কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেছেন রাজস্থান রয়্যালসের যুজবেন্দ্র চহাল। এটি এই মরসুমের প্রথম তথা আইপিএলের ইতিহাসের ২১তম হ্যাটট্রিক। এর আগের ১৪টি মরসুমে আরও ২০টি হ্যাটট্রিক হয়েছে। তার মধ্যে ১৫টি হ্যাটট্রিক করেছেন ভারতীয় বোলাররা। বাকি ছ’টি গিয়েছে বিদেশি বোলারদের দখলে।
আইপিএলের ইতিহাসে প্রথম হ্যাটট্রিক করেছিলেন লক্ষ্মীপতি বালাজি। ২০০৮ সালে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে পঞ্জাব কিংসের (তৎকালীর কিংস ইলেভেন পঞ্জাব) বিরুদ্ধে পর পর তিন বলে তিন উইকেট নেন তিনি। ইরফান পাঠান, পীযূষ চাওলা ও বিক্রম রাজবীর সিংহকে আউট করেন বালাজি।
আইপিএলে মোট তিনটি হ্যাটট্রিক করেছেন অমিত মিশ্র। তার মধ্যে প্রথমটি এসেছিল ২০০৮ সালে। দিল্লি ক্যাপিটালসের (তৎকালীন দিল্লি ডেয়ারডেভিলস) হয়ে পর পর তিন বলে ডেকান চার্জার্সের রবি তেজা, প্রজ্ঞান ওঝা ও রুদ্রপ্রতাপ সিংহকে আউট করেন তিনি।
সেই বছরই চেন্নাই সুপার কিংসের মাখায়া এনটিনি কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেন। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, দেবব্রত দাস ও ডেভিড হাসি তাঁর শিকার হন।
২০০৯ সালের প্রথম হ্যাটট্রিক করেন যুবরাজ সিংহ। পঞ্জাব কিংসের হয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের রবিন উথাপ্পা, জাক কালিস ও মার্ক বাউচারকে আউট করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি।
২০০৯ সালে হ্যাটট্রিক করেছিলেন রোহিত শর্মা। ডেকান চার্জার্সের হয়ে খেলতেন রোহিত। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অভিষেক নায়ার, হরভজন সিংহ ও জেপি দুমিনিকে আউট করেন রোহিত।
সে বছর আরও একটি হ্যাটট্রিক করেন যুবরাজ। ডেকান চার্জার্সের বিরুদ্ধে হার্শেল গিবস, অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস ও বেণুগোপাল রাওকে পর পর তিন বলে সাজঘরে ফেরান যুবি।
২০১০ সালের প্রথম হ্যাটট্রিক করেন প্রবীণ কুমার। বেঙ্গালুরুর হয়ে রাজস্থান রয়্যালসের ড্যামিয়েন মার্টিন, সুমিত নারওয়াল ও পরশ ডোগরাকে আউট করেন তিনি। সে বছর ওই একটিই হ্যাটট্রিক হয়েছিল।
২০১১ সালে অমিত মিশ্র আরও একটি হ্যাটট্রিক করেন। ডেকান চার্জার্সের হয়ে খেলার সময় পঞ্জাবের রায়ান ম্যাকলারেন, মনদীপ সিংহ ও রায়ান হ্যারিসকে আউট করেন তিনি। সে বছরও একটিই হ্যাটট্রিক হয়েছিল।
২০১২ সালে রাজস্থান রয়্যালসের অজিত চাণ্ডিলা হ্যাটট্রিক করেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় যিনি জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার আগে আইপিএলে হ্যাটট্রিক করেছেন। পুণে ওয়ারিয়র্সের জেসি রাইডার, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও রবিন উথাপ্পাকে আউট করেন অজিত। সে বছরও ওই একটিই হ্যাটট্রিক হয়।
২০১৩ সালে প্রথম হ্যাটট্রিক করেন সুনীল নারাইন। কেকেআর-এর এই স্পিনার পঞ্জাবের ডেভিড হাসি, আজহার মাহমুদ ও গুরকিরত সিংহকে আউট করেন।
সে বছর অমিত মিশ্র নিজের তৃতীয় হ্যাটট্রিক করেন। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলার সময় পুণে ওয়ারিয়র্সের ভুবনেশ্বর কুমার, রাহুল শর্মা ও অশোক ডিন্ডাকে ফেরান তিনি।
২০১৪ সালে হ্যাটট্রিক নেন প্রবীণ তাম্বে। তিনি দ্বিতীয় ক্রিকেটার যিনি জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার আগে হ্যাটট্রিক করেন। রাজস্থানের হয়ে কলকাতার বিরুদ্ধে মণীশ পাণ্ডে, ইউসুফ পাঠান ও রায়ান টেন দুসখাতেকে আউট করেন প্রবীণ।
সে বছর রাজস্থানের হয়ে হ্যাটট্রিক করেন শেন ওয়াটসনও। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের শিখর ধবন, মোজেস হেনরিকেস ও কর্ণ শর্মাকে আউট করেন তিনি।
২০১৫ সালে একটিও হ্যাটট্রিক হয়নি। ২০১৬ সালে পঞ্জাবের অক্ষর পটেল গুজরাত লায়ন্সের দীনেশ কার্তিক, ডোয়েন ব্র্যাভো ও রবীন্দ্র জাডেজাকে পর পর তিন বলে আউট করেন। সে বছর ওই একটিই হ্যাটট্রিক হয়েছিল।
২০১৭ সালে বেঙ্গালুরুর হয়ে স্যামুয়েল বদ্রি মুম্বইয়ের পার্থিব পটেল, মিচেল ম্যাকগ্লেনাঘন ও রোহিত শর্মাকে আউট করে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন।
সে বছর গুজরাত লায়ন্সের অ্যান্ড্রু টাই রাইজিং পুণে সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেন। পর পর তিন বলে অঙ্কিত শর্মা, মনোজ তিওয়ারি ও শার্দুল ঠাকুরকে আউট করেন তিনি।
২০১৭ সালেই রাইজিং পুণে সুপার জায়ান্টসের জয়দেব উনাদকাট হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেন। বিপুল শর্মা, রশিদ খান ও ভুবনেশ্বর কুমারকে সাজঘরে ফেরত পাঠান তিনি।
স্যাম কারেন ২০১৯ সালে পঞ্জাবের হয়ে হ্যাটট্রিক করেন। দিল্লি ক্যাপিটালসের হর্ষল পটেল, কাগিসো রাবাডা ও সন্দীপ লামিচানেকে আউট করে এই কীর্তি করেন তিনি।
সে বছর হ্যাটট্রিক করেন রাজস্থানের শ্রেয়স গোপালও। বেঙ্গালুরুর বিরাট কোহলী, এবি ডিভিলিয়ার্স ও মার্কাস স্টোইনিসকে আউট করে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি।
২০২০ সালে একটিও হ্যাটট্রিক হয়নি। ২০২১ সালে আরসিবি-র হয়ে পর পর তিন বলে তিন উইকেট নেন হর্ষল পটেল। মুম্বইয়ের হার্দিক পাণ্ড্য, কায়রন পোলার্ড ও রাহুল চাহারকে আউট করেন তিনি।
তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন রাজস্থানের যুজবেন্দ্র চহাল। কলকাতার শ্রেয়স আয়ার, শিবম মাভি ও প্যাট কামিন্সকে আউট করেন তিনি। ওই এক ওভারে মোট চার উইকেট নেন চহাল।