রঙিন: গোলাপি আলোয় সেজে উঠেছে ইডেনের গ্যালারিও। নিজস্ব চিত্র
গোলাপি বলে ঐতিহাসিক দিনরাতের টেস্ট ম্যাচের টিকিটের জন্য মঙ্গলবার দুপুরে ইডেনে এসেছিলেন অনুষ্টুপ মজুমদার। তিন বছর আগে সিএবি সুপার লিগের ফাইনালে ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম গোলাপি বলে দিনরাতের ম্যাচ এই ইডেনেই খেলেছিলেন মোহনবাগানের হয়ে। ভবানীপুরের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে অনুষ্টুপ করেছিলেন ৮৩ রান।
সেই অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে তাঁর মুখে সতীর্থ মহম্মদ শামির কথা। বলেন, ‘‘আমি ৮৩ রান করলেও নায়ক শামিই। দুই ইনিংস মিলিয়ে সাত উইকেট নিয়ে ফাইনাল জিতিয়েছিল। ওর বলের গতি আরও বেড়েছে। রাতের আলোয় গোলাপি বলে শামিকে খেলাই কঠিন পরীক্ষা বাংলাদেশের।’’
স্থানীয় ক্রিকেটের সেই গোলাপি বলের দ্বৈরথে টস জিতে মোহনবাগানকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন ভবানীপুর অধিনায়ক ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়। মোহনবাগান প্রথমে ব্যাট করে ২৯৯ রানে অলআউট হয়। ভবানীপুর প্রথম ইনিংসে তোলে ১৫৩ রান। মাঝের সারির ব্যাটসম্যানদের ফিরিয়েছিল শামির আগুনে স্পেল। ভবানীপুরের দ্বিতীয় ইনিংসে ওপেন করতে নামা অভিষেক দাস ও পার্থসারথী ভট্টাচার্যও মনে করেন, ‘‘ফারাক গড়েছিল শামির গতি ও বাউন্স।’’ দ্বিতীয় ইনিংসে মোহনবাগান করে ৩৪৯ রান। ভবানীপুরের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় ১৯৯ রানে। মোহনবাগান জিতে যায় ২৯৬ রানে।
অভিষেক বলছেন, ‘‘শামিকে সে দিন খেলাই যাচ্ছিল না। এমনতিতেই শামির বল মাটিতে পড়ার পরে গতি বেড়ে যায়। সে দিন ইডেনে ওর ডেলিভারিগুলো গুড লেংথে পড়ে আরও লাফাচ্ছিল। কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না।’’ যোগ করেন, ‘‘নতুন গোলাপি বল চকিতে ঢুকে আসে উইকেটের দিকে। শামি সেটাই করেছিল বার বার। এখন ও যে রকম ফর্মে আছে, ইডেনে বাংলাদেশের জন্য কঠিন সময় অপেক্ষা করছে।’’
পার্থসারথী এখন ইস্টবেঙ্গলে। তিনি বলছেন, ‘‘গোলাপি বলে শামির গতিই ভয়ঙ্কর হবে। সিমের উপরে বল পড়ে আরও গতিতে ব্যাটসম্যানের কাছে আসবে ওই ডেলিভারিগুলো। গতি ও বাউন্স কাজে লাগিয়ে একাই শেষ করে দিতে পারে বাংলাদেশকে।’’
ওই ম্যাচে ভবানীপুরের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৫০ রান করেছিলেন শুভম চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, ‘‘প্রথম ইনিংসে শামির বল বুঝতেই পারিনি। আট রানে আউট হয়ে যাই।’’ যোগ করেন, ‘‘দ্বিতীয় ইনিংসে মরিয়া হয়ে ব্যাকফুটে খেলতে শুরু করি। যাতে সুইংটা ভেঙে যায়। এ বারও শামি অপ্রতিরোধ্য হবে।’’
ওই ম্যাচে ভবানীপুরের কোচ ছিলেন আবদুল মুনায়েম। যিনি শামিকে কলকাতা ময়দানে দেখছেন শুরুর দিন থেকে। তিনি বলছেন, ‘‘নব্বইয়ের দশকে পি সেন ট্রফিতে শ্রীনাথের একটা স্পেল দেখেছিলাম। বল বোঝা যাচ্ছিল না। গোলাপি বলে শামি কিন্তু শ্রীনাথের চেয়েও জোরে বল করছিল। সঙ্গে ছিল ভয়ঙ্কর বাউন্স। আমাদের কোনও চেষ্টাই কাজে লাগেনি।’’ তার পরেই মুশফিকুর রহিমদের জন্য তাঁর সতর্কবার্তা, ‘‘বাংলাদেশও না একই সমস্যায় পড়ে। শামি কিন্তু এখন আরও ধারালো।’’