আবেগ: ইস্টবেঙ্গল মাঠে ভক্তদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন মজিদ। নিজস্ব চিত্র
শতবর্ষ উৎসবের অঙ্গ হিসেবে আজ, মঙ্গলবার বিকেলে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গলের চমকপ্রদ অনুষ্ঠানের মধ্যমণি হয়ে হাজির থাকবেন মজিদ বাসকার।
আশির দশকে ময়দানের বাদশার খেলোয়াড় জীবনের সেই ‘জাদু-মুহূর্ত’ যখন ভেসে উঠবে মঞ্চের পাশের পর্দায় তখন গত একশো বছরের জীবিত অধিনায়কদের সঙ্গে স্টেডিয়ামে হাজির থাকবেন কোচেরাও। প্রত্যেক অধিনায়কের নেতৃত্বে ক্লাবের গৌরবের জয়গাথাও দেখা যাবে পর্দায়। লাল-হলুদে উৎসব, আর ‘পঞ্চপাণ্ডব’-এর গৌরবের মুহূর্ত থাকবে না, সেটা হয় না কি! সেই স্মৃতিও ফিরবে, যখন তাঁদের পরিবারের সদস্যদের দেওয়া হবে সম্মান। উদ্বোধন হবে অরিজিৎ সিংহের ‘ফুটবল মানেই ইস্টবেঙ্গল’ গান দিয়ে।
সোমবার সকালে হোটেল থেকে ‘বন্ধু’ জামশিদ নাসিরিকে নিয়ে ময়দান ও শহর ঘুরতে বেরিয়েছিলেন মজিদ। দেখে এলেন ইলিয়ট রোডের সেই মেসও। ইস্টবেঙ্গল তাঁবুর সামনে এসে অবাক মজিদ প্রশ্ন করেন, ‘‘মশাল আর লাল-হলুদ রঙ ছাড়া দেখছি সবই বদলে গিয়েছে!’’ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ছাড়াও মোহনবাগান তাঁবু ও গঙ্গার পাড় দেখে মজিদ ফিরে যান হোটেলে। বিকেলে লাল-হলুদ ক্লাব তাঁবুতে তিনি পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উন্মাদনা শুরু হয়ে যায় সমর্থকদের। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও কয়েকশো সমর্থক হাজির ছিলেন বাদশাকে দেখার জন্য। ১৯৮১-র সেপ্টেম্বরে ইস্টবেঙ্গল মাঠে শেষ বার অনুশীলন করেছিলেন মজিদ। প্রায় আটত্রিশ বছর পর ফের ‘স্পর্ধার শতবর্ষ’ লেখা লাল-হলুদ জার্সি পরে যখন বাদশা ঢুকলেন, তখন তিনিও উচ্ছ্বসিত।
মজিদকে এত দিন পর কলকাতায় ফিরিয়ে আনার মূল কারিগর ক্লাবের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বলছিলেন, ‘‘মজিদকে আনার প্রস্তুতি আমরা শুরু করেছিলাম দেড় বছর আগেই। যখন আমরা শতবার্ষিকী উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিই। সম্মানিত করার জন্য দু’জন ভারতীয় ও এক জন বিদেশি ফুটবলারের নাম ভাবতে হয়েছিল। মজিদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। ওর বিকল্প এখনও পাওয়া যায়নি ভারতীয় ফুটবলে। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের মাধ্যমে ইরানের ফুটবল সংস্থায় যোগাযোগ করা হয়েছিল মজিদের ফোন নম্বর জোগাড় করার জন্য। কিন্তু আশার আলো দেখতে পাচ্ছিলাম না। হঠাৎ করেই মজিদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়ে যায়। মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যকে দিয়ে এক দিন ফোন করানো হল। কিন্তু ও রাজি হল না কলকাতায় আসতে। জামশিদ নাসিরিও ব্যর্থ হল। আসলে কলকাতায় ফেরা নিয়ে কিছুটা দ্বিধায় ছিল। কিন্তু আমাদের কাছে মজিদকে আনাটা চ্যালেঞ্জ ছিল। সচিব কল্যাণ মজুমদার নিয়মিত তাগাদা দিতেন। শেষ পর্যন্ত মজিদকে রাজি করাতে আমরা সফল হই।’’