বাঁশি এখন কোহলীর হাতে। ছবি রয়টার্স
বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জেরে চতুর্থ টেস্টে ইংল্যান্ডকে ১৫৮ রানে হারিয়ে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বিরাট কোহলীর ভারত। সোমবার ইংল্যান্ডকে ২১০ রানে অলআউট করে দেয় ভারত। শেষ দিনে তিনরকম ফলাফলেরই সম্ভাবনা ছিল। সঠিক সময়ে ভারতীয় বোলাররা ঘুরে দাঁড়ালেন। ইংল্যান্ডকে তাদেরই ঘরের মাঠে শাসন করে সিরিজে এগিয়ে গেল ভারত। ২০০৭-এর পর ইংল্যান্ড থেকে সিরিজ হেরে ফিরতে হবে না ভারতকে। বরং ম্যাঞ্চেস্টারে এ বার সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে অনেকটা আত্মবিশ্বাসী হয়ে নামতে পারবেন কোহলীরা।
চতুর্থ দিন যদি ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের পক্ষে যায়, তাহলে সোমবার টেস্টের পঞ্চম দিন ছিল ভারতীয় বোলারদের কাছে নিজেদের প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জ। হার বাঁচাতে হয় ইংল্যান্ডকে গোটা দিন টিকে থাকতে হত, না হলে লক্ষ্যমাত্রার ২৯১ রান তুলতে হত। প্রথম সেশন দেখে মনে হয়েছিল ভারতের কাজটা সহজ হবে না। সকালের সেশনে দু’টি উইকেট পেলেও ক্রিজে জমে গিয়েছিলেন হাসিব হামিদ এবং জো রুট। কিন্তু মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পরেই বদলে গেল খেলা। ভারতীয় বোলাররা ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পরেই হামিদকে তুলে নেন রবীন্দ্র জাডেজা। সোজাসুজি ঢুকে আসা বলের কোনও উত্তর খুঁজে পাননি ভারতীয় বংশোদ্ভুত হামিদ। কিছুক্ষণ পরেই অলি পোপকে ফেরান যশপ্রীত বুমরা। প্রথম ইনিংসে প্রায় শতরান করে ফেলেছিলেন পোপ। দ্বিতীয় ইনিংসে দু’রানেই ফিরতে হল তাঁকে। পোপের পরেই একে একে ফিরে যান জনি বেয়ারস্টো এবং মইন আলি। আধ ঘণ্টায় চার উইকেট তুলে নিয়ে তখন ইংল্যান্ডের উপর দাপাচ্ছেন ভারতীয় বোলাররা।
কিন্তু কাঁটা তখনও ছিল। এই সিরিজে বার বার ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা জো রুট তখনও ক্রিজে ছিলেন। দাঁতে দাঁত চেপে ভারতীয় বোলারদের সামলাচ্ছিলেন। কিন্তু নতুন বল পেতেই সাফল্য। শার্দূলের ভেতরে ঢুকে আসা বলে প্লেড-অন হয়ে গেলেন ইংরেজ অধিনায়ক। এর আগে বার বার একই শট মেরে ভারতীয় বোলারদের বোকা বানিয়েছেন তিনি। কিন্তু সোমবার তাঁর দিন ছিল না। রুট আউট হতেই ইংরেজদের কফিনে যেন শেষ পেরেক পোঁতা হয়ে যায়।
ভারতীয় বোলারদের প্রশংসা করতেই হবে। পঞ্চম দিনের খেলার শুরুতেই দেখা গিয়েছিল পিচে ধুলো উড়ছে। যেন উপমহাদেশীয় উইকেট। স্পিনারদের জন্য আদর্শ বিচরণক্ষেত্র। কিন্তু ভারতীয় দলে জাডেজা ছাড়া আর কোনও স্পিনার নেই। অনেকেই ভাবছিলেন, এই ধরনের পরিস্থিতিতে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের থাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু কোহলী প্রমাণ করে দিলেন, অশ্বিনকে ছাড়াও বিদেশের মাটিতে তাঁরা জেতার ক্ষমতা রাখেন। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভারতের পেসাররা কাজে এলেন।
বুমরা, শার্দূলের দাপটে একসময় কাঁপছিলেন ইংরেজ ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু শেষ বেলায় এসে তিন উইকেট তুলে নিয়ে কোহলীর কাজ সহজ করে দিলেন উমেশ যাদব।