জিম্বাবোয়ে টেস্টের শেষ দিনে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয় মাহমুদুল্লাকে। —ফাইল চিত্র
টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন মাহমুদুল্লা। অথচ সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের উত্তর, ‘কোনও মন্তব্য নেই।’ নিশ্চুপ মাহমুদুল্লা নিজেও। তবে হঠাৎ এমন বিদায় নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই ক্রিকেট মহলে। কিন্তু উত্তর দেবেন কে?
বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবোয়ে টেস্টের শেষ দিনে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয় মাহমুদুল্লাকে। তার পর যেন সকলে ভুলে গেলেন শেষ টেস্ট খেলতে নেমেছেন তিনি। তাঁর সতীর্থরা তো বটেই, ম্যাচ শেষে সেরার পুরস্কার নেওয়ার সময়ও মাহমুদুল্লাকে অবসর নিয়ে কোনও প্রশ্নই করলেন না উপস্থাপক।
জীবনের শেষ টেস্টে করলেন কেরিয়ারের সর্বাধিক রান। আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১৫০ রানের ইনিংস খেললেন মাহমুদুল্লা। টেস্টের তৃতীয় দিনেই অবসরের কথা দলকে জানান তিনি। শেষ টেস্টে জয়, ম্যাচের সেরার পুরস্কার, সব কিছু মিলিয়েই দিনটা ছিল মাহমুদুল্লার। কিন্তু তবুও যেন তিনি পার্শ্বচরিত্র।
জীবনের শেষ টেস্টে করলেন কেরিয়ারের সর্বাধিক রান। —ফাইল চিত্র
পুরস্কার মঞ্চে মাহমুদুল্লা এলেন, পুরস্কার নিলেন, নিজের ১৫০ রানের ইনিংস নিয়ে কথা বললেন এবং চলে গেলেন। কোথাও এক বারও কথা হল না তাঁর অবসর নিয়ে। তবে বিপদে পড়লেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মমিনুল হক।
সাংবাদিক বৈঠকে একের পর এক প্রশ্ন মাহমুদুল্লাকে নিয়ে। কী বলবেন তা যেন বুঝতেই পারছেন না মমিনুল। শেষ পর্যন্ত বলেন, “এই নিয়ে আমি মন্তব্য করতে পারব না।” তার আগে যদিও বাংলাদেশের জয় উৎসর্গ করেছেন মাহমুদুল্লাকে। অবসরের সিদ্ধান্ত তাঁর ব্যক্তিগত বলে যেন দায় এড়িয়ে গেলেন তরুণ অধিনায়ক।
বাংলাদেশের এক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নাজমুল হাসান বলেন, “মাহমুদুল্লার সিদ্ধান্ত অস্বাভাবিক এবং আবেগের বশে নেওয়া।” জনসমক্ষে মাহমুদুল্লা যদিও এখনও কিছু বলেননি।
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে যদিও ‘অস্বাভাবিক’ অবসর নতুন নয়। প্রাক্তন অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বাংলাদেশের প্রথম টেস্টে শতরান করেছিলেন। তিনি কখনও অবসরের কথা ঘোষণাই করেননি। আক্রম খান, খালেদ মাশুদ এবং খালেদ মাহমুদের অবসরও বেশ জটিল ছিল। ২০১৪ সালে অবসর নিয়েছিলেন জাভেদ ওমার। শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার ৭ বছর পর অবসর ঘোষণা করেন তিনি। মনে করা হয় ওমারকে দলে নেওয়া হবে কি হবে না, সেই বিষয়ে বোর্ডের তরফ থেকে কোনও কিছু জানতে না পেরে বিরক্ত হয়ে অবসর নেন তিনি।
মাশরফি মোর্তাজা, বাংলাদেশের অন্যতম সফল অধিনায়ক। তাঁর অবসরের সময় নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে গণ্ডগোল প্রকাশ্যে চলে আসে। তার পর থেকে আর জাতীয় দলে ডাক পাননি তিনি।
অভিষেক টেস্টে জয় পেয়েছিলেন, শেষ টেস্টেও জয়। মাহমুদুল্লা বিদায় নিলেন টেস্ট ক্রিকেট থেকে। তবে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজে খেলবেন তিনি। টি২০ সিরিজে দলকে নেতৃত্বও দেবেন। ক্রিকেট মঞ্চে এখনও থাকছেন মাহমুদুল্লা।