জয়ের পর শুভমনদের উচ্ছ্বাস। ছবি আইপিএল
শেষ দুই বলে দুই ছক্কা। অবিশ্বাস্য খেলে পঞ্জাব কিংসকে হারিয়ে দিল গুজরাত টাইটান্স। শেষ ওভারে এক সময় মনে হচ্ছিল হেরেই যাবে তারা। কিন্তু খেলা একাই বদলে দিলেন রাহুল। ওডিন স্মিথকে শেষ দু’বলে দু’ছক্কা মেরে দলকে ৬ উইকেটে জিতিয়ে দিলেন তিনি। শেষ ওভারে জিততে গেলে গুজরাতকে ১৯ রান তুলতে হত। এমন অবস্থায় প্রথম বলেই ডেভিড মিলারের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন হার্দিক পাণ্ড্য (২৭)। প্রথম বলে তেওয়াটিয়া এক রান নেওয়ার পর তৃতীয় বলে মিলার চার মারেন। চতুর্থ বলে মিলার এক রান নেন। জিততে তখন দু’বলে ১২ রান দরকার ছিল গুজরাতের। বহু যুদ্ধের ঘোড়া তেওয়াটিয়া সেই কাজই করে দেখান।
ময়ঙ্ক অগ্রবাল শুক্রবারও ব্যাট হাতে ব্যর্থ। হার্দিক পাণ্ড্যের আপাতনিরীহ একটা বলে লোপ্পা ক্যাচ তুলে ফিরে গেলেন মাত্র পাঁচ রানে। এ বারের আইপিএলে প্রথম নামা জনি বেয়ারস্টোও দু’অঙ্কের রানে পৌঁছতে পারেননি। লকি ফার্গুসনের বলে মারতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে উঠে যায় ক্যাচ, যা তালুবন্দি করেন তেওয়াটিয়া।
তৃতীয় উইকেটে জুটি গড়েন লিয়াম লিভিংস্টোন এবং শিখর ধবন। ৫২ রান যোগ হওয়ার পর ধবন ফেরেন (৩৫)। পঞ্জাব দলে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সুযোগ পাওয়া জিতেশ শর্মা শুক্রবারও চমকে দিলেন। একটি চার এবং দু’টি ছয়ের সাহায্যে ১১ বলে ঝোড়ো ২৩ রান করে ফিরলেন তিনি। তবে যে লড়াই নিয়ে অনেকেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন তা দেখা গেল না। বল হাতে ফার্গুসন নয়, বরং ব্যাট হাতে লিভিংস্টোনেরই দাপট দেখা গেল। অনায়াস দক্ষতায় একের পর এক বল বাউন্ডারিতে পাঠাচ্ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত সাতটি চার এবং চারটি ছক্কার সাহায্যে ২৭ বলে ৬৪ রান করে ফিরে যান। ২১ বলে অর্ধশতরান পূরণ করেন, যা এ মরসুমে দ্বিতীয় দ্রুততম। কলকাতার প্যাট কামিন্সের পরেই। শেষ দিকে রাহুল চাহারের (অপরাজিত ২২) দাপুটে ব্যাটিংয়ে ১৮৯/৯ তোলে পঞ্জাব।
ম্যাথু ওয়েডকে শুরুতেই হারালেও গুজরাতকে ইনিংস অনায়াসে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন শুভমন এবং আইপিএলে অভিষেক হওয়া সাই সুদর্শন। তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগে ভাল খেলে ইতিমধ্যেই খ্যাতি অর্জন করেছেন সুদর্শন। আইপিএলেও আবির্ভাবে চমকে দিলেন তিনি। ঠিক যে ভাবে চমকে দিয়েছেন দর্শন নলকান্ডে। তরুণ জোরে বোলার এক সময় হ্যাটট্রিক করেই ফেলেছিলেন। অল্পের জন্য তা হয়নি।
এর পর ম্যাচ জুড়ে শুধুই শুভমন। অনায়াস ভঙ্গিতে একের পর এক বাউন্ডারি এবং ওভার বাউন্ডারি মারলেন তিনি। সঙ্গে পেয়েছিলেন সুদর্শনকে। দু’জনে মিলে দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করলেন ১০১ রান। এর পর হার্দিকের সঙ্গে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন শুভমন। কিন্তু ব্যক্তিগত ৯৬ রানের মাথায় ক্যাচ দিয়ে বসলেন প্রাক্তন নাইট। আইপিএলে প্রথম শতরান এখনও অধরাই রয়ে গেল তাঁর। শেষ ওভারে হার্দিক ফিরে যাওয়ায় কিছুটা চাপে পড়েছিল গুজরাত। কিন্তু তেওয়াটিয়ার দাপটে জয়ের হ্যাটট্রিক হয়ে গেল তাদের।