচ্ছে না। এ ধরনের পিচে একজন দ্রুতগতির স্পিনার থাকলে ভাল হত। রবীন্দ্র জাডেজার অভাব এ বারে সত্যিই টের পাচ্ছে ভারত।”
নাদিম যদিও জানিয়েছেন, বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানেরা কিছুটা সমস্যায় পড়তে পারেন। তাঁর মত, “ভেবেছিলাম চেন্নাইয়ের পিচ স্পিনারদের সাহায্য করবে। যদিও সে রকম কিছুই দেখা যাচ্ছে না। তবে বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানের অফস্টাম্পে গুড লেংথ স্পটে বেশ কিছু ক্ষত তৈরি হয়েছে। বেন স্টোকসের বিরুদ্ধে সেই জায়গাটা ব্যবহার করতে চেয়েছি। সেখান থেকেই কিছুটা বাড়তি বাউন্স পাওয়া গিয়েছে।” যোগ করেছেন, “তবে পিচ থেকে সাহায্য পাওয়া যায়নি বলেই রক্ষণাত্মক বোলিং করতে বাধ্য হয়েছি আমরা।”
প্রাক্তন ভারতীয় ব্যাটসম্যান ভিভিএস লক্ষ্মণ মনে করেন, তৃতীয় দিন থেকে ঘুরবে বল। তাঁর কথায়, “দ্বিতীয় দিনে বেশ কয়েকটি বল অতিরিক্ত বাউন্স করেছে। তৃতীয় দিন কিন্তু পিচের ক্ষত আরও বাড়বে। সেখানে বল পড়লে অসমান বাউন্স হওয়ার সম্ভাবনাও প্রচুর।”
প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভন প্রশ্ন তুলেছেন ভারতীয় ক্রিকেটারদের শরীরী ভাষা নিয়ে। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ঋষভ পন্থ ছাড়া কারও মধ্যে চনমনে ভাব দেখা যায়নি। একমাত্র ঋষভকে দেখেই ইতিবাচক মানসিকতার ইঙ্গিত পেয়েছেন তিনি। এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটে ভন বলেছেন, “ভারতীয় ক্রিকেটারেরা অস্ট্রেলিয়া থেকে ঐতিহাসিক সিরিজ জিতে ফিরেছে। তার কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না এই ম্যাচে। একমাত্র ঋষভ পন্থের মধ্যে চনমনে ভাব লক্ষ্য করেছি। বাকিরা কেউ সে ভাবে মাঠে কথা বলছে না।” শুধু নো-বল নয়, লোপ্পা ক্যাচ ফেলে দিলেন রোহিত শর্মা। তা দেেখেও সকলে অবাক। ক্লাব পর্যায়েও যে ক্যাচ কেউ ফেলবে না।