ভারতের হয়ে অলিম্পিক্সে জোড়া সোনা এনে দেওয়া দুই ক্রীড়াবিদ যেন দুই মেরুতে।
রিয়ো অলিম্পিক্সে রুপো জয়ের পর টোকিয়োতে ব্রোঞ্জ। পর পর দুটো অলিম্পিক্সে পদক জিতে এই মুহূর্তে ভারতীয় খেলাধুলো’ সব চেয়ে আলোচিত নাম পিভি সিন্ধু। ব্যাডমিন্টনে ভারতকে যে সম্মান এনে দিয়েছেন তিনি, তাতে গর্বিত গোটা দেশ। তবে তাঁর মতো আরও একজনের এই কৃতিত্ব রয়েছে। সুশীল কুমার। কুস্তিতে ভারতকে জোড়া পদক এনে দিয়েছিলেন তিনিও।
ভারতীয় অলিম্পিক্সে ব্যক্তিগত ইভেন্টে দুটো পদক। সংখ্যার বিচারে এগিয়ে তাঁরা। যদিও শুটার অভিনব বিন্দ্রার সোনার পদকের সম্মান আরও বেশি। তিনিই একমাত্র ভারতীয়, যিনি ব্যক্তিগত ইভেন্টে ভারতকে সোনা এনে দিয়েছিলেন। তবে পর পর দুটো অলিম্পিক্সে সাফল্য পাওয়া এবং পদক জিতে ফেরার কৃতিত্বকে ছোট করা যাবে না। ২০০৮ বেজিং অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জেতেন সুশীল। ২০১২ লন্ডন অলিম্পিক্সে জেতেন রুপো।
প্রথম ভারতীয় হিসেবে জোড়া পদক। সাফল্যের শিখরে ছিলেন সুশীল। কিন্তু বিতর্কে জড়িয়ে ধীরে ধীরে তাঁর সাফল্যে কলঙ্কের দাগ লাগতে শুরু করে। এই বছর মে মাসে খুনের দায়ে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তিহাড় জেলে বন্দি তিনি।
ভারতের হয়ে অলিম্পিক্সে জোড়া সোনা এনে দেওয়া দুই ক্রীড়াবিদ যেন দুই মেরুতে। দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন সিন্ধুকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, তাঁর সঙ্গে আইসক্রিম খাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তখন জেলবন্দি সুশীল। রানিকে যখন মুকুট পরাচ্ছে ভারত, রাজা তখন লোহার গরাদের ভিতরে।
সাগর রানা, যিনি সুশীলকে গুরু মানতেন, সেই ২৩ বছরের কুস্তিগীরকে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার সুশীল। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়েও বেড়াতে হয়েছে জোড়া অলিম্পিক্স পদকজয়ীকে। পদকের উজ্জ্বল আলো থেকে বহু দূরে এক অন্ধকার দুনিয়ায় তলিয়ে গেলেন সুশীল।
গ্রেফতারের পর সুশীল কুমার। —ফাইল চিত্র
তবে সিন্ধু পদক জিততেই উঠে এল সুশীলের নাম। এক সময় তিনিও তো দেশের পতাকা উড়িয়েছিলেন অলিম্পিক্সের মঞ্চে। হয়তো সিন্ধুর ব্রোঞ্জ পদক জয়ের ম্যাচ সুশীল দেখেননি। তাঁর দিন কেটেছে হয়তো চার্জশিটের ভাবনায়।
২৬ বছরের সিন্ধু হয়তো আরও একটি অলিম্পিক্সে নামার সুযোগ পাবেন। আরও একটি পদক জয়ের চেষ্টা তিনি করতেই পারেন। সুশীল সেই দৌড়ে নেই।