দীনেশ কার্তিক। ছবি: আইপিএল
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবন প্রায় দু’দশকের। দেশের হয়ে খেলেছেন ১৫২ ম্যাচ। তার মধ্যে এক দিনের ম্যাচ ৯৪টি। দীনেশ কার্তিকের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনে অন্ধকার নেমেছে বহু বার। সেই আঁধার কাটিয়ে বার বার তিনি আলোকিত করেছেন নিজেকে।
তামিলনাড়ুর এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার দুই ভূমিকাতেই নির্ভরযোগ্য। তবু তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবন ঢাকা পড়েছে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ছায়ায়। দেখতে দেখতে বয়স এখন ৩৬। এই বয়সে অনেকেই অবসরের কথা ভাবতে শুরু করেন। কিন্তু কার্তিকের চোখ জাতীয় দল। ধোনি-উত্তর সময়ে ভারতীয় দলের উইকেট রক্ষার দায়িত্বে ঋদ্ধিমান সাহা এবং বর্তমানে ঋষভ পন্থ।
কিছু দিন আগেই জাতীয় দল থেকে ঋদ্ধিমানকে বলা হয়েছে, এ বার তরুণদের সুযোগ দেওয়া হবে। বাংলার উইকেটরক্ষক অন্য কিছু ভাবতে পারেন। কার্তিকের বয়স ঋদ্ধিমানের মতোই। তিনি কিন্তু আইপিএলের প্রতি ম্যাচে বুঝিয়ে চলেছেন, দলে নির্বাচিত হওয়ার জন্য বয়স কখনও মাপকাঠি হতে পারে না।
জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের বাসনা অস্বীকার করছেন না কার্তিক। কেনই বা করবেন! আত্মবিশ্বাসী ক্রিকেটার ব্যাট হাতে যেমন বিপক্ষের বোলারদের সামলাচ্ছেন, তেমনই জবাব দিচ্ছেন সমালোচকদেরও।
নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার সাইমন ডুল গত বছর আইপিএলে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় প্রস্তুতি সংক্রান্ত কিছু পরামর্শ দেন কার্তিককে। সেই পরামর্শ ভোলেননি তিনি। এ বারও আছেন ডুল। আছেন কার্তিকও। শুক্রবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু বনাম পঞ্জাব কিংস ম্যাচের পর ডুল কার্তিককে প্রশ্ন করেন, ‘‘এই মরসুমে তোমার স্ট্রাইক রেট অবিশ্বাস্য। তুমি কি আলাদা কিছু অনুশীলন করেছ? ইনিংসের শেষ দিকে তুমি কী ভাবে এমন ব্যাটিং করছ?’’
জবাবে কার্তিক বলেন, ‘‘গত মরসুমে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় তুমি যা যা আমাকে শিখিয়েছিলে, এসব তারই ফল। খুব স্বচ্ছন্দেই করতে পারছি।’’ কার্তিকের জবাব বুঝতে ভুল হয়নি ডুলের। পরিস্থিতি সামলাতে ডুল বলেন, ‘‘আরে ছাড়। তুমি অনুশীলনে ঠিক কী করেছ?’’ কার্তিক বলেন, ‘‘মরসুম শুরুর আগে কোচের সঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। আমরা দু’জনেই চাইছিলাম আলাদা কিছু করতে। কারণ আমার ব্যাটিং ধরা পড়ে যাচ্ছিল। তাই আমরা একটু অন্য রকম ভাবে অনুশীলন করেছি।’’ কিন্তু কী অনুশীলন করেছেন তা প্রকাশ্যে জানাননি কার্তিক।
এখনও পর্যন্ত আইপিএলে ১২টি ম্যাচ খেলে ২৭২ রান করেছেন কার্তিক। স্ট্রাইক রেট ২০০-র বেশি। প্রায় সব ম্যাচেই ব্যাট হাতে ঝড় তুলছেন তিনি। কার্তিক বলেছেন, ‘‘পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করছি। ব্যাটিংয়ে কিছু মেশানোর চেষ্টা করছি। দলের জন্য অবদান রাখাটাই আমার কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। সেটা মাথায় রেখেই খেলার চেষ্টা করি। আমার একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য রয়েছে। সেটা অর্জন করতে চাই এবং নিজের সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করছি। খেলতে খেলতেই এগুলো হচ্ছে।’’