ছবি পিটিআই
ছন্দ ব্যাপারটা খুব খামখেয়ালি এক বন্ধুর মতো। কখন থাকে, কখন চলে যায়, কেউ জানে না। যখন মনে হয় সব কিছু ঠিকঠাক চলছে, তখনই হয়তো সে চলে গেল।২১ অক্টোবর, এই আইপিএলের ৩৯ নম্বর ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ৮৪ রানে আটকে রেখে ৩৯ বল বাকি থাকতে আট উইকেটে জিতে যাই আমরা। ১০ ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের সেটা ছিল সপ্তম জয়। আমরা প্লে-অফে ওঠার একেবারে সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল। আমাদের ব্যাটিং লাইন এবং বোলারদের দিকে তাকিয়ে অন্য দলের এক বন্ধু ক্রিকেটার তো এও বলেছিল, ‘‘এই বছরটা তো আরসিবির দারুণ যাচ্ছে।’’ তখন ছন্দ আমাদের সঙ্গে ছিল। সব কিছু ঠিক হচ্ছিল।
চারটে লিগ ম্যাচ বাকি ছিল আমাদের। তার পরে আমরা চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে আট বল বাকি থাকতে আট উইকেটে হারলাম। তার পরে মুম্বইয়ের কাছে পাঁচ বল বাকি থাকতে পাঁচ উইকেটে হার। পরের ম্যাচে সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদের কাছে ৩৫ বল বাকি থাকতে পাঁচ উইকেটে হারলাম। আর এই সোমবার দিল্লি ক্যাপিটালস ছয় বল বাকি থাকতে ছয় উইকেটে হারাল আমাদের। চার বার আমরা আগে ব্যাট করলাম, চার বারই আমরা হেরে গেলাম।
ছন্দ পুরোপুরি আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছে। কোনও মতে আমরা প্লে-অফে পৌঁছতে পারলাম। কেকেআরের চেয়ে নেট রানরেটে ভগ্নাংশে এগিয়ে থেকে। চারটে টানা হারের পরে এ বার প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি ছন্দটা ফিরে পাব? আমরা কি আর তিনটে ম্যাচ জিতে আইপিএল ট্রফি ঘরে তুলতে পারব? আমার উত্তর হল, অবশ্যই পারব। আমাদের সে ক্ষমতা আছে।
আরও পড়ুন: প্লে অফে কার বিরুদ্ধে কে খেলবে, জেনে নিন
আইপিএলের মতো প্রতিযোগিতায় সব দলই প্রায় সমান শক্তিশালী। যে কোনও দল যে কোনও দিন অন্য কাউকে হারিয়ে দিতে পারে। যখন ফল নিজেদের পক্ষে না থাকে, তখন সব কিছু বদলে ফেলে, নতুন পরিকল্পনা করার একটা ইচ্ছে জন্মায়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, প্রাথমিক পরিকল্পনা মেনে চললেই ফল পাওয়া যায়। প্রয়োজনে দু’একটা ছোটখাটো বদল করা যেতে পারে।
আমাদের এখন সাহসী হতে হবে, ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে প্রতিটা ম্যাচ খেলতে হবে। মাথায় রাখতে হবে, এ বার ভুল করলে আর ফিরে আসার জায়গা নেই। বেঙ্গালুরু এবং বিশ্ব জুড়ে লক্ষ, লক্ষ সমর্থক আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। অনেককেই হয়তো এই অতিমারিতে আতঙ্ক এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে। তাদের সবার মুখে হাসি ফোটাতে হবে আমাদের। এর সঙ্গে আমাদের নিজেদের পরিবারও আছে। যারা প্রায় তিন মাস আমাদের থেকে দূরে আছে। যারা দূরে থেকেই ভাল খেলার জন্য উৎসাহ দিয়ে চলেছে। এদের সবার মুখে হাসি ফোটাতে হবে আমাদের।
দেখা যাক, কী হয়। আমার এখনও কেন জানি না মনে হচ্ছে এই অদ্ভুত বছরটা শেষ পর্যন্ত আরসিবির বছর হিসেবেই শেষ হবে। (টিসিএম)