বড় রানের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন পন্থ ও হানুমা। ছবি: এএফপি
বিরাট কোহালি ও মায়াঙ্ক আগরওয়াল ভাল শুরু করেও ফিরে গেলে তাঁদের অসম্পূর্ণ কাজের ভার নিজেদের কাঁধে তুলে নেন হনুমা বিহারী (৪২ নটআউট) ও ঋষভ পন্থ (২৭ নটআউট)। যার ফলে প্রথম দিনের শেষে ভারতের রান ২৬৪। হাতে এখনও পাঁচ উইকেট। ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক জেসন হোল্ডার (২০ ওভারে ৩৯ রানে ৩ উইকেট) বিরাট ও মায়াঙ্ককে না ফেরালে আরও বিপদে পড়ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
চা-পানের বিরতি পর্যন্ত ভারতের স্কোর ছিল ৫৯ ওভারে ১৫৭-৩। কোহালি অপরাজিত ছিলেন ৫২ রানে। অজিঙ্ক রাহানে খেলছিলেন ২০ রানে। কিন্তু তারপরেই দ্রুত ভারতের এই দুই ব্যাটসম্যানকে ফেরান হোল্ডার। অধিনায়ক বিরাটের শতরান যখন মনে হচ্ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা, তখনই জেসন হোল্ডারের বলে এই ম্যাচের কিপার হ্যামিলটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৭৬ রানে ফেরেন কোহালি। তার আগে কেমার রোচের বলে সেই কিপারের হাতেই ক্যাচ দিয়ে ২৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন গত ম্যাচে শতরান করা অজিঙ্ক রাহানে।
শুক্রবার টসে হারের পরেই বিরাট বলেছিলেন, ‘‘আগে ব্যাটিং করলে প্রথম দু’ঘণ্টা খুবই সতর্ক থাকতে হয়। তবে আগে ব্যাটিং করার সুবিধাও রয়েছে। স্কোরবোর্ডে বড় রান তুলে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়। ফলে সেই লক্ষ্য মাথায় নিয়েই আমাদের খেলতে হবে।’’ পাশাপাশি কোহালি এও জানিয়ে ছিলেন, ওপেনাররা ৭০-৮০ রানের একটা পার্টনারশিপ গড়ে দিতে পারলে পরের দিকের ব্যাটসম্যানদের রানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অনেক সহজ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: আপাতত খেলবেন না, ধোনি নাকি বলে রেখেছেন বোর্ডকে
কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল অন্য ছবি। ওপেনিং জুটিতে উঠল মাত্র ৩২ রান। জেসন হোল্ডারের আউটসুইং বুঝতে না পেরে শুরুতেই ফিরে যান কে এল রাহুল (১৩)। স্লিপে তাঁকে তালুবন্দি করেন নবাগত কর্নওয়াল। তিন নম্বরে পূজারা ব্যাট করতে নেমে ফের ব্যর্থ। প্রথম ১৮টি বলে কোনও রানই করেননি অভিজ্ঞ টেস্ট ব্যাটসম্যান। এ দিন কর্নওয়ালের বল কাট করতে গিয়ে শর্ট পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দেন পূজারা। ২৫ বলে ছয় রান করে ফিরে যান তিনি। বরং সেই সময় ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের ‘মাউন্টেন ম্যান’ ১৪০ কেজির রাহকিম কর্নওয়ালের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক নিয়ে মেতে উঠেছিল জামাইকার জনতা। চেতেশ্বর পূজারার উইকেট তুলে ক্রিকেট বিশ্বকে চমক দিলেন ২৬ বছর বয়সি এই অফস্পিনার। পাশাপাশি স্লিপে দাঁড়িয়ে নিলেন দু’টি ক্যাচও।
আরও পড়ুন: ক্রিকেট শাসনে কি নতুন ‘শাহ’? বাড়ছে কৌতূহল
পূজারা ফিরে যেতেই অস্বস্তি শুরু হয় ভারতীয় শিবিরে। এখনও পর্যন্ত ভারতের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে নিজেদের সেরা ছন্দে দেখা যায়নি। এ দিনও ১৭ ওভারে ৪৬ রানে দুই উইকেট হারায় ভারত। সেই জায়গা থেকে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান মায়ঙ্ক আগরওয়াল এবং অধিনায়ক কোহালি। দুজনে মিলে ৬৯ রানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়েন। ১২৭ বলে ৫৫ রান করলেন মায়ঙ্কের ইনিংসে ছিল সাতটি চার। দলীয় ১১৫ রানের মাথায় হোল্ডারের বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে খোঁচা দিয়ে ফেরেন মায়াঙ্ক।
তবে লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন কোহালি। ঠান্ডা মাথায় ক্যারিবিয়ান বোলিংয়ের মোকাবিলা করেন তিনি। দলকে এগিয়ে নিয়ে যান রাহানেকে সঙ্গী করে। ১১২ বলে তিনি হাফসেঞ্চুরি করেন। তাঁর ইনিংসে ছিল সাতটি চার। অ্যান্টিগা টেস্টের নায়ক অজিঙ্ক রাহানে এ দিনও শুরু থেকে ছিলেন সতর্ক। বিশেষ করে, রানিং বিটুইন দ্য উইকেটসে কোহালি-রাহানে জুটি চাপ বাড়িয়ে দেন ক্যারিবিয়ান বোলারদের।
এখন দেখার পন্থ নিজের সুযোগ কাজে লাগিয়ে, শনিবার বড় রানের ইনিংস খেলে দলকে ভরসা যোগাতে পারেন কিনা। অন্যদিকে হানুমা বিহারীর লক্ষ্য থাকবে জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক শতরানটা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জেই করে নেওয়ার।