ম্যাচ জেতানো জুটি সঞ্জু (বাঁ দিকে) এবং জুরেলের। ছবি: আইপিএল
থামানো যাচ্ছে না রাজস্থান রয়্যালসকে। আইপিএলে একের পর এক ম্যাচ জিতে চলেছে তারা। শনিবার লখনউ সুপার জায়ান্টসকে তাদেরই মাঠে হারিয়ে দিল সঞ্জু স্যামসনের দল। আইপিএলে প্লে-অফের টিকিটও কার্যত পাকা করে ফেলল তারা। আগে ব্যাট করে লখনউয়ের তোলা ১৯৬/৫ রান ৭ উইকেট বাকি থাকতেই তুলে দিল রাজস্থান। অধিনায়ক সঞ্জু এবং ধ্রুব জুরেলের ব্যাটিং জেতাল রাজস্থানকে।
আগে ব্যাট করতে নেমে ট্রেন্ট বোল্টকে প্রথম দু’টি বলে চার মেরে লখনউয়ের হয়ে শুরুটা ভালই করেছিলেন কুইন্টন ডি’কক। সেই ইনিংস দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। তৃতীয় বলেই ডি’ককের স্টাম্প ছিটকে দেন বোল্ট। নিউ জ়িল্যান্ডের পেসারের বল বুঝতেই পারেননি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার। পরের ওভারে আরও একটি উইকেট হারায় লখনউ। এ বার ফিরে যান আগের ম্যাচের শতরানকারী মার্কাস স্টোয়নিস। সন্দীপ শর্মার সুইং বল বুঝতেই পারেননি তিনি।
বিপদের মুখে দলের হাল ধরেন কেএল রাহুল এবং দীপক হুডা। লখনউয়ের পিচ মন্থর ছিল। বল পড়ে খুব ভাল ভাবে ব্যাটে আসছিল না। ফলে এই পিচে বড় রান হওয়ার সম্ভাবনা যে নেই, সেটা বোঝাই যাচ্ছিল। রাজস্থানের বোলারেরাও নিয়ন্ত্রিত বল করছিলেন। তার মধ্যেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে রান করতে থাকেন রাহুল এবং দীপক। ৩১ বলে ৫০ করে দীপক ফিরে গেলেও খেলছিলেন রাহুল। ১৮তম ওভারে ফেরেন লখনউ অধিনায়ক। আটটি চার এবং দু’টি ছয়ের সাহায্যে ৪৮ বলে ৭৬ করেন তিনি।
রাজস্থানের দুই স্পিনার সাফল্য পাননি। ওভারপ্রতি দশের উপর রান দিয়েও কোনও উইকেট পাননি যুজবেন্দ্র চহাল। রবিচন্দ্রন অশ্বিনও চার ওভারে ৩৯ রান দিয়ে একটি উইকেট পান। চার ওভারে ৪২ রানে একটি উইকেট পেয়েছেন আবেশ খান। সন্দীপ শর্মা দু’টি উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি নিয়ন্ত্রিত বল করেন।
দুশোর কাছাকাছি রান তাড়া করতে নামলে পাওয়ার প্লে-র সুবিধা নিতে চায় সব দলই। রাজস্থান আবার পাওয়ার প্লে-ই সবচেয়ে বেশি কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। কিন্তু লখনউয়ের পিচ পাটা না হওয়ায় স্ট্রোক খেলতে অসুবিধা হচ্ছিল। অন্যান্য ম্যাচে পাওয়ার প্লে-তে যে দাপট দেখান যশস্বী জয়সওয়াল, জস বাটলাররা, সেটা শনিবার লখনউয়ে দেখা যায়নি। ফলে দ্রুত রান তুলতে অসুবিধাই হচ্ছিল।
তবু পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই ৫০-এর গণ্ডি পার করে ফেলে রাজস্থান। ষষ্ঠ ওভারের পঞ্চম বলে বাটলারকে ফেরান যশ ঠাকুর। তাঁর বল ডান দিকে সরে খেলতে গিয়ে বাটলারের (৩৪) লেগ স্টাম্প উড়ে যায়। পরের ওভারের প্রথম বলেই ফেরেন যশস্বীও (২৪)। স্টোয়নিসের বলে রবি বিষ্ণোইয়ের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। নবম ওভারে ফেরেন ফর্মে থাকা রিয়ান পরাগও (১৪)। পর পর তিনটি উইকেট হারিয়ে আচমকাই একটু চাপে পড়ে যায় রাজস্থান।
সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন অধিনায়ক সঞ্জু এবং ধ্রুব জুরেল। ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর থেকে জুরেলের ব্যাট থেকে বড় রান দেখা যাচ্ছিল না। কিন্তু দরকারে কাজে এল তাঁর ইনিংস। ম্যাচ জেতানো অর্ধশতরান করলেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, সঞ্জুর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জুটি বেঁধে দলকে জেতালেন। চতুর্থ উইকেটে ১২১ রানের জুটি রাজস্থানকে জিতিয়ে দিল।