(বাঁদিকে) ফ্যাফ ডুপ্লেসি এবং বিরাট কোহলি। ছবি: আইপিএল।
আইপিএলে গুরুত্বপূর্ণ জয় ছিনিয়ে নিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। নিজেদের মাঠে গুজরাত টাইটান্সকে হারাল ৪ উইকেটে। প্রথমে ব্যাট করে শুভমন গিলেরা করেন ১৪৭ রান। জবাবে ১৩.৪ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫২ রান করলেন বিরাট কোহলিরা। এই নিয়ে টানা তিন ম্যাচে জয় পেল বেঙ্গালুরু। আইপিএলের পয়েন্ট তালিকায় ১০ থেকে সাত নম্বরে উঠে এলেন কোহলিরা।
জয়ের জন্য ১৪৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ছিলেন কোহলি এবং বেঙ্গালুরু অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি। বেশি আগ্রাসী ছিলেন ডুপ্লেসি। ১৮ বলে অর্ধশতরান করলেন তিনি। এ বারের প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় এবং সব মিলিয়ে আইপিএলে ৪২তম অর্ধশতরান এল তাঁর ব্যাট থেকে। ২৩ বলে তাঁর ৬৪ রানের ইনিংসে রয়েছে ১০টি চার এবং ৩টি চার। পিচের অন্য প্রান্তে সাবলীল ছিলেন কোহলিও। প্রথম উইকেটের জুটিতে তাঁরা তোলেন ৫.৫ ওভারে ৯২ রান। ডুপ্লেসি আউট হওয়ার পর হঠাৎ কিছুটা চাপ তৈরি হয় বেঙ্গালুরুর ইনিংসে। পর পর আউট হয়ে যান উইল জ্যাক (১), রজত পাটীদার (২), গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৪), ক্যামেরন গ্রিন (১)। ফলে বিনা উইকেটে ৯২ থেকে বেঙ্গালুরু ৫ উইকেটে ১১১ হয়ে যায়। সহজ ম্যাচ নিজেদের দোষে কঠিন করে ফেলেন বেঙ্গালুরুর ক্রিকেটারেরা। জশ লিটলের বল সামলাতেই পারলেন না তাঁরা। ৪৫ রানে ৪ উইকেট তুলে নিলেন আয়ারল্যান্ডের বাঁ হাতি জোরে বোলার।
২২ গজের এক প্রান্ত অবশ্য আগলে রেখেছিলেন কোহলি। তিনিও চাপের মুখে আউট হলেন নুর আহমেদের বলে। কোহলির ব্যাট থেকে এ দিন এল ২৭ বলে ৪২ রানের ইনিংস। ২টি চার এবং ৪টি ছয় মারেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। ১১৭ রানে ৬ উইকেট হারায় বেঙ্গালুরু। এর পর বেঙ্গালুরুর ইনিংসের হাল ধরেন দীনেশ কার্তিক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্বপ্নিল সিংহ। কার্তিক শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন ১২ বলে ২১ রান করে, মারলেন ৩টি চার। স্বপ্নিলের ব্যাট থেকে এল ৯ বলে ১৫ রানের অপরাজিত ইনিংস। তিনি মারলেন ২টি চার এবং ১টি ছক্কা। লিটল ছাড়া গুজরাতের হয়ে ভাল বল করলেন নুর। আফগান স্পিনার ২ উইকেট নিলেন ২৩ রান দিয়ে।
এর আগে ১৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়েও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো রান তোলে গুজরাত টাইটান্স। টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক ডুপ্লেসি। শুরুর দিকের ব্যাটারদের ব্যর্থতায় প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ সম্পূর্ণ কাজে লাগাতে পারলেন না শুভমনেরা। বেঙ্গালুরুর ২২ গজে ইনিংসের শুরুতেই চাপে পড়ে যায় গুজরাত। শুভমন (৭ বলে ২) ছাড়াও ব্যর্থ হলেন ঋদ্ধিমান সাহা (৭ বলে ১) এবং সাই সুদর্শন (১৪ বলে ৬)। মহম্মদ সিরাজ এবং গ্রিনের বোলিংয়ের সামনে অসহায় দেখাচ্ছিল গুজরাতের ব্যাটারদের। চাপের মুখে ইনিংসের হাল ধরেন শাহরুখ খান এবং ডেভিড মিলার। চার নম্বরে নেমে শাহরুখ করেন ২৪ বলে ৩৭। তাঁর ব্যাট থেকে এল ৫টি চার এবং ১টি ছয়। মিলার খেললেন ২০ বলে ৩০ রানের ইনিংস। মারলেন ৩টি চার এবং ২টি ছক্কা। তাঁদের চতুর্থ উইকেটের জুটিতে উঠল ৬১ রান। শেষ দিকে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন রশিদ খান এবং রাহুল তেওতিয়া। আফগানিস্তানের অলরাউন্ডার করলেন ১৪ বলে ১৮। ২টি চার এবং ১টি ছয় এল তাঁর ব্যাট থেকে। তেওতিয়া করলেন ২১ বলে ৩৫। তাঁর ব্যাট থেকে এল ৫টি চার এবং ১টি ছয়। পরের দিকের ব্যাটারেরাও তেমন কিছু করতে পারলেন না। গুজরাতের শেষ চার ব্যাটারের মিলিত অবদান ১১ রান।
গ্রাফিক: সৌভিক দেবনাথ।
বেঙ্গালুরুর সফলতম বোলার যশ দয়াল ২১ রানে ২ উইকেট নিলেন। সিরাজ ২ উইকেট নিলেন ২৯ রান দিয়ে। বেশ কিছু দিন বাদে সিরাজকে চেনা ফর্মে দেখা গেল। ২৮ রানে ১ উইকেট গ্রিনের। ৪২ রান দিয়ে ১ উইকেট পেলেন করণ শর্মা। বিজয় কুমার বৈশাখ নিলেন ২৩ রানে ২ উইকেট।