অজিদের আগুনে পেস বোলিংয়ের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ চেতেশ্বর পূজারা। ছবি : পিটিআই
‘লড়াকু’ চেতেশ্বর পূজারায় মজে দিলীপ বেঙ্গসরকর। প্রাক্তন রঞ্জি ক্রিকেটার, তথা চেতেশ্বরের বাবা অরবিন্দ পূজারাও ছেলের ‘ইস্পাত কঠিন মানসিকতা’কে কুর্নিশ জানাচ্ছেন।
শেষবার ২০১৮-১৯ মরসুমে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ৫২১ রান। সঙ্গে ছিল ৩টি শতরান ও ১টি অর্ধ-শতরান। সে বার টিমকে ২-১ টেস্ট জেতানোর পাশাপাশি ‘ম্যান অব দ্য সিরিজ’ হয়েছিলেন চেতেশ্বর পূজারা। অধিনায়ক বিরাট কোহালির উপস্থিতির মধ্যেও পেয়েছিলেন ‘চে’ পূজারা উপাধি।
এ বার অবশ্য তিনি সিরিজ সেরা নন। ওঁর ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ২৭১ রান। ৩টি অর্ধ-শতরান। সদ্য সমাপ্ত সিরিজে একাধিকবার কট বিহাইন্ড হয়েছেন। সিডনি টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৫ বলে ৭৭ রান। সেট হয়ে যাওয়ার পরেও জশ হ্যাজেলউড তাঁর স্টাম্প ছিটকে দিয়েছেন। তবুও চেতেশ্বরকে নিয়ে বিন্দুমাত্র বিচলিত নন দিলীপ বেঙ্গসরকর। বরং উচ্ছ্বসিত।
মঙ্গলবার দুপুরে আনন্দবাজার ডিজিটালকে বললেন, ‘‘প্রথম টেস্টের পর বিরাট কোহালি ছিল না। রোহিত শর্মা দলে এলেও ফর্মে নেই। শুভমন দলে ঢোকার আগে ওপেনাররা ধারাবাহিকতা দেখাতে পারছিল না। এত কিছু নেতিবাচক দিকের মধ্যেও ও বুক চিতিয়ে ব্যাট করে গেল। একজন প্রকৃত সিনিয়রের দায়িত্ব পালন করল। তাই ও এ বার কত রান করেছে সেটা বিচার্য নয়। বরং চিন্টুর লড়াকু মনোভাবকে সেলাম জানানো উচিত।’’
আক্ষরিক অর্থে লড়াকু মনোভাব। ব্রিসবেন টেস্টের পঞ্চম দিন পূজারা ক্রিজে আসার পর থেকেই ওঁকে টার্গেট করে ক্রমাগত শর্ট বোলিং শুরু করে অজিরা। হ্যাজেলউডের বলে চেতেশ্বরের ডান হাতের আঙুলে চোট লাগে। ব্যথায় ছটফট করলেও লড়াই ছাড়েননি। একই পেসারের বলে মাথার পিছনে চোট পান। খুলে যায় হেলমেট। তবুও জমি ছাড়েননি। ২১১ বলে ৫৬ রান করে জয়ের ভীত গড়ে দেন। এমন লড়াকু মনোভব দেখে আপ্লুত ভারতীয় ক্রিকেটের কর্নেল। জানিয়ে দিলেন, ‘‘সৌরাষ্ট্রের ক্রিকেটার হলেও ওর মনের ভেতর মুম্বইয়ের ‘খড়ুস’ মানসিকতা রয়েছে। আর সেটাই ওর এগিয়ে যাওয়ার মন্ত্র।’’
গত অস্ট্রেলিয়া সফরে চেতেশ্বর অজি বোলিংয়ের মহড়া নেওয়ার সময় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন ওঁর বাবা অরবিন্দ পূজারা। ব্রিসবেনে টেস্ট জিতে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পর একইরকমভাবে আপ্লুত প্রাক্তন রঞ্জি ক্রিকেটার। গর্বিত বাবা বললেন, ‘‘ইস্পাত কঠিন মানসিকতার জন্যই চিন্টু নিজের আলাদা পরিচিতি তৈরি করেছে। তাই ও এই সিরিজে শতরান না পেলেও চিন্তিত নই। সিনিয়র হিসেবে দলের সেবা করতে পারছে এতেই আমি খুশি।"
টি-টোয়েন্টি ও আইপিএল জগৎ তো বহু দূরের কথা। একদিনের দলেও তাঁকে সুযোগ দেওয়া হয় না। জাতীয় দল টেস্ট খেলতে নামলে তিনিও সাদা জার্সি গায়ে চাপিয়ে মাঠে নেমে পড়েন। নীরবে যুদ্ধ করে যান। প্রকৃত সৈন্যের মতো।