নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
এক দেশ এক ভোট আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে যে দু’টি বিল আনা হয়েছে, সেগুলি আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)-তে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জেপিসি-তে সাংসদ সংখ্যা সাধারণত ৩১ জন হয়ে থাকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে জেপিসিতে সাংসদ সংখ্যা বাড়িয়ে ৩৯ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই নবগঠিতকমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে রাজস্থানের আইনজীবী সাংসদ প্রেমপ্রকাশ চৌধরিকে।
দেশে একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট করার লক্ষ্যে গত মঙ্গলবার দু’টি বিল পেশ করে মোদী সরকার। যার মধ্যে একটি বিল ছিল দিল্লি, জম্মু ও কাশ্মীরের মতো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভোট করা নিয়ে। দ্বিতীয়টি একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট করতে প্রয়োজনীয় সংবিধান সংশোধনী বিল। বিরোধীদের বড় অংশ গোড়া থেকেই এক দেশ এক ভোট নীতির বিপক্ষে। তাই মঙ্গলবার বিল পেশেই আপত্তি জানান বিরোধী সাংসদেরা। সে সময়েই বিলটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য জেপিসি-তে পাঠানোর আশ্বাস দেন শাসক শিবিরের শীর্ষ নেতা অমিত শাহ।
গোড়ায় জেপিসির সদস্য সংখ্যা ৩১ বলা হলেও আজ লোকসভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, এ যাত্রায় জেপিসি-র সদস্য হচ্ছেন ৩৯ জন। কেন? তাঁর ব্যাখ্যায় কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, ‘‘অধিকাংশ জেপিসি-তে ২১ জন লোকসভা ও ১০ জন রাজ্যসভার সাংসদ থাকেন। সেটাই প্রথা। কিন্তু নিয়ম নয়। অতীতে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক নিয়ে গড়া জেপিসি-তে ৫১ জন সদস্য ছিলেন। নতুন যে আট জন বেড়েছে, তার মধ্যে এনডিএ থেকে চার জন ও বিরোধী শিবির থেকে চার জনকে স্থান দেওয়া হয়েছে।’’ সূত্রের মতে, এই জেপিসির সদস্য হওয়ার জন্য স্পিকার ওম বিড়লার কাছে প্রায় সবক’টি রাজনৈতিক দল থেকে আবেদন জমা পড়েছিল। তা ছাড়া সংবিধান সংশোধনী বিল হওয়ায় সরকারের লক্ষ্য ছিল যত বেশি সম্ভব দলের সাংসদদের ওই কমিটিতে স্থান দেওয়া। যাতে সব পক্ষের মতামত কমিটিতে উঠে আসে। সে কারণেই আট জন সদস্য বাড়ানো হয়। শেষ পর্যন্ত এনডিএ-র ২২ জন, ইন্ডিয়া জোটের ১৫ জন এবং বিজেডি ও ওয়াইএসআর কংগ্রেসের ১ জন করে সাংসদ জায়গা পেয়েছেন কমিটিতে।
কমিটির চেয়ারম্যান পদটি নিয়ে গোড়ায় ধন্ধ ছিল। প্রথম থেকেই এটা স্পষ্ট ছিল যে, কমিটির রাশ হাতে রাখার জন্য বিজেপি তাদেরই কোনও সাংসদকে চেয়ারম্যান করবে। দৌড়ে ছিলেন রাজস্থানের আইনজীবী সাংসদ প্রেমপ্রকাশ চৌধরি ও কটকের সাংসদ ভর্তৃহরি মহতাব। আইনজীবী হিসেবে প্রেমপ্রকাশ প্রথম থেকেই পছন্দের ছিলেন। তবে বিপক্ষ শিবিরের কাছে বেশি পরিচিত মুখ এবং ছ’বারের সাংসদ ভর্তৃহরিকেই গুরুত্বপূর্ণ জেপিসি চালনা করার প্রশ্নে চেয়ারম্যান হিসাবে দেখতে চেয়েছিলেন বিজেপির একাংশ। যদিও শেষ অবধি পদটি যায় প্রেমপ্রকাশের কাছে।