ছবি সংগৃহীত।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আইপিএল মানেই মন্থর পিচে রান ওঠার গতি আটকে যাওয়া। স্পিনারদের বাড়তি সুবিধে পাওয়া। আসন্ন আইপিএল ঘিরেও এ রকম একটা ছবি ফুটে উঠছে। কিন্তু এই ধারণাটা এ বার বদলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমিরশাহিতে ফোন করে যা জানা গিয়েছে, তাতে ব্যাটসম্যানরা খুশি হতে পারেন। ভ্রুকুটি বাড়তে পারে স্পিনারদের।
দুবাই, আবু ধাবি, শারজায় পিচ তৈরির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, তিনটি কেন্দ্রেই তিনটি করে পিচ তৈরি করা হচ্ছে। কোনও পিচেই পর-পর দু’টো ম্যাচ হবে না। যার ফলে পিচ ভেঙে যাওয়া বা মন্থর হয়ে পড়ার আশঙ্কা কম। সূচি অনুযায়ী, দুবাইয়ে ২৪টি ম্যাচ, আবু ধাবিতে ২০টি এবং শারজায় ১২টি ম্যাচ হবে। অর্থাৎ ৫৩ দিনে একটা পিচে সর্বোচ্চ আটটি ম্যাচ খেলা হবে। তাও মোট ৪০ ওভারের। তাই মরুশহরের পিচ সম্পর্কে অভিজ্ঞদের ধারণা, কোনও ভাবেই বাইশ গজ মন্থর হবে না বা স্পিনাররা বাড়তি সুবিধে পাবে না।
আরও জানা গিয়েছে, দুবাই, শারজার পিচের ‘ভিত’টাও খুব মজবুত। প্রথমে পাকিস্তান থেকে মাটি এনে এখানকার পিচ তৈরি হয়েছিল। পরে আইসিসির উদ্যোগে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড থেকেও মাটি নিয়ে আসা হয়। ফলে পিচের বাঁধুনি যথেষ্ট শক্তিশালী। গত বছরই আবার নতুন করে তৈরি হয়েছে শারজার পিচ। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, দুবাই এবং বিশেষ করে শারজার পিচ শান বাঁধানোর মতো চকচকে হবে। ব্যাটসম্যানরা এখানে শাসন করতে পারেন বলেই ধরা হচ্ছে।
আবু ধাবির পিচে সাধারণত বাউন্স বেশি থাকে, পেসাররাও একটু সুবিধে পান। দুবাইয়ে পিচ প্রস্তুতকারকদের এখন প্রধান লক্ষ্য, ঠিক মতো জল দিয়ে যাওয়া। এই মুহূর্তে তিন মরুশহরে দিনের তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। যে কারণে দিনে বেশ কয়েক বার পিচে জল দিতে হচ্ছে।
তবে একটা ব্যাপার কিন্তু স্পিনারদের সামনে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তা হল, রাতের শিশির। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রখর তাপমাত্রার কথা মাথায় রেখে কেউ আপাতত এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। কিন্তু স্থানীয় ক্রিকেট মহল মনে করছে, অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে শিশির স্পিনারদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। কারণ রাতের তাপমাত্রা তখন অনেক কমে যাবে।
দুবাইয়ে ইতিমধ্যে দুটো দিনরাতের টেস্ট হয়ে গিয়েছে। দুটোই অক্টোবর মাসে। যার সঙ্গে জড়িত থাকা এক জন ফোনে বলছিলেন, ‘‘রাতের বেলায় স্পিনাররা বল গ্রিপ করতে সমস্যায় পড়েছে। এই নিয়ে ওরা অভিযোগও করেছিল।’’ শিশির রুখতেও অবশ্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রথাগত রাসায়নিক স্প্রে তো ব্যবহার করা হবেই, পাশাপাশি বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যেও দুবাইয়ের মাঠ শোকানো হবে বলে জানা গেল।
কিন্তু এত গরমের মধ্যে শিশির কী ভাবে? দুবাইয়ে ক্লাব ক্রিকেটের খুব রমরমা। সেই স্থানীয় ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত কেউ কেউ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মরুভূমি বলেই দিনের চেয়ে রাতের তাপমাত্রা হুহু করে কমে যায়। যথেষ্ট ঠান্ডা আবহাওয়া, পরিষ্কার আকাশের কারণে অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে রাতের দিকে ভাল শিশির পড়ে। যা কিন্তু স্পিনারদের বল গ্রিপ করার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করে দিতে পারে।