সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ফাইল ছবি
বিবৃতি, সংশোধিত বিবৃতি এবং ব্যাখ্যা। শুক্রবার পঞ্চম টেস্ট শুরুর দিন সকাল থেকে চলল একের পর এক নাটক। সব শেষে জানানো হল, ম্যাঞ্চেস্টারে হতে চলা পঞ্চম টেস্ট বাতিল করা হয়েছে। পরে এই টেস্ট খেলার সময় খোঁজা হবে। ততদিন ভারত সিরিজে ২-১ ব্যবধানেই এগিয়ে থাকবে।
শুক্রবার সকালেই ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, যেখানে লেখা হয়, দল নামাতে না পারার জন্য ম্যাচ ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে ভারত। এই বিবৃতি প্রকাশের পরই তীব্র হইচই শুরু হয়। ভারতীয় শিবিরের তরফে প্রতিবাদ করে জানানো হয়, ম্যাচ ছেড়ে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। তারা এখনও ম্যাচ খেলতে প্রস্তুত। ইসিবি পরক্ষণেই বিবৃতি সংশোধন করে জানায়, কোভিডের কারণে ম্যাঞ্চেস্টারের টেস্ট স্থগিত রাখা হচ্ছে। পরবর্তী কোনও সময় তা খেলা হবে।
শুক্রবার দুপুরের দিকে বিসিসিআই-এর তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে গোটা ঘটনার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। জানানো হয়, দীর্ঘ আলোচনার পর দুই বোর্ডই একসঙ্গে এই টেস্ট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিসিসিআই-এর তরফে ইসিবি-কে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে যাতে আগামী দিনে কোনও একটি সময় খুঁজে বের করে এই ম্যাচ আয়োজন করা যায়। ইসিবি তাতে রাজিও হয়েছে। পাশাপাশি, বোর্ডের বিবৃতিতে আলাদা করে খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের কথা তুলে জানানো হয়, সঙ্গত কারণেই ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে।
প্রথমে ভাবা হয়েছিল পঞ্চম টেস্ট হয়তো একদিন বা দু’দিন পিছিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু সেখানে বিস্তর বাধার মুখোমুখি হতে হয় আয়োজকদের। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ার কথা ছিল পঞ্চম টেস্ট। তারপরের দিনই ভারতীয় শিবিরের বেশিরভাগ সদস্যের উড়ে যাওয়ার কথা ছিল দুবাই। সেখানে গিয়ে আইপিএল-এর দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেবেন তাঁরা। কিন্তু ম্যাঞ্চেস্টার টেস্ট একদিন বা দু’দিন পিছিয়ে গেলে আইপিএল আয়োজনের ক্ষেত্রে তীব্র সমস্যার সম্মুখীন হতে হত।
আইপিএল-এর সব দলই মরুদেশে পৌঁছে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে। সম্প্রচারকারী এবং নিরাপত্তার যাবতীয় ব্যবস্থাও শেষের পথে। এই অবস্থায় পঞ্চম টেস্ট পিছনো হলে তার প্রভাব পড়ত আইপিএল-এ। লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। আইপিএল পিছনোরও কোনও উপায় নেই। কারণ আইপিএল শেষ হওয়ার পরেই শুরু হয়ে যাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
কী করা যায়, তা নিয়ে বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত দু’দেশের প্রশাসনিক কর্তাদের আলোচনা চলে। শুক্রবার সকাল থেকে ফের আলোচনা শুরু হয়। ইসিবি চাইছিল ম্যাচ দু’দিন পিছিয়ে দিতে বা বাতিল করতে। ক্রিকেটারদের সঙ্গে এরপর কথা বলেন বিসিসিআই কর্তারা। বিরাট কোহলীরা জানান, ম্যাচ কোনও ভাবেই ছাড়তে রাজি নন তাঁরা। বরং পরে কোনও এক সময় এই টেস্ট খেলতে হলেও তাঁরা রাজি। বিসিসিআই সেই বার্তা জানিয়ে দেয় ইসিবি-কে। তারাও রাজি হয়ে যায়।
তবে চিন্তা এখনও বাকি। ক্রিকেটারদের বৃহস্পতিবারের পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এলেও, শরীরে উপসর্গ দেখা দিতে দু’দিন থেকে এক সপ্তাহ লাগে। আগামী দিনে কারওর করোনা পজিটিভ হলে কী করা হবে, তা কেউ জানে না।