বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে বিধ্বংসী ইনিংস খেললেন সূর্যকুমার যাদব। —ফাইল চিত্র
সূর্যকুমার যাদব, সূর্যকুমার যাদব, সূর্যকুমার যাদব। যে দিন থেকে ছন্দে ফিরেছেন, একার কাঁধে রোহিত শর্মার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন এই ব্যাটার। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধেও সেটাই করলেন তিনি। ২০০ রান তাড়া করতে নেমে ৩৫ বলে ৮৩ রানের ইনিংস খেললেন সূর্য। শেষ ৬টি ইনিংসে চার নম্বর অর্ধশতরান করলেন টি-টোয়েন্টির এক নম্বর ব্যাটার। সূর্যের ব্যাটিংয়ে বিরাট কোহলিদের হারিয়ে আইপিএলের পয়েন্ট তালিকায় এক লাফে তিন নম্বরে উঠে এলেন রোহিত শর্মারা।
২০০ রান তাড়া করা যেন জলভাত করে ফেলেছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। এ বারের আইপিএলে আরও এক বার ২০০ রান বা তার বেশি তাড়া করে জিতল মুম্বই। এই নিয়ে তৃতীয় বার এই কীর্তি করল তারা। এর আগে রাজস্থান রয়্যালস ও পঞ্জাব কিংসকে ২০০ রানের বেশি তাড়া করে হারিয়েছিল মুম্বই। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন বেঙ্গালুরু। ২১ বল বাকি থাকতে ২০০ রান তাড়া করে নিল মুম্বই।
টসে জিতে প্রথমে বেঙ্গালুরুকে ব্যাট করতে পাঠান রোহিত। শুরুটা ভাল হয়নি কোহলিদের। এ বারের আইপিএলে ছন্দে থাকলেও ওয়াংখেড়েতে রান পেলেন না কোহলি। প্রথম ওভারেই ১ রানের মাথায় জেসন বেহরেনডর্ফের বলে খোঁচা মেরে আউট হলেন তিনি। তিন নম্বরে নামা অনুজ রাওয়াতও রান পাননি। তাঁকেও আউট করেন বেহরেনডর্ফ।
কোহলি রান না পেলেও নিজের ছন্দে খেললেন আরসিবি অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি। তাঁকে সঙ্গ দিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। দু’জনে মিলে প্রতিআক্রমণ করলেন। ফলে কোহলিকে আউট করার সুবিধা কাজে লাগাতে পারল না মুম্বই। বেশি আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করছিলেন ম্যাক্সওয়েল। মাত্র ২৫ বলে নিজের অর্ধশতরান করেন তিনি। খুব বেশি পিছিয়ে ছিলেন না ডুপ্লেসিও। ৩০ বলে ৫০ করেন তিনি। এ বারের আইপিএলে এটি ডুপ্লেসির ষষ্ঠ অর্ধশতরান। দু’জনের মধ্যে শতরানের জুটি হয়।
বেঙ্গালুরুর দুই ব্যাটারকে দেখে একটা সময় মনে হচ্ছিল, ২৪০-২৫০ রান হবে। কিন্তু মুম্বইকে খেলায় ফেরালেন সেই বেহরেনডর্ফ। ৬৮ রানের মাথায় ম্যাক্সওয়েলকে ফেরালেন তিনি। তার পরেই ৬৫ রানের মাথায় আউট হলেন ডুপ্লেসি। ফলে রানের গতি কমে গেল বেঙ্গালুরুর। শেষ দিকে দীনেশ কার্তিক ৩০ রান না করলে চাপে পড়ত আরসিবি। ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৯৯ রান করে তাড়া।
২০০ রান তাড়া করতে নেমে দুরন্ত ব্যাটিং শুরু করেন ঈশান। আগের ম্যাচের ছন্দেই ছিলেন তিনি। কোনও পেসারকেই রেয়াত করছিলেন না তিনি। রোহিত ধীরে খেললেও ঈশানের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল, পার্কে বেড়াতে এসেছেন। কিন্তু ৪১ রানের মাথায় ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গর বলে আউট হন তিনি। রোহিত এই ম্যাচেও ব্যর্থ। ৭ রান করে ফেরেন তিনি।
তাতে অবশ্য রান তাড়া করতে কোনও সমস্যা হল না মুম্বইয়ের। কারণ, ব্যাট হাতে আরও এক বার তাণ্ডব করলেন সূর্য। তাণ্ডব বললেও তাকে কম বলা হয়। বেঙ্গালুরুর বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করলেন মুম্বইয়েই এই ব্যাটার। উইকেটের চার দিকে বড় শট মারলেন তিনি। মাত্র ২৫ বলে অর্ধশতরান করেন তিনি। তাঁকে সঙ্গ দিলেন নেহাল ওয়াধেরা। এই বাঁ হাতি তরুণও প্রথম থেকে চালিয়ে খেললেন।
অর্ধশতরান করার পরে সূর্যকে আর আটকানো যাচ্ছিল না। প্রতি বলে বড় শট খেলার চেষ্টা করছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৩৫ বলে ৮৩ রান করে আউট হলেন সূর্য। ইনিংসে ৭টি চার ও ৬টি ছক্কা মেরেছেন তিনি। তবে তিনি যখন আউট হলেন তত ক্ষণে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে মুম্বই। কয়েক বল পরেই ছক্কা মেরে দলকে জেতালেন নেহাল। ৩৪ বলে ৫২ রান করে অপরাজিত থাকলেন তিনি।