হার্দিক পাণ্ড্য। —ফাইল চিত্র।
প্রথমে ব্যাট করে গুজরাত টাইটান্স তোলে ১৬৮ রান। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ইনিংস শেষ হয়ে গেল ১৬২ রানে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৯ রান প্রয়োজন ছিল। প্রথম দু’বলে ১০ রান তুলেও নিয়েছিলেন হার্দিক পাণ্ড্য। কিন্তু শেষটা করতে পারলেন না। উইকেট দিয়ে এলেন উমেশ যাদবকে। আর তাতেই শেষ হয়ে গেল মুম্বইয়ের জয়ের আশা।
হার্দিকের জন্ম গুজরাতে। ২০২২ এবং ২০২৩ সালে সেই দলের হয়েই আইপিএল খেলেছিলেন। ফাইনালে উঠেছিলেন দু’বার। এক বার জিতেছিলেন, অন্য বার হেরেছিলেন। সেই গুজরাত ছেড়ে হার্দিক এই বছর ফিরে যান মুম্বইয়ে। ২০১৫ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়েই আইপিএল শুরু করেছিলেন হার্দিক। সেই দলে ফিরে অধিনায়কও হন। আর এ বারের আইপিএলে মুম্বইয়ের প্রথম ম্যাচটাই ছিল গুজরাতের বিরুদ্ধে তা-ও আবার আমদাবাদে। গুজরাতের ঘরের ছেলে হার্দিক নামলেন ঘরশত্রু হয়ে। তবে জিততে পারলেন না। শেষ হাসি হাসলেন গুজরাতের নতুন অধিনায়ক শুভমন গিলই। অধিনায়ক হিসাবে অভিষেক হয়ে গেল তাঁর। জয় দিয়েই শুরু হল সেই পথ চলা।
গুজরাত টাইটান্স ব্যাট করার সময় প্রথম ওভারটাই করেন অধিনায়ক হার্দিক। আর সেই ওভারে দেন ১১ রান। গুজরাতের ওপেনার ঋদ্ধিমান সাহা প্রথম বলেই চার মারেন। বোলার হার্দিককে দেখা গেল বেশ লম্বা লাইন আপ নিয়ে বল করতে। কিন্তু মন জয় করতে পারলেন না। প্রশ্ন উঠতেই পারে, রোহিত শর্মা মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক থাকলে আদৌ হার্দিককে দিয়ে তিন ওভার বল করাতেন কি না।
মুম্বই দলে যশপ্রীত বুমরার মতো এক জন পেসার রয়েছেন। কিন্তু তাঁকে দিয়ে ইনিংসের প্রথম ওভার করালেন না হার্দিক। বুমরা বল করতে এলেন চতুর্থ ওভারে। এসেই তুলে নেন ঋদ্ধিমান সাহার উইকেট। ইয়র্কার সামলাতে পারেননি বাঙালি উইকেটরক্ষক। বোল্ড হয়ে যান ঋদ্ধি। দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে এসে বুমরা প্রথম বলেই আউট করেন ডেভিড মিলারকে। এমন এক জন বোলারকে দিয়ে প্রথম ওভার বল কেন করানো হবে না? সেই প্রশ্ন তুললেন ধারাভাষ্যকারেরাও।
গুজরাতের হয়ে শুরুটা খারাপ করেননি অধিনায়ক শুভমন গিল এবং ঋদ্ধিমান। ১৫ বলে ১৯ রান করে ঋদ্ধি আউট হলে নামেন সাই সুদর্শন। তিনি এবং শুভমন মিলে ৩৩ রান যোগ করেন। শুভমন ৩১ রান করে আউট হলেও সুদর্শন ছিলেন। তিনি ৪৫ রান করেন।
জেরাল্ড কোয়েটজ়ি নেন দু’টি উইকেট। পীযূষ চাওলা একটি করে উইকেট নেন। কোয়েটজ়ি চার ওভারে ২৭ রান দেন। চাওলা তিন ওভারে দেন ৩১ রান। কোয়েটজ়ি এবং বুমরা ছাড়া কোনও বোলারই রান আটকাতে পারেননি। সেই সুযোগে গুজরাত ১৬৮ রান তুলে নিল। ঠিক মতো বোলারদের ব্যবহার করতে পারলে হয়তো আরও আগেই থেমে যেত গুজরাতের ইনিংস। সেই দায় হার্দিককে নিতেই হবে।
ব্যাট হাতে শুরুটা খারাপ করেননি প্রাক্তন অধিনায়ক রোহিত। যদিও বোর্ডের চুক্তি থেকে বাদ পড়ার পর প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা ঈশান কিশন কোনও রান না করেই সাজঘরে ফিরে যান। আজমাতুল্লা ওমরজাইয়ের বলে উইকেটরক্ষক ঋদ্ধির হাতে ক্যাচ দিয়ে যান তরুণ উইকেটরক্ষক। ইনিংস গড়ার কাজটা করেন রোহিত এবং ইমপ্যাক্ট ক্রিকেটার হিসাবে নামা ডেওয়াল্ড ব্রেভিস। কিন্তু দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি তাঁরা। রোহিতকে আউট করেন সাই কিশোর। ব্রেভিস উইকেটটি নেন মোহিত শর্মা।
শেষ দু’ওভারে জয়ে জন্য মুম্বইয়ের প্রয়োজন ছিল ২৭ রান। স্পেনসর জনসন ১৯তম ওভারটি করেন। সেই ওভারে ৮ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন বাঁহাতি পেসার। যদিও ওভারের প্রথম বলটিতে তাঁকে ছক্কা মেরেছিলেন তিলক বর্মা। পরের বলেই আউট হয়ে যান তিনি। শেষ বলে নেন কোয়েটজ়ির উইকেট। হার্দিক যে কেন তাঁকে স্ট্রাইক দিয়েছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। শেষ ওভারে শুভমন বল তুলে দেন অভিজ্ঞ উমেশের হাতে। পর পর দু’বলে বাউন্ডারি মেরে ১০ রান তুলে নেন হার্দিক। কিন্তু পরের বলেই আউট হয়ে যান তিনি। পীযূষ চাওলাও পরের বলে আউট হয়ে যান। শেষ দু’বলে প্রয়োজন ছিল ৯ রান। কিন্তু উমেশ ২ রানের বেশি দেননি।
জয় দিয়েই শুরু হল গুজরাতের এ বারের আইপিএল। তা-ও আবার গত বারের অধিনায়কের দলের বিরুদ্ধে।