কৃষ্ণ কুমারের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে সাহায্য করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন অশ্বিন।
অস্ট্রেলিয়া সফরে বর্ণবিদ্বেষের ঘটনা কিছুতেই মন থেকে মুছে ফেলতে পারছেন না রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ফের সরব হলেন তিনি। টিম ইন্ডিয়ার সমর্থক কৃষ্ণ কুমারের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে সাহায্য করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন অশ্বিন। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘‘দারুণ কাজ করেছেন। কৃষ্ণ কুমার আপনার সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করতে পারি?’’
সিডনিতে তৃতীয় টেস্ট চলার সময় শুধু ক্রিকেটাররা নন, এই ভারতীয় সমর্থককেও বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণ করা হয়েছিল। তবে অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকরা নয়, তাঁকে আক্রমণ করেছিলেন মাঠে উপস্থিত থাকা খোদ নিরাপত্তারক্ষীরাই, ঘটনাচক্রে যাঁদের দায়িত্ব ছিল মাঠে বর্ণবিদ্বেষের ঘটনা রোখা। যেন সর্ষের মধ্যে ভূত! গোটা ব্যাপারটি নিয়ে নিউ সাউথ ওয়েলসের পুলিশ এবং সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন কৃষ্ণ কুমার। তাঁর অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে।
এক ওয়েবসাইটে নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে কৃষ্ণ কুমার জানিয়েছেন, ম্যাচের দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং পঞ্চম দিন তিনি খেলা দেখতে গিয়েছিলেন। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দিনে বর্ণবিদ্বেষের ঘটনা দেখার পর পঞ্চম দিনে তিনি চারটি ব্যানার নিয়ে গিয়েছিলেন, যেখানে বর্ণবিদ্বেষের নিন্দা করা হয়েছিল। সেই ব্যানারে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘ক্রিকেটে লড়াই ভাল। তবে বর্ণবিদ্বেষ কাম্য নয়। দয়া করে বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য বন্ধ করুন। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া, আপনারাও খোলা মনে এই ব্যাধি নির্মূল করুন।’’
এরপরেই এক নিরাপত্তারক্ষী এসে তাঁকে মাঠ ছেড়ে চলে যেতে বলেন। কৃষ্ণ কারণ জিজ্ঞাসা করতে চাইলে তিনি বলেন, “যদি তোমাকে এত প্রতিবাদ জানাতে হয়, তাহলে যেখান থেকে এসেছ, সেখানেই ফিরে যাও।” কৃষ্ণ জানিয়েছেন, “খুব ছোট দুটি ব্যানার ছিল। আমার সন্তানের পেপার রোল থেকে বানিয়েছিলাম।” এরপরেই ওই নিরাপত্তারক্ষী তাঁর জুনিয়রদের নির্দেশ দেন কৃষ্ণর যেন কড়া তল্লাশি করা হয়। জুনিয়র নিরাপত্তারক্ষীরা সেই কাজই করেন। কিন্তু কৃষ্ণের অভিযোগ, খারাপ আচরণ করার পাশাপাশি চেঁচিয়ে কথা বলছিলেন ওই নিরাপত্তারক্ষীরা। এক ভারতীয় বংশোদ্ভুত মহিলা নিরাপত্তারক্ষীকে তাঁর সামনে রাখা হয়, যাতে নিজের ভাষায় কোনও কথা বলতে না পারেন। কৃষ্ণ বলেছেন, “মনে হচ্ছিল লোকের সামনে আমাকে নগ্ন করা হচ্ছে। আমি যেন খেলা দেখতে নয়, স্রেফ বর্ণবিদ্বেষের প্রতিবাদ করতেই ওখানে গিয়েছি।” তাঁর সংযোজন, “আমি এর বিচার চাই। কেন আমি বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে পারব না, তা জানতে চাই।”
সেই টেস্টে বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন যশপ্রীত বুমরা ও মহম্মদ সিরাজ। টিম ইন্ডিয়ার দুই ভারতীয় ক্রিকেটারের গুরুতর অভিযোগে যখন ক্রিকেট বিশ্ব উত্তাল, ঠিক তখনই কৃষ্ণ কুমারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। আর তাই অশ্বিন এই সমর্থককে সাহায্য করতে চাইলেন, যা অবশ্যই এক অনন্য নজির তৈরি করল।