Sambaran Banerjee

কোহালিদের একাধিক ভুল, হারের কারণ খুঁজে বার করলেন সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

বিরাট কোহালির দলের একটা জোর ঝাঁকুনির দরকার ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২১:০৮
Share:

বিরাটের নেতৃত্বে এবার ঘরের মাঠেও হারল ভারত। ফাইল চিত্র

এত কাল পর্যন্ত শোনা যেত ভারতীয় দল দেশে বাঘ হলেও বিদেশে গুটিয়ে যায়। তবে চেন্নাইতে যেটা ঘটল, সেটা অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। যদিও বাংলার রঞ্জি ট্রফি জয়ী অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন বিরাট কোহালির দলের একটা জোর ঝাঁকুনির দরকার ছিল। জো রুটের ইংল্যান্ডের কাছে ২২৭ রানে হারের নেপথ্যে রয়েছে একাধিক কারণ। আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে হারের কারণগুলো তুলে ধরলেন প্রাক্তন জাতীয় নির্বাচক।

Advertisement

ইংল্যান্ডের দুরন্ত ফিল্ডিং ও ভারতের ২৬টা নো বল: দুটো দলের ফিল্ডিং, ইংল্যান্ডের দারুণ কয়েকটা ক্যাচ নেওয়া এবং টিম ইন্ডিয়ার একাধিক নো বল করা চেন্নাই টেস্ট হারের অন্যতম কারণ। ঋষভ পন্থ, ওয়াশিংটন সুন্দররা সহজ ক্যাচ ফেলেছিল। সেখানে জো রুট, বেন স্টোকস কঠিন ক্যাচগুলো খুব সহজে নিয়েছে। এই ভুল শুধু এবার নয়। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে গত টেস্ট সিরিজেও ভারতীয় ফিল্ডাররা একাধিক ক্যাচ ফেলেছিল। কিন্তু ওই সিরিজে একাধিক সমস্যা নিয়ে খেলার জন্য কেউ সেদিকে নজর দেয়নি। তবে এই সমস্যা এবার প্রকট হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হল ২৬টা নো বল! সেখানে ইংল্যান্ড দুটো ইনিংসে ১টা মাত্র নো বল করেছিল। টেস্টে নো বলে ফ্রি হিট না থাকলেও দলের উপর খারাপ প্রভাব পড়ে। মনোযোগে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটে। তাই দলের ফিল্ডিং কোচ আর শ্রীধরের আরও তৎপর হওয়া উচিত।

টস ফ্যাক্টর ও জো রুটের দ্বিশতরান: টস জেতা কারও হাতে নেই। বেশ মনে আছে ভারতের বিরুদ্ধে গত সিরিজে জো রুট কয়েকবার টস হেরেছিল। সেই টস হারের প্রভাব ম্যাচেও পড়ে। চেন্নাইয়ের এই গরমে টস জেতাটাও বড় ফ্যাক্টর হয়ে গেল। এর সঙ্গে যোগ হল রুটের অনবদ্য ইনিংস। যে ইনিংসের জন্য বিরাটের ভারত একদম তৈরি ছিল না। রুটকে আটকানোর জন্য পরিকল্পনারও অভাব ছিল। আমাদের তিন স্পিনারের বিরুদ্ধে রুট যেভাবে লাগাতার সুইপ করে গেল সেটা দেখে অবাক লাগছে। দ্বিতীয় টেস্টও চেন্নাইতে। রুটকে আটকানোর জন্য রবি শাস্ত্রীকে এখন থেকেই ভাবনাচিন্তা করা উচিত।

Advertisement

অদ্ভুত দল নির্বাচন: কোন যুক্তিতে শাহবাজ নদিম সুযোগ পায় মাথায় আসছে না! দেশের মাঠে পাটা উইকেটে কুলদীপ যাদব বসে থাকবে? ২০১৯ সালে ও সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষবার খেলেছিলে। তারপর থেকে টানা দুই বছর দলের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই টেস্টে অশ্বিন যদি কুলদীপকে পাশে পেত, তাহলে ইংল্যান্ড এত সহজে দাপট দেখাতে পারত না। কিন্তু কোনও অজানা কারণে ওকে সরিয়ে রাখা হচ্ছে, যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।

জেমস অ্যান্ডারসন ও বেন স্টোকস: টেস্টে রবীন্দ্র জাডেজা দলের হয়ে যে কাজটা করে, ইংল্যান্ডের হয়ে সেই একই ভূমিকা পালন করে বেন স্টোকস। প্রথম ইনিংসে ৮২ রানের পর দারুণ ফিল্ডিং ও বোলিং। স্টোকস কিন্তু এই কঠিন পরিবেশেও দারুণ খেল দেখালো। মাঠে ওর উপস্থিতি জো রুটকে সবসময় ভরসা জোগায়। পাশাপাশি এই জয়ের নেপথ্যে জেমস অ্যান্ডারসনেরও বিশাল ভুমিকা রয়েছে। ৩৮ বছর বয়সে এই গরমে খেলা কিন্তু সোজা কথা নয়। এর মধ্যে এটা আবার অ্যান্ডারসনের পঞ্চম ভারত সফর। প্রতিবারই ওকে আরও আক্রমণাত্মক মেজাজে দেখছি। একই ওভারে শুভমন গিল ও অজিঙ্ক রাহানেকে আউট করে ভারতের কাছ থেকে ড্র করার সুযোগও কেড়ে নিল অ্যান্ডারসন। ওটাই এই টেস্টের টার্নিং পয়েন্ট। প্রথম ইনিংসে ও সুবিধা করতে না পারলেও দ্বিতীয় ইনিংসে অ্যান্ডারসন ছিল অনবদ্য।

ভারতের ব্যাটিং ভরাডুবি: ওপেনারদের ব্যর্থতার সঙ্গে যোগ হয়েছে বিরাট ও রাহানের রান না পাওয়া। টেস্ট জিততে হলে কিন্তু ওপেনারদের বড় রান তুলতেই হবে। এটাই প্রধান শর্ত। যদিও আমার মনে হয় রোহিত শর্মা দুই ইনিংসে ব্যর্থ হলেও ওকে আরও সুযোগ দেওয়া হবে। তবে একইসঙ্গে বলে রাখলাম বাকি তিন টেস্টে জিততে হলে কোহালি ও রাহানেকে কিন্তু বড় রান করতেই হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement