খোশমেজাজে: ওয়াংখেড়েতে সচিনের সঙ্গে কোহলি। পিটিআই।
বাইশ গজের দ্বৈরথে মঙ্গলবার শেষ হাসি রোহিত শর্মা অথবা বিরাট কোহলি, কার মুখে দেখা যাবে, তা নিয়ে চর্চা চলছে দুই শিবিরের ভক্তদের মধ্যে। কিন্তু তার চব্বিশ ঘণ্টা আগেই বিশ্বকাপ জয়ের মাঠ ওয়াংখেড়েতে দেখা গেল মাস্টার এবং তাঁর উত্তরসূরিকে। সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে গল্পে মেতে উঠলেন বিরাট কোহলি।
দুই কিংবদন্তির মুখোমমুখি সাক্ষাতের সেই ভিডিয়ো পোস্ট করেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। যেখানে দেখা যায়, সচিনকে দেখে এগিয়ে যান কোহলি। তাঁকে জড়িয়ে ধরেন। বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তাও হয় তাঁদের মধ্যে। হাসিঠাট্টায় মেতে ওঠেন দুজনেই। সেই ছবি পোস্ট করে আরসিবি সমাজমাধ্যমে লিখেছে, ‘‘৫৯,৬৭৯ রান। ১৭৫টি শতরান। এবং এক ফ্রেমে লাখো স্মৃতির ভিড়।’’
নিমেষের মধ্যে সেই ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। জনৈক ক্রিকেটপ্রেমী লিখেছেন, ‘‘কিছু ছবি থাকে, যারা মুহূর্তের মধ্যে মন ভাল করে দেয়। সোমবার ওয়াংখেড়েতে এর চেয়ে সুন্দর মুহূর্ত আর কিছু ছিল না।’’
কয়েক দিন আগেই ইউটিউবে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোহলি শুনিয়েছিলেন কিংবদন্তির সঙ্গে তাঁর প্রথম সাক্ষাতের ঘটনা। বিরাট বলেছিলেন, ‘‘আমার সঙ্গে সচিন পাজির প্রথম সাক্ষাৎ ছিল খুবই মজার। ভারতীয় দলের ড্রেসিংরুমে ওঁর সঙ্গে দেখা করব বলে দু’দিন ধরে তার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। দেখা হতেই সচিন পাজির পা স্পর্শ করেছিলাম। সত্যি বলতে, আমি তখন খুব স্নায়ুর চাপে পড়ে গিয়েছিলাম।’’ সোমবার এই ছবি দেখার পরে ভক্তেরা ফের টেনে এনেছেন সেই প্রসঙ্গ।
সচিন-বিরাট সাক্ষাৎ নিয়ে সমর্থকেরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লেও মঙ্গলবারের ম্যাচ দুই শিবিরের কাছেই প্লে-অফ দৌড়ে টিকে থাকার পরীক্ষা। ১০ ম্যাচ খেলে দুই দলই ১০ পয়েন্ট অর্জন করেছে। ওয়াংখেড়েতে মঙ্গলবার হারের অর্থ প্লে অফের দৌড় থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে যে কোনও একটি দল।
আরসিবির ব্যাটিং প্রধানত দাঁড়িয়ে আছে দু’জনের কাঁধে। একজন বিরাট কোহলি এবং অন্যজন অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি। কমলা টুপির মালিক ফ্যাফের ব্যাট থেকে এখনও পর্যন্ত ১০ ম্যাচে এসেছে ৫১১ রান। কিন্তু চোখে পড়ার মত বিষয়, তাঁর স্ট্রাইক রেট, ১৫৭.৭২। পিছিয়ে নেই বিরাট কোহলিও। ১০ ম্যাচে ৪১৯ রান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে।
সোমবার আরসিবির সমাজমাধ্যমে ডুপ্লেসি জানান, আইপিএলের শুরুর দিন থেকেই রান করার পাশাপাশি স্ট্রাইক রেট বাড়ানোর দিকেও বিশেষ নজর দিয়েছিলেন। এ বার তাঁর লক্ষ্য, শেষ অবধি উইকেটে থেকে দলের জন্য ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলা। তিনি বলেছেন, “আমি সব সময় শতরানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নামি। মাঝের দিকেও স্ট্রাইক রেট কম হতে দিই না, যাতে পরের দিকের ব্যাটসম্যানদের রান তুলতে অসুবিধার সম্মুখীন না হতে হয়।”
ডুপ্লেসির বিশ্লেষণ, “আগে শুধুমাত্র আক্রমণাত্মক শট খেলার উপরেই জোর দিতাম। পরে উপলব্ধি করলাম, স্ট্রাইক রেট ১৩০-১৫০ এর মধ্যে না রাখলে পরের দিকে লক্ষ্যমাত্রা ধরা যাবে না। পরিস্থিতি অনুযায়ী কখনও ১৭০ স্ট্রাইক রেটেও খেলতে হবে। এটা নিয়ে আমাকে অনেকটা সময় ব্যয় করতে হয়েছে।”
মুম্বই শিবির আবার সবচেয়ে বেশি চিন্তিত অধিনায়ক রোহিত শর্মার রানের খরা নিয়ে। ১০ ম্যাচে এসেছে মাত্র ১৮৪ রান। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে ক্যামেরন গ্রিন বলে যান, “রোহিত কিংবদন্তি। ওর ফর্মে ফেরা সময়ের অপেক্ষা।” যোগ করেন, “আমাদের ধারণা খুবই স্বচ্ছ। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করা থেকে আমরা পিছু হটব না।”