(বাঁ দিকে) রোহিত শর্মা এবং গৌতম গম্ভীর (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
সিডনিতে টসের পর জসপ্রীত বুমরাহ বলেছেন, দলে একতার অভাব নেই। কিন্তু সিডনিতে ভারতীয় দলের ছবি অন্য ইঙ্গিত দিচ্ছে। সাজঘরে অশান্তির ছবি দেখা গিয়েছিল মেলবোর্নে। কোচ গৌতম গম্ভীর এবং অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে বাদানুবাদে জড়াতে দেখা গিয়েছিল। তাঁদের সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে।
গম্ভীরের বার্তা খুব স্পষ্ট। দলে থাকতে হলে পারফর্ম করতে হবে। রোহিত ম্যাচের পর ম্যাচ ব্যর্থ হচ্ছেন। অধিনায়ক হলেও ছাড় নেই তাঁর। গম্ভীর তাঁকে বিশ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছেন সিডনি টেস্টে। বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির শেষ টেস্ট রোহিত খেলবেন না, এমন ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল বৃহস্পতিবার ভারতীয় দলের অনুশীলনে। অন্য দিনের মতো সক্রিয় দেখায়নি রোহিতকে। টেস্টের পিচ দেখতেও গম্ভীর গিয়েছিলেন সহ-অধিনায়ক জসপ্রীত বুমরাহকে নিয়ে। তাঁদের কিছুটা পরে পিচ দেখতে যান রোহিতও। ফেরার সময় রোহিতের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়নি গম্ভীরকে। কেউ কারও দিকে তাকানওনি। আবার খেলা শুরুর আগের দিন সাধারণ সাংবাদিক বৈঠকে আসেন অধিনায়ক। বৃহস্পতিবার এসেছিলেন গম্ভীর। তাতে রোহিতের না খেলা নিয়ে জল্পনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছিল।
শুক্রবার বুমরাহ বলেছেন, “আমাদের দলের একতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু আমাদের ক্যাপ্টেন নিজেই দলের স্বার্থে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। এটাই প্রমাণ করে আমাদের দলে কতটা একতা রয়েছে। আমাদের দলের কেউ নিজের জন্য খেলে না। দলের জন্য যেটা ভাল, সেই সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়।” বুমরাহ অধিনায়ক হিসাবে দলের ভিতর শান্তির কথা বললেও আদতে পরিস্থিতি ভিন্ন। সিডনিতে থাকা ভারতীয় শিবির এক রকম দু’ভাগে বিভক্ত। পরিস্থিতিও অগ্নিগর্ভ। সিডনির ফলাফল আরও উত্তপ্ত করতে পারে পরিস্থিতি।
রোহিতের সঙ্গে গম্ভীরের সম্পর্কের ফাটল এতটাই গভীর হয়েছে যে, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকেও (বিসিসিআই) হস্তক্ষেপ করতে হয় সিডনি টেস্টের আগে। বোর্ডের এক প্রভাবশালী কর্তা ফোন করেছিলেন গম্ভীরকে। তাঁকে বলা হয়, সিডনিকে রোহিতকে খেলাতে। যাতে তিনি সম্মানজনক ভাবে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে পারেন। গম্ভীর মানেননি। তিনি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল খেলার সম্ভাবনার যুক্তি দিয়ে খারিজ করেন অনুরোধ। বৃহস্পতিবার ফিল্ডিং অনুশীলনের সময়ও উইকেটরক্ষক ঋষভ পন্থের পাশে প্রথম স্লিপে লোকেশ রাহুল দ্বিতীয় স্লিপে বিরাট কোহলি, তৃতীয় স্লিপে নীতীশ কুমার রেড্ডি এবং গালিতে যশস্বী জয়সওয়ালকে দাঁড়াতে দেখা যায়। অথচ টেস্টে রোহিত নিয়মিত স্লিপেই ফিল্ডিং করেন।
ভারতীয় দল সূত্রে খবর, গম্ভীর এবং রোহিতের মধ্যে কথা নেই। তাঁদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করছেন বুমরাহ এবং প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকর। বৃহস্পতিবার অনুশীলনের সময়ও পরস্পরের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি। রোহিত অন্য সকলের সঙ্গে কথা বললেও গম্ভীরের কাছাকাছিও জাননি। দলের মূল অনুশীলনের জায়গা থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন রোহিত। দলের সকলের সঙ্গে একই জায়গা দিয়ে স্টেডিয়ামের বাইরে বেরোননি। সকলের কিছুটা পর অন্য একটি দরজা দিয়ে বাইরে আসতে দেখা যায় তাঁকে। ভারতীয় শিবিরের অশান্তির ছবি বৃহস্পতিবারই দেখা গিয়েছে। যে শান্তির ছবি দেখা যাচ্ছে, তা হয়তো ঝড়ের পূর্বাভাস। সিডনি টেস্টেও ভারত হারলে রোহিত-গম্ভীর দ্বন্দ্ব ঝড়ে পরিণত হতে পারে।