নজরে: আমিরশাহিতে প্রস্তুতিতে রাসেল। কেকেআর
আইপিএল জনপ্রিয় হওয়ার নেপথ্যে অন্যতম কাণ্ডারি ছিলেন তিনি। ২০০৮ সালে প্রথম আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে তাঁর অপরাজিত ১৫৮ রানের ইনিংস দেখে চমকে গিয়েছিল ক্রিকেটবিশ্ব। কুড়ি ওভারের ম্যাচে কেউ এত রান করতে পারেন, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। সেই ব্রেন্ডন ম্যাকালাম বর্তমানে কলকাতা নাইট রাইডার্সের কোচ।
তাঁর থেকেই ক্রিকেটবিশ্ব শিখেছে, শুরুতে রান তুলে বিপক্ষের উপর কতটা চাপ সৃষ্টি করা যায়। তাই এ বার ব্যাটিং অর্ডারের উপরের দিকে নামানো হতে পারে নাইটদের বিধ্বংসী অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেলকে। গত বার প্রতিযোগিতা জুড়ে একাই ৫৪টি ছক্কা মেরেছিলেন রাসেল। এ বার সেই ছক্কা বৃষ্টি দেখা যেতে পারে ইনিংসের শুরুর দিকেই। নাইটদের ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে শনিবার ম্যাকালাম বলেছেন, ‘‘মর্গ্যান সব সময়ই মিডল অর্ডারে বেশি কার্যকরী। শেষ দশ ওভারের বোলিংয়ের বিরুদ্ধে ওকে আমাদের প্রয়োজন। ওর ব্যাটিং অর্ডারের আশেপাশেই নামবে কার্তিক। ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে রাসেলকে উপরের দিকে নামানো যেতেই পারে। তবে শেষ দশ ওভারে ওর বিধ্বংসী ব্যাটিং কিন্তু অন্যতম আকর্ষণ।’’
গত বারই ব্যাটিং অর্ডারের উপরের দিকে নামতে চেয়েছিলেন রাসেল। তা নিয়ে অধিনায়ক কার্তিকের সঙ্গে মনমালিন্যও হয়। এ বার রাসেলের সেই আশা পূরণ হয় কি না দেখার। ২৩ সেপ্টেম্বর মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই তার আন্দাজ হয়তো পাওয়া যাবে।
বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক মর্গ্যান দলে আসায় ম্যাকালাম যেন আরও স্বস্তিতে। বলছিলেন, ‘‘বর্তমানে সব চেয়ে ভাল মাঝের সারির ব্যাটসম্যান অবশ্যই মর্গ্যান। নেতৃত্বে কার্তিককে সাহায্য করার পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও আমাদের অস্ত্র। শেষ কয়েক বছরে আরও অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছে।’’
প্রশ্ন উঠছিল, তা হলে এ বার শুভমন গিল কোথায় ব্যাট করবেন? কোচ পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, প্রতিযোগিতা জুড়ে উপরের দিকেই নামতে দেখা যাবে তরুণ ব্যাটসম্যানকে। তার সঙ্গেই চমক হয়ে উঠতে পারেন টম ব্যান্টন। কোচের ব্যাখ্যা, ‘‘মাঠের যে কোনও প্রান্তে শট নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ব্যান্টনের মধ্যে। বিপক্ষে কে আছে, তা চিন্তা করে ও ব্যাট করে না। এটাই ওর চমক হয়ে ওঠার মূল কারণ।’’
নাইটদের ভারতীয় পেস বিভাগ অনভিজ্ঞ হলেও তা নিয়ে ভাবছেন না ব্রেন্ডন। কারণ, কমলেশ নগরকোটি, শিবম মাভিরা পাশে পাচ্ছেন প্যাট কামিন্সের মতো তারকাকে। ম্যাকালামের বিশ্বাস, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির তিনটি মাঠের পিচই শুরুতে সাহায্য করবে পেসারদের। তাঁর দলের পেসারদের মধ্যে বেশির ভাগই ১৪০ কিমি প্রতি ঘণ্টার বেশি গতিতে বল করতে পারেন। প্রতিযোগিতা যত এগোবে, ততই কার্যকরী হয়ে উঠবেন স্পিনাররা। সেই বিভাগেও সুনীল নারাইন, কুলদীপ যাদবের মতো তারকা রয়েছে। ম্যাকালাম মনে করেন, বোলিং বিভাগে এই ভারসাম্যই তাঁর দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। কোচের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমাদের পেস বিভাগে ভারতীয় ক্রিকেটারেরা অনভিজ্ঞ হতেই পারে। কিন্তু প্রত্যেকের মধ্যেই ভবিষ্যতের তারকা হয়ে ওঠার ক্ষমতা রয়েছে। বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে কামিন্স সেরা। শুরুর দিকে ওর উইকেট তুলে নেওয়ার ক্ষমতা আমাদের কিন্তু এগিয়ে রাখতে পারে।’’ যোগ করেন, ‘‘পরের দিকের ম্যাচগুলোয় স্পিনাররা সাহায্য পাবে। স্পিন বিভাগেও আমাদের পিছিয়ে রাখা যাবে না। নারাইন তো যে কোনও উইকেটে ভাল বল করতে পারে। কুলদীপও যথেষ্ট কার্যকরী বোলার। বোলিং বিভাগে এই ভারসাম্যটাই চেয়েছিলাম।’’ ত্রিনব্যাগো নাইট রাইডার্সকে চ্যাম্পিয়ন করে এসেছেন সিপিএলে। সেই ছন্দ কি আইপিএলেও ধরে রাখা সম্ভব? কোচ হিসেবে তিনি কি বার্তা দেবেন দলকে? ম্যাকালামের উত্তর, ‘‘পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার পরামর্শ দেব। আমি আগ্রাসী ক্রিকেটার ছিলাম বলেই দলকে সব সময় আগ্রাসন দেখানোর কথা বলতে পারি না। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যেই খেলব। সব কিছু ঠিকঠাক এগোলে কাপ হয়তো আসবে নাইট শিবিরেই।’’