আত্মবিশ্বাসী: নিজের বলের গতি নিয়ে ভাবছেন না জোফ্রা। ফাইল চিত্র
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে তাঁর সঙ্গে নাসিম শাহের বলের গতির তুলনা করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, পাক তরুণের ঘণ্টায় ৯০ মাইল গতির কাছে হেরে গেলেন তিনি। জোফ্রা আর্চারের জবাব ছিল, ‘‘আমি রোবট নই যে, ধারাবাহিক ভাবে ঘণ্টায় ৯০ মাইল গতিতে বল করে যাব।’’
এ বার ইংল্যান্ডের একটি ট্যাবলয়েডে তাঁর কলামে ইংল্যান্ড পেসার বলে দিলেন, সব সময় ঘণ্টায় ৯০ মাইল গতিতে বল করে যাওয়া সম্ভব নয়। আর্চার লিখেছেন, ‘‘জানি, আমার বলের গতি নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা হয়। অ্যাশেজে লর্ডসে আমি যে গতিতে বল করেছিলাম, সবাই চায় সে রকমই যেন সব সময় করি। কিন্তু সেটা বাস্তবসম্মত প্রত্যাশা নয়। আমার দিক থেকে বলতে পারি, সব কিছু ঠিকঠাক না চললেও ঘণ্টায় ৯০ মাইল গতিতে দু’একটা স্পেল করতে পারি। কিন্তু সব স্পেল ওই গতিতে করা প্রায় অসম্ভব।’’
ম্যাঞ্চেস্টারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চার উইকেট পেলেও আর্চারের বলের গতি মন্থর হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। সমালোচনা উড়িয়ে দিয়ে ইংল্যান্ডের পেসার বলেছেন, ‘‘আমি ম্যাচে চার উইকেট পেয়েছি। ম্যাচ শুরুর আগে যদি কেউ বলত, তুমি চার উইকেট পাবে এই টেস্টে, তা হলে আমি সাদরে তা গ্রহণ করতাম। জানি, আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামলে পারফরম্যান্স নিয়ে কাটাছেঁড়া হবেই। কিন্তু সেটা করার সময় দুর্ভাগ্যবশত মাথায় রাখা হয় না যে, এক জন ফাস্ট বোলারকে মাঠে কতটা পরিশ্রম করতে হয়।’’
এর পরেই জেমস অ্যান্ডারসনের উদাহরণ টেনেছেন আর্চার। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে মাত্র একটা উইকেট পেয়েছিলেন অ্যান্ডারসন। যার পরে তাঁর অবসর-জল্পনাও ছড়িয়ে পড়ে। আর্চার লিখেছেন, ‘‘জিমির কথাই ধরুন। আমার মনে হয়, ও অন্তত ৪০টা ডেলিভারি করেছিল, যাতে উইকেট পেতে পারত। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা সেই সব বল ফস্কালেও আউট হয়নি।’’ এর পরে আর্চারের মন্তব্য, ‘‘পরের সপ্তাহে নজর রাখুন। জিমি যদি দ্বিতীয় টেস্টটা খেলে আর পাঁচটা উইকেট নেয়, তা হলে ওই সমালোচকরাই হয় চুপ করে থাকবে, না হলে জানতে চাইবে, কী ভাবে নিজের ভাগ্যকে বদলে দিলে?’’
বর্তমান ইংল্যান্ড দলটার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সিরিজের শুরুটা তারা ভাল করতে পারে না। কিন্তু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টেই জয় এসেছে। আর্চার বলে দিচ্ছেন, ‘‘এই সিরিজে আমরা প্রথম টেস্টটা জিতে নিয়েছি। তাই সিরিজটা ৩-০ না জেতার কোনও কারণ নেই। এই ছন্দটা ধরে রাখতে হবে।’’
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু দ্বিতীয় টেস্ট। পারিবারিক কারণে নিউজ়িল্যান্ড চলে যাওয়ায় সিরিজের বাকি দু’টো টেস্টে অলরাউন্ডার বেন স্টোকসকে পাচ্ছে না ইংল্যান্ড। যেটা মাঠ এবং মাঠের বাইরে একটা বড় ধাক্কা বলে মনে করেন আর্চার। ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলার লিখেছেন, ‘‘স্টোকস এমন এক জন ক্রিকেটার, যে কোনও উইকেট না পেলে বা রান না করলেও, ঠিক একটা প্রভাব রেখে যাবে।’’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সুরক্ষা বলয়ের নিয়ম ভাঙায় প্রবল সমালোচনার ঝড়ের মুখে পড়েছিলেন তিনি। পাঁচ দিন নিভৃতবাসেও থাকতে হয়েছিল আর্চারকে। সেই সময় তাঁর দুই সতীর্থের ভূমিকা নিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘ওই সময় প্রতি রাতে স্টোকস আমার হোটেলের দরজায় বেল বাজিয়ে আমি ঠিক আছি কি না, জেনে যেত। রুটও নিয়মিত খোঁজ নিত। যদি লড়াইয়ের ময়দানে যেতে হয়, তা হলে স্টোকসের মতো মানুষকে পাশে দরকার।’’