সাক্ষী মালিক। — ফাইল চিত্র
রবিবার সকালেই কুস্তিগির সাক্ষী মালিক কথার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন ববিতা ফোগটের সঙ্গে। পরে আরও চাপে পড়লেন সাক্ষী। ঘুরিয়ে অলিম্পিক্স পদকজয়ী কুস্তিগিরের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলার অভিযোগ আনলেন এক নাবালিকা কুস্তিগিরের বাবা। জানিয়ে দিলেন, কুস্তিকর্তা ব্রিজভূষণ সিংহের বিরুদ্ধে বয়ান বদলের পর হুমকি পাওয়ার যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্যি নয়।
ওই নাবালিকা কুস্তিগির ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন। সেই অনুযায়ী দিল্লি পুলিশও কুস্তিকর্তাকে পকসো ধারায় অভিযুক্ত করে। কিন্তু দিন কয়েক আগেই বয়ান বদল করেন তিনি। তার পরে আদালতে পেশ করা চার্জশিটে দিল্লি পুলিশও আবেদন করে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় মামলা তুলে নেওয়ার।
শনিবার সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো পোস্ট করে অনেক কথা বলার ফাঁকে সাক্ষী এটাও বলেন, নাবালিকার পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। সে কারণেই বয়ান বদল করেছেন তাঁরা। তার পাল্টা রবিবার এক ওয়েবসাইটে নাবালিকার বাবা বলেছেন, “আমাদের যা করা উচিত ছিল সেটাই করেছি। আমাদের পরিবারকে হুমকি দেওয়ার যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্যি নয়।”
গত ১১ জুন নাবালিকার বয়ান বদলের খবর প্রকাশ্যে আসে। তখন সাক্ষী বলেছিলেন, ‘‘আর কী প্রমাণ চাই। নথিভুক্ত বয়ান হঠাৎ কী ভাবে পরিবর্তন হল, বুঝতে পারছি না আমরা। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে নাবালিকা কুস্তিগিরের বাবাকে চাপ দেওয়া হয়েছে। অসম্ভব চাপ দেওয়া হচ্ছে। জানি না এ ভাবে আমরা কত দূর লড়াই করতে পারব।’’ সাক্ষীর আরও অভিযোগ ছিল, ‘‘বজরংয়ের কাছে একটা ফোন এসেছিল। ওকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, টাকা নিয়ে আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ার জন্য। অনৈতিক ভাবে আন্দোলন শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে। এই ঘটনায় আমরা ব্যথিত।’’
নাবালিকা কুস্তিগিরের বাবার ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ পরিবর্তন নিয়ে কুস্তিগির বজরং পুনিয়া বলেছিলেন, ‘‘ঠিক কী ঘটেছিল, তা ওই কুস্তিগিরের পরিবারই বলতে পারবে। সে নাবালিকা না কি সাবালিকা, তা-ও তাঁরা জানেন। তবে অনেক ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে আমাদের আন্দোলনকে দুর্বল করার জন্য। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ক্রীড়ামন্ত্রী আমাদের যথাযথ তদন্ত এবং ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা ১৫ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করব। না হলে আবার পথে নামব। আন্দোলনের জন্য কুস্তিগিরেরা কেউ সরকারি কাজে ফাঁকি দিচ্ছে না।’’
এর পর ১৫ জুন দিল্লি পুলিশের একটি দল রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে গিয়ে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে। চার্জশিটে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ (জোর করে মহিলার শ্লীলতাহানির চেষ্টা), ৩৫৪এ (অশালীন মন্তব্য), ৩৫৪ডি (উত্ত্যক্ত করা) ধারায় অভিযোগ করা হয়েছিল। এই ধারাগুলির মধ্যে ৩৫৪ জামিনঅযোগ্য। তবে বাকি দু’টি ধারা জামিনযোগ্য।
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে মূল দু’টি মামলা দায়ের হয়েছিল। তার মধ্যে একটি ছিল পকসো ধারায় মামলা। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছিল যে এক নাবালিকা কুস্তিগিরকে যৌন হেনস্থা করেছেন ব্রিজভূষণ। এই ঘটনা নিয়ে গত মঙ্গলবার মুখ খোলেন সেই নাবালিকা কুস্তিগিরের বাবা। তিনি জানান, মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিল ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে। তাঁর মেয়ে একটি প্রতিযোগিতায় হেরে যাওয়ায় তিনি রেগে গিয়ে কুস্তি কর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন বলে জানিয়েছেন সেই ব্যক্তি। সেই অভিযোগের পক্ষে কোনও প্রমাণ দিল্লি পুলিশ পায়নি বলে জানিয়েছে। তারা দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্টে ৫০০ পাতার চার্জশিট পেশ করেছে।