উইম্বলডনের ট্রফি হাতে নেওয়ার পর সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি - টুইটার
ইচ্ছাশক্তি, মনের জোর ও শেষ পর্যন্ত লড়াই করার তাগিদ। এই তিনের মিশেলে সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়কে উইম্বলডনে ইতিহাস গড়তে দেখল টেনিস দুনিয়া। তবে অনেকেই পড়লে চমকে যাবেন যে প্রশিক্ষক ছাড়াই জুনিয়র উইম্বলডন জিতে নজির গড়ে ফেলেছে এই বঙ্গ সন্তান।
ভিক্টর লিলোভকে ৭-৫, ৬-৩ ব্যবধানে হারিয়ে দেওয়ার পর সেটা অকপটে স্বীকার করে নিল ১৭ বছরের বিস্ময় বালক। খেলার শেষে উইম্বলডনের ওয়েব সাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সমীর বলে, “আমার প্রশিক্ষক কার্লোস এস্তেভানের স্ত্রী প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাই শেষ পর্যন্ত কাকাকে সঙ্গে নিয়ে উইম্বলডন খেলতে এসেছিলাম। কাকা তো আর পেশাদার কোচ নন। তবুও শেষ মুহূর্তে আমাকে সঙ্গ দিতে চলে আসেন। তাই এ বার থেকে কাকাকে সঙ্গে নিয়েই সব জায়গায় খেলতে যাব।”
উইম্বলডন জেতার পর বিস্ময় বালকের উল্লাস।
১৯৯০ সালে এই ঘাসের কোর্টেই জুনিয়র উইম্বলডন জিতেছিলেন লিয়েন্ডার পেজ। তারপর বাকিটা ইতিহাস। দীর্ঘ ৩১ বছর পর সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাল আর এক বঙ্গ সন্তান। সামনে লম্বা পথ। অনেক বাধা আসবে। তবে এহেন সমীর কিন্তু লিয়েন্ডারের মতোই এগিয়ে যেতে চায়। ওর প্রতিক্রিয়া, “পেশাদার সার্কিটে যারা র্যাকেট হাতে ধরে, তারা সবাই লিয়েন্ডারের নাম খুবই সম্মানের সঙ্গে নেয়। আমার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তাই। আমিও ওঁকে অনুসরণ করে এগোতে চাই। তবে সেটা খুব সহজ নয়। কারণ আমাকেও যে লিয়েন্ডারের মতো অনেক কঠিন পথ পেরোতে হবে।”
নোভাক জোকোভিচের ভক্ত সমীরের এমন অজানা গল্প আরও আছে। উইম্বলডনে নিজেক তুলে ধরতে হলে ঘাসের কোর্টে অনুশীলন প্রয়োজন। ফরাসি ওপেনের গ্লানি ভুলে তাই ও নতুন ভাবে শুরু করতে চেয়েছিল। কীভাবে চলেছিল ওর অনুশীলন? সমীরের প্রতিক্রিয়া, “ফরাসি ওপেন থেকে ছিটকে যেতেই সময় নষ্ট না করে নিউ জার্সি ফিরে যাই। আমার বাড়ির সামনে কয়েকটা ঘাসের কোর্ট ছিল। সেখানেই দিন-রাত কাটাতাম। সেই কোর্টে বল কম লাফালেও খুব দ্রুত কাছে আসত। সেখানে অনুশীলন করার জন্য অল ইংল্যান্ড ক্লাবে এসে নিজেকে মেলে ধরতে পারলাম।”