আইপিএলের সেরা একাদশ বাছল আনন্দবাজার অনলাইন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
শেষ হল এ বারের আইপিএল। প্রতি বারের মতো এ বারও বেশ কিছু ক্রিকেটার নজর কেড়ে নিয়েছেন। উঠে এসেছে নতুন প্রতিভা। একই সঙ্গে দেখা গিয়েছে বুড়ো হাড়ে ভেলকি। সব দলের সব ক্রিকেটারের পারফরম্যান্স বিচার করে এই আইপিএলের সেরা একাদশ বেছে নিল আনন্দবাজার অনলাইন।
এই দল বাছাই করতে গিয়ে মূলত ক্রিকেটারদের সার্বিক পারফরম্যান্সকেই রাখা হয়েছে। পাশাপাশি দেখা হয়েছে তিনি ক’টি ম্যাচে খেলেছেন। কত রান করেছেন বা ক’টি উইকেট নিয়েছেন। সে কারণেই মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে এই দলে রাখা হয়নি। কারণ অধিনায়কত্ব ছাড়া ব্যাট হাতে এ বার বিশেষ কিছু করতে পারেননি তিনি।
আনন্দবাজার অনলাইন ওপেনিং জুটিতে বেছে নিয়েছে শুভমন গিল এবং ফাফ ডুপ্লেসিকে। আইপিএলে রানের বিচারে তাঁরাই সবার উপরে রয়েছেন। দু’জনকে মিলিয়ে প্রায় ১৭০০-র কাছাকাছি রান রয়েছে। শুভমন এ বারের আইপিএলে ভাল ছন্দে ছিলেন। অন্য দিকে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে চার বছর আগে অবসর নেওয়া ডুপ্লেসিকে দেখে মনেই হয়নি তাঁর এত বয়স। অবলীলায় প্রতি ম্যাচে রান করে গিয়েছেন।
তিন নম্বরে রাখা হয়েছে বিরাট কোহলিকে। আইপিএলে সাধারণত ওপেন করতেই নামেন কোহলি। কিন্তু শুভমন এবং ডুপ্লেসিকে জায়গা দেওয়ার স্বার্থে তাঁকে তিনে নামানো হচ্ছে। তিন নম্বর কোহলির কাছে মোটেই অচেনা জায়গা নয়। এক দিনের ক্রিকেটে এই জায়গাতেই নামেন তিনি। আগে টি-টোয়েন্টিতেও তিনেই নামতেন। এ বারের আইপিএলে তাঁর ৬৩৯ রান রয়েছে।
চার নম্বরে রাখা হয়েছে সূর্যকুমার যাদবকে। তিনি মুম্বইয়ের হয়ে এই জায়গাতেই নামেন। আইপিএলের শুরুর দিকে ছন্দে না থাকলেও শেষ কয়েকটি ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে ভাল ইনিংস দেখা গিয়েছে। শটের বৈচিত্রও ভাল। ১৬ ম্যাচে ৬০৫ রান করেছেন তিনি।
পাঁচ নম্বরে রাখা হয়েছে হার্দিক পাণ্ড্যকে। তিনিই এই দলের অধিনায়ক। ব্যাট এবং বল— দু’ভাবেই দলের হয়ে অবদান রেখেছেন। পাশাপাশি ঠান্ডা মাথায় অধিনায়কত্ব করার জন্যে আলাদা করে সুনাম অর্জন করেছেন তিনি।
ছ’নম্বরে থাকছেন ক্যামেরন গ্রিন। তিনিও সূর্যের মতো প্রথম দিকে খুব বেশি কিছু করতে পারেননি। কিন্তু পরের দিকে মুম্বইকে প্লে-অফে তোলার পিছনে অবদান রয়েছে তাঁর। একটি শতরান করেছেন। ১৬ ম্যাচে ৪৫২ রান করেছেন তিনি।
সাত নম্বরে নামবেন রিঙ্কু সিংহ। এ বারের আইপিএলের আবিষ্কার। কেকেআর খুব খারাপ খেললেও আলাদা করে রিঙ্কু নজর কেড়ে নিয়েছেন। পাঁচ ছক্কা মেরে ম্যাচ জিতিয়েছেন গুজরাতের বিরুদ্ধে। আগে ব্যাট করলে বিপদের মুখে বড় রান তোলাই হোক বা রান তাড়া করা, রিঙ্কু সবেতেই পারদর্শী। ম্যাচের পর ম্যাচ একার হাতে বাঁচিয়েছেন কেকেআরকে। তিনি না থাকলে কেকেআরকে আরও লজ্জা পেতে হত।
উইকেটকিপার হিসাবে আট নম্বরে নেওয়া হয়েছে পঞ্জাবের জিতেশ শর্মাকে। অনেকেই প্রশ্ন তুলতে পারেন ঈশান কিশন নয় কেন? এটি মূলত ব্যাটিং অর্ডারের জন্যেই। ঈশান প্রতি ম্যাচে ওপেন করেন। তাঁকে সাতে নামানো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। অন্য দিকে, জিতেশ এই ধরনের জায়গাতেই নামেন। এবং দরকারে চালিয়ে খেলতে পারেন।
ন’নম্বরে থাকছেন রশিদ খান। বল হাতে ১৬ ম্যাচে ২৭টি উইকেট নিয়েছেন। বেগনি টুপির তালিকায় রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে। বোলার হিসাবে তাঁকে নিয়ে তো কোনও প্রশ্নই নেই। ব্যাটার হিসাবেও শেষ দিকে চালিয়ে খেলতে পারেন।
দশ নম্বরে থাকছেন মহম্মদ শামি। তিনি বেগনি টুপির তালিকায় প্রথম স্থানে। ১৬ ম্যাচে ২৮টি উইকেট রয়েছে। পাওয়ার প্লে-তে উইকেট তুলে নিতে তাঁর জুড়ি নেই। শামি অতীতেও বার বার নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
একাদশ এবং শেষ সদস্য হিসাবে থাকছেন চেন্নাইয়ের মাথিশা পাথিরানা, যিনি আইপিএলে পরিচিত ‘বেবি মালিঙ্গা’ নামে। কারণ বোলিংয়ের স্টাইল লাসিথ মালিঙ্গার মতো। এ বারের আইপিএলে আবিষ্কার তিনিও। ধোনির পরামর্শে উঠে এসেছেন। ডেথ ওভারে তাঁর বোলিং নজর কেড়ে নিয়েছে।
এখানেই শেষ নয়। আইপিএলের নিয়ম মেনে আনন্দবাজার অনলাইন মাথায় রেখে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়মও। এই প্রথম একাদশ তৈরি করা হয়েছে ব্যাট করার কথা মাথায় রেখে। বল করার সময় ডুপ্লেসির জায়গায় নামানো হবে যুজবেন্দ্র চহালকে।
আনন্দবাজার অনলাইনের সেরা একাদশ: শুভমন, ডুপ্লেসি, কোহলি, সূর্য, হার্দিক, গ্রিন, রিঙ্কু, জিতেশ, রশিদ, শামি এবং পাথিরানা। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার: যুজবেন্দ্র চহাল।