—ছবি সংগৃহীত
এখনকার পাকিস্তান দলের পেসারদের বয়সের প্রমাণপত্র নাকি জাল! তাঁদের আসল বয়স নাকি নয় থেকে ১০ বছর বেশি। এমনই মারাত্মক অভিযোগ পাকিস্তানের এক প্রাক্তন পেসারেরই। তিনি মহম্মদ আসিফ। তাঁর আফসোস, বয়স বেশি হওয়ার জন্যই এখন পাক পেসাররা বড় স্পেলে বল করতে পারেন না। এ’সপ্তাহেই নিউজ়িল্যান্ডের কাছে ১০১ রানে টেস্টে হেরেছে পাকিস্তান। এ রকম একটা অবস্থায় অসিফের মন্তব্যে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে।
‘‘ওদের (পাক পেসারদের) বয়স অনেক। কাগজে-কলমে দেখানো হয় ১৭-১৮। কিন্তু আসলে ওরা ২৭-২৮ বছরের,’’ ইউ টিউব চ্যানেলে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন আসিফ। প্রাক্তন পাক পেসার অবশ্য আলাদা করে কারও নাম করেননি। তবে তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘ওদের টানা ২০-২৫ ওভার বল করার ক্ষমতাই নেই। শরীর নমনীয় নয়। তাই কিছুক্ষণ পরেই পেশি শক্ত হয়ে যায়। ৫-৬ ওভারের একটা স্পেল করার পরে মাঠেই দাঁড়িয়ে থাকার ক্ষমতা থাকে না।’’গড়াপেটা কাণ্ডে জড়িয়ে যাওয়া আসিফ তাঁর সময়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা পেসার ছিলেন। এখনকার পাক পেসারদের দেখে তিনি রীতিমতো হতাশ। তিনি বলেছেন, ‘‘মনে পড়ে না গত পাঁচ-ছ’বছরে কোনও ম্যাচে আমাদের কোনও পেসার ১০ উইকেট নিয়েছে! নিউজ়িল্যান্ডের এই টেস্টের মতো পিচ দেখলে বল করার জন্য আমাদের রীতিমতো লোভ হত। আমি নিজে অন্তত পাঁচ উইকেট না নিলে বল ছাড়তে চাইতাম না।’’ এখনকার পেসারদের আরও সমালোচনা করে তিনি জুড়েছেন, ‘‘এইসব ছেলেদের তো কোনও জ্ঞানই নেই। ব্যাটসম্যানদের সামনের পায়ে খেলাতেই জানে না। উইকেটে বল করতে গেলেই লেগের দিকে ফেলে। কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।’’ পাক ক্রিকেটে বয়স ভাঁড়ানো নিয়ে সমস্যাটা অবশ্য নতুন কিছু নয়। এখনকার পাকিস্তান দলে পেসারদের মধ্যে শাহিন আফ্রিদি ও নাসিম শাহের বয়স বলা হচ্ছে যথাক্রমে ২০ ও ১৭। মহম্মদ আব্বাসের ৩০। ফাহিম আশরাফের বয়স ২৬। আসিফের অভিযোগ সত্যি হলে, এর কোনওটাই তাঁদের আসল বয়স নয়। সবাই আরও ৯ থেকে ১০ বছর বড়।
ইউ টিউবে এই অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণও করেছেন আসিফ। তিনি বলেছেন, ২০০৬-এ করাচিতে হওয়া ভারত-পাকিস্তান টেস্টের কথা। তার আগের দু’টি টেস্ট ড্র হওয়ায় দু’দলই এই ম্যাচটা জিততে চেয়েছিল। আসিফ স্বীকার করেছেন তাঁর ও শোয়েব আখতারের কাছে বিরাট উদ্বেগের বিষয় ছিল ভারতের ব্যাটিং। সচিন তেন্ডুলকর, রাহুল দ্রাবিড়, বীরেন্দ্র সহবাগ, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, ভিভিএস লক্ষ্মণ, যুবরাজ সিংহ, মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের বিরুদ্ধে কী ভাবে সাফল্য আসতে পারে তা নিয়ে ছিল তাঁদের যাবতীয় চিন্তা ছিল। আসিফের কথায়, ‘‘ওদের খেলোয়াড়-তালিকা দেখে মনে হয়েছিল, কী ভাবে সবাইকে আউট করা সম্ভব! বিশেষ করে যখন সাত বা আট নম্বরে খেলবে ধোনি। মনে হয় ওরা সবাই মিলে দশ লাখ রান করে ফেলেছিল তখন।’’
সেই টেস্ট কিন্তু পাকিস্তানই জিতেছিল। আসিফ নিজে সাত উইকেট নেন দু’ইনিংস মিলিয়ে। সেই সাফল্যের জন্য তিনি কৃতিত্ব দিচ্ছেন শোয়েব আখতারকে। তাঁর গতির সামনে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা সামনের পায়ে, না পিছনের পায়ে খেলবেন বুঝে উঠতে পারেননি। আসিফ বলেছেন, ‘‘শোয়েব ভাই অসম্ভব জোরে বল করেছিল সে বারও। ভয়ঙ্কর সব বাউন্সার দিচ্ছিল। উল্টোদিকে আমি তার সুবিধেটা নিই। বাউন্সারের জন্য ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা পিছনে পায়েই খেলছিল।’’