চাপ মুক্ত হয়ে আম্পায়রিং করাই নিতিন মেননের প্রধান লক্ষ্য। ফাইল চিত্র
গত দুই মাসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় দল যখন নিজেদের মেলে ধরেছে, তখন আরও একজন ভারতীয় নজর কেড়েছেন। তিনি আম্পায়ার নিতিন মেনন। ৩৭ বছরের এই আম্পায়ার সবচেয়ে কম বয়সে আইসিসি এলিট তালিকায় নাম তুলে ইতিমধ্যেই নজির গড়েছেন। যদিও গত বছর জুনে এই স্বীকৃতি পেলেও মাঠে নামলেন গত ফেব্রুয়ারি মাসে। বিরাট কোহলীদের সেই সিরিজের মোট ১০ (৪ টেস্ট, ৩ টি-টোয়েন্টি ও ৩ একদিনের) ম্যাচ সুষ্ঠু ভাবে খেলিয়ে ইতিমধ্যেই সমীহ আদায় করে নিলেন।
পরিবাররে সঙ্গে কিছুদিন কাটিয়ে এ বার আইপিএলের জন্য ফের মাঠে নামবেন নিতিন। তবে তাঁর লক্ষ্য অ্যাসেজ ও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল। যদিও এই উত্থানের জন্য ভারতের প্রাক্তন জোরে বোলার ও বর্তমান আইসিসি ম্যাচ রেফারি জভাগল শ্রীনাথের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন নিতিন। তিনি বলেন, “শ্রীনাথ সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলেছেন। তাই আন্তর্জাতিক ম্যাচে দুই দলের ক্রিকেটাররা আম্পায়ারের উপর কতটা চাপ দিয়ে থাকেন সেটা শ্রীনাথ আমাকে বলেছিলেন। এই বিষয়ে ওঁর সঙ্গে অনেক আলোচনা হয়। ওঁর জন্যই খোলা মনে কাজ করতে পারছি।”
গোটা সিরিজ জুড়ে বিরাট কোহলী কতবার তাঁর দিকে তেড়ে গিয়েছেন সেটা সকলের জানা। যদিও সেই চাপকে পাত্তা দেননি। বরং আপ্লুত নিতিন বলছেন, “আম্পায়ারিং ব্যাপারটা পুরোটাই মনস্তাত্ত্বিক। তাই দুটো দলে কত বড় ক্রিকেটার আছে সেটা মাথায় না রেখে খেলা নিয়ে চিন্তা করা উচিত। একজন আম্পায়ার মাঠে দাঁড়িয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে বাকি কাজটা সহজ হয়ে যায়। আর তাছাড়া গত কয়েক বছরে একাধিক রঞ্জি ট্রফি ম্যাচ খেলিয়েছি। তাই আন্তর্জাতিক ম্যাচে কোনও চাপ অনুভব করিনি। তাছাড়া প্রতি বছর আইপিএলে একনাগাড়ে ১৪-১৫টা ম্যাচ খেলাতে হয়। তাই এই কাজটা আমার কাছে চাপের নয়। বরং উপভোগ করি।”
আধুনিক ক্রিকেটের সঙ্গে প্রযুক্তি জুড়লেও আম্পায়ারদের কাজ নিয়ে সব সময় চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়। পান থেকে চুন খসলেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয় আম্পায়ারদের। তবে এর মধ্যেও নিতিন কিন্তু নিজের কাজ দায়িত্বের সঙ্গে পালন করেছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে গত ১০ ম্যাচে তাঁর দেওয়া ৪০টা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন করেছিল দুটো দল। এর মধ্যে ৩৫ বার নিতিনের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়। ‘আম্পায়ার্স কল’-এর বিরুদ্ধে ২৩ বার আবেদন করলেও লাভ হয়নি। নিতিনের সিদ্ধান্ত ১২ বার সঠিক ছিল। গত দুই মাসে সব ধরণের ক্রিকেটে তিনি ৩৫ বার দুই দলের ব্যাটসম্যানদের এলবিডব্লিউ আউট দেন। এর মধ্যে মাত্র ২ বার তাঁর সিদ্ধান্ত ভুল হয়। তাই ভাগবত চন্দ্রশেখর ও এস রবির পর নিতিন হলেন ভারতের তৃতীয় আম্পায়ার যিনি আইসিসি এলিট তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন।
এহেন নিতিন বলছেন, “গত দুটো মাস দারুণ কাটল। কাজের স্বীকৃতি পেলে বেশি ভাল লাগে। আমার ক্ষেত্রেও সেটাই হল। আসলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আগে ভারত ও ইংল্যান্ড দুটো শক্তিশালী দল মুখোমুখি হলে উত্তেজনা তো বাড়বেই। আমিও সেই উত্তেজনা টের পেয়েছিলাম। তবে মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করে গিয়েছি।”