সীতা সাহু। ছবি: টুইটার
ক্রীড়াবিদদের প্রতি বঞ্চনার ঘটনা কম নেই আমাদের দেশে। সেই তালিকাতেই আরও এক সংযোজন সীতা সাহু।
২০১১ সালে আথেন্সে আয়োজিত স্পেশাল অলিম্পিক্সে ২০০ এবং ১৬০০ মিটার দৌড়ে দু’টি ব্রোঞ্জ পদক জেতেন সীতা। তীব্র আর্থিক সমস্যা, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও অ্যাথলেটিক্স ছাড়েননি তিনি। স্পেশাল অলিম্পিক্সে সাফল্যের পর প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলেন অনেক। কিন্তু ওই পর্যন্তই।
মধ্যপ্রদেশের রেওয়ার বাসিন্দা সীতা। রাস্তার ধারে তাঁর ছোট্ট দোকান। শিঙাড়া বিক্রি করে কোনও রকমে দিন গুজরান হয়। বলা ভাল, দিন গুজরান হত। কারণ তাঁর ওই ছোট্ট দোকানটি ভেঙে দিয়েছে স্থানীয় পুরসভা। হকার উচ্ছেদ অভিযানের ‘বলি’ হয়েছে সীতার শিঙাড়ার দোকান। এখন কী ভাবে দিন চলবে সেটাই বড় চিন্তায় রেখেছে সীতাকে।
সীতা সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিংহ চৌহান সরকারের কাছে। প্রতিবন্ধী হিসাবে তিনি যাতে কোনও সুযোগ পেতে পারেন, সেই আবেদন জানান। কিন্তু রাজ্য সরকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে কি না তা নিশ্চিত নয়। বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ করেছেন সীতার মা। সীতাও বলেছেন, ‘‘২০১১ সালে অলিম্পিক্সে অংশগ্রহণ করে দু’টি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলাম। তখন রাজ্য সরকার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। পাঁচ লক্ষ টাকা ছাড়াও বাড়ি এবং দোকান করে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দোকান বা বাড়ি কিছুই পাইনি। তাই মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রতিশ্রুতির সেই বাড়ি এবং দোকানের জন্য আবেদন জানিয়েছি।’’
২০১৩ সালে স্পেশাল অলিম্পিক্সে সাফল্যের পর বহু সংবর্ধনা পেয়েছিলেন সীতা। পেয়েছিলেন অনেক প্রতিশ্রুতি, আশ্বাসও। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার তাঁকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছিল। সেই সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সংবর্ধনা জানিয়ে সীতাকে দেশের গর্ব বলে উল্লেখ করেন। সীতার দাবি, জ্যোতিরাদিত্য পাঁচ লক্ষ টাকা পুরস্কারের পাশাপাশি বাড়ি এবং দোকান করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু পাঁচ লক্ষ টাকা পেলেও বাড়ি বা দোকান পাননি তিনি। যে টাকা পেয়েছিলেন তা দিয়েই শিঙাড়ার ব্যবসা শুরু করেন। জীবন ধারণের সেই সম্বলও কেড়ে নিয়েছে পুরসভার বুলডোজার।