নোভাক জোকোভিচ। ছবি: রয়টার্স।
কিছু দিন আগেই ৩৭তম জন্মদিন পালন করেছেন তিনি। ফরাসি ওপেন শুরু হওয়ার মুখেও প্যারিসে আসেননি। ছিলেন অস্ট্রিয়ার জেনেভায় অখ্যাত একটি প্রতিযোগিতায়, যেখানে আগে কোনও দিন খেলেননি তিনি। বলবয়দের সঙ্গে তাঁর মাতামাতি দেখে পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে গিয়েছে অনেকেরই। আসলে সাম্প্রতিক কালে নোভাক জোকোভিচ যে ফর্মের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তাতে তাঁর জীবনে একটু মানসিক শান্তির দরকার, তা অনেকেই মনে করছেন। তবু, ফরাসি ওপেন জেতার আসল দাবিদার তিনিই।
কেরিয়ারে ১৭তম ফরাসি ওপেন খেলতে নামবেন জোকোভিচ। তবে আগের বারের চেয়েও অনেক বেশি হারের চাপ মাথায় নিয়ে খেলতে নামবেন। এ বছর একটাও প্রতিযোগিতায় জেতেননি। ২০২৩-এর ইউএস ওপেন জেতার পর থেকে মনে হচ্ছিল তাঁকে কেউ ছুঁতে পারবে না। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে সেমিফাইনালে ইয়ানিক সিনারের কাছে হেরে তাঁর দৌড় শেষ হয়ে যায়। এর পর ইন্ডিয়ান ওয়েলসে বিশ্বের ১২৩ নম্বর খেলোয়াড় লুকাস নর্ডির কাছে হেরে যান। সুরকির কোর্টেও ভাল খেলেননি। মন্টে-কার্লোতে ক্যাসপার রুডের কাছে হারেন। ইটালিয়ান ওপেনে রাউন্ড অফ ৩২-তে হেরে যান।
রোমে আলেজ়ান্দ্রো তাবিলোর কাছে হারের পর তিনি বলেছিলেন, “কোর্টের কোনও রকম ইতিবাচক মানসিকতাই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। বল ঠিক মতো মারতে পারছিলাম না। কোর্টে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলাম।”
সেই প্রতিযোগিতাতেই সই দেওয়ার সময় দুর্ঘটনাবশত এক সমর্থকের হাত থেকে বোতল পড়ে জোকোভিচের মাথায়। পরের দিন বাইসাইকেল হেলমেট পরে অনুশীলনে যান। কিন্তু সর্দি এবং মাথা ঝিমঝিম করতে থাকে বলে জানিয়েছিলেন জোকোভিচ।
গুরুতর কোনও চোটের সম্ভাবনা ছিল না। তবু জোকোভিচ ছন্দ খুঁজতে জেনেভা যান। সেখানে দু’টি ম্যাচ জিতলেও হেরে যান সেমিফাইনালে। তাতে প্যারিসে আসার আগে প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ও খানিকটা বেড়ে যায়। এই বয়সেও জোকোভিচের যা স্ফূর্তি, তার সঙ্গে কোনও খেলোয়াড়েরই তুলনা চলে না।
জোকোভিচ বলেছিলেন, “মাথার মধ্যে সর্ব ক্ষণ কোনও না কোনও কৌশল চলতে থাকে আমার। সব সময় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে নামি। আরও বেশি খেতাব জয় এবং রেকর্ড ভাঙাই লক্ষ্য আমার। ৩০ বছর বয়সের আগে যা খেলছিলাম, এখন তার থেকে অনেক ভাল খেলি।”
জোকোভিচ এ কথা বলতেই পারেন। ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে তিনি ১২টি জিতেছেন ৩০ পেরনোর পর। তবে ৩৭-এ পৌঁছে তাঁকে নিয়ে এ বার প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ফরাসি ওপেনের আগে জোকোভিচ ছন্দ চিন্তার কারণ। সাম্প্রতিক কালের মধ্যে সবচেয়ে সহজ ড্র হয়েছে এ বার। রাফায়েল নাদালের কেরিয়ার প্রায় শেষের দিকে। কোমরের চোট সারানোর পর সিনার প্যারিসে এসেছেন খাপছাড়া ছন্দ নিয়ে। বিশ্বের ৩ নম্বর কার্লোস আলকারাস পুরনো ছন্দ ফিরে পাননি এখনও।
সে কারণেই খারাপ ফর্ম থাকা সত্ত্বেও জোকোভিচকে ট্রফির দাবিদার বলা হচ্ছে। গত চার বছরে তিন বার ফরাসি ওপেন জেতার সুযোগ তাঁর কাছে।
প্রাক্তনী মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা বলেছেন, “এ বার কাউকে নিয়ে প্রত্যাশার জায়গা নেই। ফরাসি ওপেন ছাড়া যে কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যাম নোভাকের বিরুদ্ধে বাকি সবাই ট্রফির লড়াই করে। কিন্তু রাফা এ বার সেরা টেনিস খেলছে না। তাই নোভাকই এগিয়ে।”