অপ্রতিরোধ্য: জারিনের বিরুদ্ধে বহু প্রতিক্ষীত লড়াইয়ে আগ্রাসী মেরি (বাঁ-দিকে)। শনিবার নয়াদিল্লিতে। পিটিআই
তাঁকে নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক থামিয়ে চমকপ্রদ জয় ছিনিয়ে নিলেন মেরি কম। পেয়ে গেলেন টোকিয়ো অলিম্পিক্স যোগ্যতা অর্জন প্রতিযোগিতার জন্য চিনে নামার ছাড়পত্র। ছ’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দিল্লিতে শনিবার ট্রায়ালে দাঁড়াতেই দিলেন না তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানানো তেলঙ্গানার নিখাত জারিনকে। মেয়েদের ৫১ কেজি বিভাগের ফাইনালে মেরি ৯-১ ফলে জিতলেন।
তিন সন্তানের জননী, ছত্রিশ বছরের মেরি অবশ্য অসাধারণ এই পারফরম্যান্সের পরে মেজাজ হারালেন। ফাইনালে তাঁর প্রতিপক্ষ জারিনের সঙ্গে করমর্দন পর্যন্ত করতে অস্বীকার করেন কিংবদন্তি বক্সার। যা নিয়ে শুরু হয় তুমুল শোরগোল। তেলঙ্গানার মেয়ে প্রাক্তন জুনিয়র বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জারিন অভিযোগ করেন, মেরি তাঁকে রিংয়ের ভিতরে গালিগালাজ পর্যন্ত করেছেন!
লড়াই চলার সময়েও দেখা গিয়েছে রিং এবং বাইরে দু’জন দু’জনের বিরুদ্ধে নানা মন্তব্যও করছেন। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মেরি। যে দৃশ্য ভাইরালও হয়ে যায়। তেলঙ্গানা থেকে জারিনের সমর্থনে আসা কর্তারাও হইচই করেন তা নিয়ে। মেরি অবশ্য জারিনের অভিযোগ অস্বীকার করেননি। বলে দেন, ‘‘আমিও মানুষ। এটা একবার নয়, বারবার আমার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। এটা ঠিক, প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত ছিলাম। আমাকে যাঁরা রিং-এ চ্যালেঞ্জ করছে, তাঁদের উচিত আগে আমার মতো পারফর্ম করে দেখানো। সবাই দেখে নিয়েছে রিংয়ে কি হয়েছে। আমি তো একবারও বলিনি ট্রায়াল দেব না। তা হলে এত বিতর্ক কেন। আমি তো বিতর্ক শুরু করিনি।’’ টোকিয়োতে মেরি যাবেন কি না, সেটা ঠিক হবে চিনে। ৩-১৪ ফেব্রুয়ারি হবে সেই ছাড়পত্র পাওয়ার লড়াই।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মেরি বনাম জারিনের চিন যাওয়া নিয়ে পরিবেশ উত্তপ্ত ছিল। মেরির ধারাবাহিক পারফরম্যান্স ভাল থাকার জন্য তাঁকে সরাসরি চিনে পাঠানোর ইঙ্গিত দিয়েছিল সর্বভারতীয় বক্সিং ফেডারেশন। সেই সিদ্ধান্ত মানতে চাননি জারিন। তিনি ট্রায়াল নেওয়ার জন্য চিঠি দেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীকে। তার পরেই ট্রায়ালের ব্যবস্থা করে ফেডারেশন। দেশজুড়ে সবাই তাকিয়ে ছিলেন এই লড়াইয়ের দিকে। জারিন এ দিন হারের পরে বলেন, ‘‘আমি আমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখ পেয়েছি মেরির ব্যবহারে। ও আমাকে গালাগালি করেছে। আমি ওর চেয়ে অনেক ছোট।’’ উত্তরে মেরি পাল্টা বলেন, ‘‘যারা খেলাকে কলঙ্কিত করছে, তাদের সঙ্গে এ রকম ব্যবহারই করা উচিত।’’ ম্যাচের পরে ক্ষিপ্ত তেলঙ্গানার সচিব এ আর রেড্ডি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘বক্সিং নিয়ে এ রকম রাজনীতি হলে খেলা এগোবে কী করে?’’ পরিস্থিতি সামাল দেন বক্সিং সংস্থার সর্বভারতীয় সচিব অজয় সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘মেরি কিংবদন্তি। আর জারিন আমাদের ভবিষ্যৎ।’’
এ দিন ট্রায়ালে অন্য বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে চিন যাওয়ার ছাড়পত্র পেলেন সাক্ষী চৌধরি (৫৭ কেজি), সিমরনজিৎ কৌর (৬০ কেজি), লাভলিনা বোরগোহি (৬৯ কেজি) এবং পূজা রানি (৭৫ কেজি)।