গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আইপিএল জিতল কেকেআর। গোটা প্রতিযোগিতাতেই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দাপট দেখিয়েছে তারা। প্রতিটি ম্যাচেই দলের প্রায় প্রত্যেক ক্রিকেটার কোনও না কোনও ভূমিকা নিয়েছেন। তার মধ্যেও বেশ কিছু ক্রিকেটারের পারফরম্যান্স নজর কেড়ে নিয়েছে। তার মধ্যে পাঁচটি বেছে নিল আনন্দবাজার অনলাইন।
আন্দ্রে রাসেল (বনাম হায়দরাবাদ, ২৩ মার্চ)
আইপিএলের প্রথম ম্যাচ যে কোনও দলের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ। সব দলই প্রথম ম্যাচ জিতে শুরু করতে চায়। এই মরসুমে কেকেআর সেটা পেরেছে শুধুমাত্র আন্দ্রে রাসেলের সৌজন্যে। ইডেনে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে আগে ব্যাট করতে নেমে ১১৯ রানে ৬ উইকেট পড়ে গিয়েছিল কেকেআরের। প্রথম সারির ব্যাটারেরা সবাই ফিরে গিয়েছিলেন সাজঘরে। সেই ম্যাচে রাসেল-ঝড় জিতিয়ে দেয় কেকেআরকে। আটে ব্যাট করতে নেমে ২৫ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলেন। বল হাতে ২ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন। ম্যাচের সেরার পুরস্কার তাঁকে ছাড়া আর কাকেই বা দেওয়া যেত!
সুনীল নারাইন (বনাম দিল্লি ক্যাপিটালস, ৩ এপ্রিল)
কেকেআরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান ওঠে এই ম্যাচেই। তত দিনে আইপিএলে কেকেআর ব্যাটারদের তাণ্ডব টের পেয়েছে বেশ কিছু দল। সেই ব্যাটিং সর্বোচ্চ পর্যায়ে দেখা গিয়েছিল এই ম্যাচে। ওপেন করতে নেমে সুনীল নারাইন ৭টি চার এবং ৭টি ছয়ের সাহায্যে ৩৮ বলে ৮৫ রান করেন। বাকি ব্যাটারদের সৌজন্যে ২৭২/৭ তোলে কেকেআর। বল করতে নেমে দিল্লিকে মাথা তুলতে দেননি নারাইন। চার ওভার বল করে মাত্র ২৯ রান দেওয়ার পাশাপাশি সুমিত কুমারের উইকেট তুলে নেন।
সুনীল নারাইন (বনাম রাজস্থান রয়্যালস, ১৬ এপ্রিল)
আইপিএলের প্রথম মরসুমে ব্রেন্ডন ম্যাকালাম কেকেআরের হয়ে শতরান করার পর দ্বিতীয় শতরানের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল ১৫ বছর। গত বছর বেঙ্কটেশ আয়ার খরা কাটান। তবে তৃতীয় শতরানের জন্য বেশি দিন অপেক্ষা করত হল না। সেটাও এ বার দেখে নিল কেকেআর। সেই নারাইনের সৌজন্যেই। রাজস্থান ম্যাচে ৫৬ বলে ১০৯ রান করেন তিনি। ১৩টি চার এবং ৬টি ছয় মারেন। বল হাতে চার ওভারে মাত্র ৩০ রানে ২ উইকেট নেন। দুঃখের বিষয়, এত কিছু করেও ঘরের মাঠে দলকে ম্যাচ জেতাতে পারেননি। জস বাটলারের অবিশ্বাস্য শতরানে হেরে যায় কেকেআর।
বেঙ্কটেশ আয়ার (বনাম মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, ৩ মে)
মুম্বইকে দেখলেই কেকেআর ক্রিকেটারদের মনে ভয় ধরে যাওয়া নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। এ বার অবশ্য কেকেআর দু’টি ম্যাচেই হারিয়েছে মুম্বইকে। তবে প্রথমটিতে তাদের হেরে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। দলকে রক্ষা করেন বেঙ্কটেশ আয়ার। ওয়াংখেড়েতে ৫৭ রানে ৫ উইকেট পড়ে গিয়েছিল কেকেআরের। সেখান থেকে বেঙ্কটেশের ৫২ বলে ৭০ রান না থাকলে কেকেআর ম্যাচটি অবধারিত ভাবে হারে। বেঙ্কটেশ ৬টি চার এবং ৩টি ছয় মেরেছিলেন।
মিচেল স্টার্ক (বনাম হায়দরাবাদ, ২১ মে)
আইপিএলের শুরু থেকে স্টার্ককে নিয়ে অনেক কথাই হয়েছিল। তাঁর ২৫ কোটির দাম নিয়ে অনেক সমালোচনা শুনতে হয়েছে। সেই স্টার্ক প্রমাণ করে দিয়েছেন তিনি বড় ম্যাচের ক্রিকেটার। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে প্রথম কোয়ালিফায়ারে তাঁর বোলিং কেকেআরকে জিতিয়েছে। ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই ফেরান বিপক্ষের ত্রাস ট্রেভিস হেডকে। এর পর নীতীশ কুমার রেড্ডি এবং শাহবাজ় আহমেদকে তুলে নেন। সেই ধাক্কা থেকে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি হায়দরাবাদ। কেকেআর সহজেই ফাইনালে ওঠে।