ফুরফুরে: টিম হোটেলে আন্দ্রে রাসেলের সঙ্গে ক্রিস গেল। ছবি: এক্স।
আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইনরা শনিবার ম্যাচ শেষে হোটেলে ফিরতেই বিস্মিত হয়ে যান। দেখেন, তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছেন স্বয়ং ক্রিস গেল।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রাক্তন ওপেনার নাইটদের টিম হোটেলেই রাত কাটালেন। কাটালেন বলা ভুল, মেতে উঠলেন উৎসবে। ‘ইউনিভার্স বস’-কে পেয়ে নারাইন, শেরফানে রাদারফোর্ডরাও উচ্ছ্বসিত। দলের মেন্টর গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ আলোচনাও করতে দেখা যায় গেলকে। রাসেল, গেল, নারাইন, রাদারফোর্ডরা সমাজমাধ্যমে ছবি দিয়েছেন। গেল লিখেছেন, ‘‘আবারও ফিরে এলাম পুরনো ডেরায়। এই হোটেলের প্রত্যেকটি কোণ আমার চেনা। কত আনন্দের মুহূর্ত কাটিয়েছি কেকেআর শিবিরে।’’
চলতি মরসুমের প্রথম দল হিসেবে প্লে-অফে উঠেছে কেকেআর। সুহানা খান, অনন্যা পাণ্ডে, আব্রাম খানেরা তার সাক্ষী ছিলেন। মাঠে না এলেও শাহরুখ ম্যাচ দেখেছেন। দলকে বিশেষ বার্তাও দিয়েছেন।
নাইট সূত্রের খবর, শাহরুখ ভিডিয়ো কলে সকলকে বলেছেন, ‘‘ট্রফি জেতা নিয়ে ভেবো না। ক্রিকেট উপভোগ করো। আমরা পঞ্জাব ম্যাচের ব্যর্থতার পরে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। সেই ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আমরাই নিজেদের উদাহরণ। শেষ ম্যাচ পর্যন্ত এই লড়াই যেন বজায় থাকে।’’
রবিবার সন্ধেয় আমদাবাদ পৌঁছেছে কেকেআর। সোমবার ম্যাচ গুজরাত টাইটানসের বিরুদ্ধে। নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে প্লে-অফের ম্যাচ খেলতে হবে শ্রেয়সদের। ফলে পিচের চরিত্রও বুঝে যাওয়ার সুযোগ থাকছে।
সহ-অধিনায়ক নীতীশ রানা শনিবার দলে ফেরেন। প্রথম ম্যাচে চোট পেয়ে ১১ ম্যাচ বসেছিলেন। প্লে-অফ নিশ্চিত করে সাংবাদিক বৈঠকে এসে রানা বলে যান, ‘‘পঞ্জাব ২৬২ রান তাড়া করে জেতার পরে প্রচণ্ড খারাপ লেগেছিল। সেই রাতে তিন চার জনের বেশি কেউ খাবার খেতে পারেনি। আমাদের দলে কেউ এমন নেই যে, খারাপ সময়ও হাসিঠাট্টা করবে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘সকলেরই খারাপ লেগেছিল। আমরা যখন আনন্দ করি, সকলে মিলে করি। আবার দুঃখও সকলে ভাগ করে নিই। পঞ্জাবের কাছে হারের একে অন্যের কাঁধে হাত রেখেছি। শেষ দু’বছরে এত ঐক্যবদ্ধ কেকেআর দেখা যায়নি। এ বার সত্যি অনেক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।’’
নাইট সংসারে সকলের মধ্যে জেতার খিদে লক্ষ্য করেছেন রানা। বলেছেন, ‘‘আইপিএলে ভাল ফল করতে না পারলে সকলেই হতাশ হয়। আমরাও হই। কোনও দল জিততে থাকলে তাদের কোনও খুঁত নজরে পড়ে না। কিন্তু আমরাও নিখুঁত নই। ভুল এ বারও করেছি। কিন্তু ঐক্যবদ্ধ হয়ে খেলছে সকলে। সকলের মধ্যে বিশ্বাস তৈরি হয়েছে, এই প্রতিযোগিতা আমরাও জিততে পারি।’’ আরও বলেন, ‘‘আমারই উদাহরণ দিই। অন্য কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি হলে আমাকে এত দিন দলের সঙ্গে রাখতই না। পরিবর্ত খোঁজার চেষ্টা করত। কিন্তু গৌতি ভাই আমার উপরে আস্থা রেখেছেন।’’
গম্ভীরই কি তা হলে নাইটদের পরিবর্তনের মূল উৎস? মরসুম শেষেই তা আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে।
নাইটদের উৎসবের রাতে নতুন ভাবে জল্পনাও শুরু হয়েছে রোহিত শর্মাকে নিয়ে। শনিবার বৃষ্টির সময় কেকেআর ড্রেসিংরুমে হর্ষিত রানা, অভিষেক নায়ারদের সঙ্গে গল্প করতে দেখা যায় রোহিতকে। যার ফলে নাইট সংসারে রোহিতের আসার সম্ভাবনা নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা।
শনিবার ইডেনে রোহিতকে দেখা যায় নাইটদের ড্রেসিংরুমের বাইরে চেয়ার বসে গল্প দিচ্ছেন অভিষেক নায়ারদের সঙ্গে। ছিলেন কে এস ভরত, হর্ষিত রানা, বৈভব অরোরা। নাইট সাজঘরে রোহিতের গল্প করার ছবি মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে।
নায়ারের সঙ্গে ম্যাচের আগের দিন রোহিত বলেই ফেলেছিলেন, এটাই তাঁর শেষ বছর। তা হলে কি পরের আইপিএলে ভারতীয় অধিনায়কের নাইট সংসারে আসার সম্ভাবনাও নতুন ভাবে তৈরি হল?