উইম্বলডন জয় ভুলে লেখাপড়ার সঙ্গে টেনিস চর্চা শুরু করে দিয়েছে সমীর। ফাইল চিত্র
স্বপ্ন জুনিয়র ছেড়ে সিনিয়র সার্কিটে খেলা। কিন্তু টেনিসের নিয়ম অনুসারে সব কিছু তার হাতে নেই। তাই জুনিয়র উইম্বলডন জিতে ইতিহাস গড়লেও সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের এখনই বড়দের যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে নামাটা নিশ্চিত নয়।
সিনিয়র যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে খেলা নির্ভর করছে তার আগের প্রতিযোগিতাগুলিতে পারফর্ম্যান্সের ওপর। বড়দের সঙ্গে খেলতে হলে ওকে আমেরিকার হার্ড কোর্ট ন্যাশনাল জিতে আসতে হবে। আনন্দবাজার অনলাইনকে এমনই জানাল এই বঙ্গ সন্তান।
সতেরো বছরের সমীর বলে, “ভবিষ্যতে সিনিয়রে খেলার ইচ্ছে অবশ্যই আছে। সিনিয়রে খেলতে হলে হার্ড কোর্ট ন্যাশনাল জিততে হবে। তবেই আসবে সিনিয়রে খেলার সুযোগ। সেটা না হলে এ বার জুনিয়র ইউএস ওপেন খেলব।
উইম্বলডন জয়ের পর ট্রফি হাতে লকার রুমে বসে বঙ্গ সন্তান। ফাইল চিত্র
আগামী ৩০ অগস্ট থেকে শুরু হবে যুক্তরাষ্ট্র ওপেন। চলবে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। জুনিয়রদের যুক্তরাষ্ট্র ওপেন শুরু হবে ৬ সেপ্টেম্বর। ফাইনাল ১১ সেপ্টেম্বর। আপাতত উইম্বলডন জয় ভুলে পুরনো রুটিনে ফিরে গিয়ে লেখাপড়ার সঙ্গে টেনিস চর্চা শুরু করে দিয়েছে ছেলেটি।
গত ১২ জুলাই নিউ জার্সির বাড়িতে ফিরেছে উইম্বলডনজয়ী। স্বভাবতই ছেলের এমন সাফল্যে উল্লসিত ওর বাবা-মা। গত কয়েক দিন ধরে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে যেন উৎসবের মেজাজ। সদ্য ঘাসের কোর্ট দাপানো ছেলে জানিয়ে দিল ওর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।
সমীর জানাল, “আমাদের পরিবারে পড়াশোনাকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। এর সঙ্গে আমি টেনিসও চালিয়ে নিয়ে যেতে চাই। অনেক ছোটবেলা থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। এর সুফল হল জুনিয়র উইম্বলডন জয়। তাই পড়াশোনাকে আগে গুরুত্ব দিয়ে জুনিয়র ইউএস ওপেনের জন্য নিজেকে তৈরি করছি। তা ছাড়া জাতীয় পর্যায় ও কলেজের একাধিক প্রতিযোগিতা তো আছেই।”
ইতিহাস গড়ার পর সমীর। ফাইল চিত্র
ছোটবেলা থেকেই ওর টেনিসের প্রতি বাড়তি প্রেম। সেটা লক্ষ্য করেছেন বাবা কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই ছেলেকে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ইভি লিগ কলেজে ছেলেকে ভর্তি করেছেন। এই ইভি লিগ কলেজের অধীনে আবার রয়েছে ন্যাশনাল কলেজিয়েট অ্যাথলেটিক অ্যাশোসিয়েশন (নাকা), যাকে যুক্তরাষ্ট্রে টেনিসের আঁতুড়ঘর বলা হয়।
লেখাপড়ার সঙ্গে সেই কলেজে অনেক বছর থেকে চলছে টেনিস পাঠ। একটা সময় জন ম্যাকেনরো, কেভিন অ্যান্ডারসন, জ্যাক শকের মতো প্রাক্তনরা এই কলেজ থেকেই বেড়ে উঠেছেন। আমেরিকায় লেখাপড়া করার সুবাদে মহেশ ভূপতি, সোমদেব দেব বর্মনের মতো ভারতীয়রাও এখানে আয়োজিত আমেরিকার আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় টেনিস প্রতিযোগিতায় খেলেছেন। এই কলেজে নাম লিখিয়ে সমীর এখন প্রাক্তনদের অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে চাইছে।
বাবাও রয়েছেন কৃতি ছেলের পাশে। বললেন, “টেনিসের পেশাদার সার্কিটে সুনাম অর্জন করতে হলে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। সঙ্গে লেখাপড়াও জরুরী। তাই ইভি লিগ কলেজের অধীনে ন্যাশনাল কলেজিয়েট অ্যাথলেটিক অ্যাশোসিয়েশনকে ওর জন্য বেছে নিয়েছি। কারণ আমরাও সমীরের এই স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে চাই।”