চ্যাম্পিয়ন: ফের আই লিগ মোহনবাগানের। কল্যাণী স্টেডিয়ামে আইজলকে হারিয়ে চার ম্যাচ বাকি থাকতেই ভারতসেরা হওয়ার পরে উল্লাস বেইতিয়া (নীচে বাঁ দিকে), পাপাদের (নীচে বসা)। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
পাঁচ বছর আগে অধিনায়ক হিসেবে আই লিগ হাতে নেওয়ার পরে মনে হয়েছিল, ফুটবলার জীবনের সব স্বপ্নই পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু মঙ্গলবার ফের লিগ-জয়ী দলের সদস্য হয়ে মনে হচ্ছে, এই দুর্লভ সম্মান ক’জন পায়! এটাও তো পেয়ে গেলাম। টানা চোদ্দো বছর মোহনবাগান জার্সি পরে খেলেছি। সুপার কাপ, ফেডারেশন কাপ, কলকাতা লিগ পেয়েছি অনেকবার। কিন্তু ভারত সেরা হওয়ার আনন্দটাই আলাদা। এ স্বাদের কোনও ভাগ হয় না বলতে পারেন। পাঁচ বছর আগে কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে গিয়ে বেঙ্গালুরুর সঙ্গে শেষ ম্যাচ ড্র করে তীব্র উত্তেজনার মধ্যে খেতাব জিতেছিলাম। এ বার তো চার ম্যাচ আগেই আই লিগ চলে এল মুঠোয়।
দু’বারের আই লিগ জয়ের মধ্যে তুলনা করা ঠিক হবে না। তবে এটা বলতে পারি সঞ্জয় স্যরের (সেন) সেই দলটার সঙ্গে এ বারের কিবু স্যরের (ভিকুনা) দলের পার্থক্য একটাই। তা হল অভিজ্ঞতা। ২০১৫-র লিগ-জয়ী দলে পিয়ের বোয়া, সনি নর্দে বেলো রজ্জাক, ইউসা কাতসুমির সঙ্গে ছিল প্রীতম কোটাল, শেহনাজ সিংহ, বলবন্ত সিংহের মতো অভিজ্ঞেরা। এ বার সেই তুলনায় ভারতীয় ফুটবলারেরা সবাই ছিল জুনিয়র। আমি, ধনচন্দ্র (সিংহ), দেবজিৎ মজুমদার ছাড়া পাঁচ বছর আগের দলের কেউ ছিল নেই এই দলে। শেখ সাহিল, ননগোম্বা নওরেম, শিল্টন ডি’সিলভা, শুভ ঘোষ— এরা সবাই তো একেবারেই তরুণ। বিদেশিরাও সবাই প্রথম খেলছেন ভারতে। ফলে দলকে আগুনে করে তুলতে কোচের কিছুটা সময় লেগেছিল। তবে এটা মানতেই হবে, কলকাতা লিগ, ডুরান্ড কাপ, বাংলাদেশের প্রতিযোগিতায় ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও কোচের উপরে আস্থা রেখেছেন আমাদের ক্লাবের কর্তারা। আর এটাও আমার সঙ্গে সবাই স্বীকার করবেন যে, লা লিগায় খেলে আসা পাপা বাবাকর দিয়োহারা দলে যোগ দেওয়ার পরে মোহনবাগানের চেহারাটাই বদলে গিয়েছিল। জোসেবা বেইতিয়া, ফ্রান গঞ্জালেস, ফ্রান মোরান্তেদের ছোট না-করেও বলছি, পাপা চাপের মুখে গোল করে দলকে না-জেতালে বেশ কিছু ম্যাচে সমস্যায় পড়তে হত আমাদের। নয় ম্যাচে দশ গোল, সনি নর্দেও কিন্তু এই পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি সবুজ-মেরুন জার্সিতে। তার মধ্যে মনে হয় গোটা ছয়েক ম্যান অব দ্য ম্যাচের সম্মান। আজও চাপের
মুখে কী ঠান্ডা মাথায় বলটা আইজলের গোলে রাখল! আমি মনে করি, প্রথম পর্বের ডার্বি এবং রিয়াল কাশ্মীরের ম্যাচ দু’টিই এ বারের খেতাব জয়ের টার্নিং পয়েন্ট।
মঙ্গলবার খেতাব জয়ের এই অসাধারণ মুহূর্তে মনে পড়ছে কিবু ভিকুনার অসাধারণ ম্যান ম্যানেজমেন্ট দক্ষতা। পুরো মরসুম ড্রেসিংরুম শান্ত থাকার রসায়ন এটাই। যারা খেলেছে এবং যারা খেলেনি, তাদের মধ্যে