এ বারের বিশ্বকাপের শুরুতে অনেক বিশেষজ্ঞই ইংল্যান্ডকে সম্ভাব্য বিজয়ী বলছিলেন। শুরুও করেছিল ইংল্যান্ড সেই ভাবেই। কিন্তু মাঝে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে হঠাৎ-ই তাঁদের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাওয়া প্রশ্নের মুখে পড়েছিল। যদিও শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে তাঁরা বুঝিয়ে দেয় একদিন খারাপ গেলেও তাঁরা সত্যি বিশ্বকাপের দাবিদার। ফাইনালে অনেকেরই ফেভারিট ইংল্যান্ড। দেখে নেওয়া যাক কারণগুলো।
শুরুতেই ফর্মে থাকা জেসন রয় ও আক্রমণাত্মক জনি বেয়ারস্টো ব্যাট হাতে ম্যাচ নিজেদের দিকে নিয়ে চলে আসতে পারদর্শী। তাঁদের বিধ্বংসী জুটি মনে করাচ্ছে গিলি-হেডেনকে। এই বিশ্বকাপে ১০ ম্যাচে বেয়ারস্টোর রান ৪৯৬ এবং ৭ ম্যাচে জেসন রয়ের ৪২৬ রান তাঁদের ফর্মের প্রমাণ দিচ্ছে।
টেস্ট দলের অধিনায়ক জো রুট একদিনের ক্রিকেটেও রয়েছেন দারুন ফর্মে। ১০ ম্যাচে ৫৪৯ রান করে এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডের সর্বাধিক রান সংগ্রহকারী তিনিই। রোহিত শর্মার ৬৪৮ রান টপকাতে ফাইনালে তাঁকে শতরান করতে হবে।
প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের এই দুরন্ত ফর্ম স্বস্তিতে রাখছে ক্যাপ্টেন মর্গ্যানকে। তিনি নিজেও রয়েছেন বেশ ধ্বংসাত্মক মেজাজে। ১০ ম্যাচে ৩৬২ রান, স্ট্রাইক রেট ১১৬.০২। পরের দিকে নেমে দ্রুত রান তোলার কারিগর তিনি। সেই কাজটাই করে চলেছেন দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে।
বল হাতে দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন জোফ্রা আর্চার। ১০ ম্যাচে নিয়েছেন ১৯ উইকেট। তাঁর দুরন্ত গতির উত্তর অনেক ব্যাটসম্যানই খুঁজে পাচ্ছেন না। ফাইনালে শুরুতেই যদি নিউজিল্যান্ডের অফ ফর্মে থাকা ওপেনারদের ফিরিয়ে দেন জোফ্রা, চাপে পড়ে যাবে কিউয়িরা।
আর্চারকে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছেন মার্ক উড। ইতিমধ্যেই তাঁর শিকার ১৭টি উইকেট। এই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের জোড়া গতি নাভিশ্বাস তুলেছে বহু দলের। ফাইনালেও যে তাঁরা লর্ডসে আগুন ঝড়াবেন, তা বলাই বাহুল্য।
আর্চার ও উডকে দেখে খেলে দিলেও স্বস্তি নেই। কারণ ক্রিস ওকসের গতিও চিন্তায় ফেলার জন্য যথেষ্ট। তাঁরও ইতিমধ্যেই সংগ্রহ ১৩টি উইকেট। তাই চিন্তায় রাখবেন তিনিও।
লর্ডসের পিচে যদি স্পিন ধরে, তা হলে কিন্তু আদিল রশিদ ও মইন আলির আক্রমণও সামলাতে হতে পারে কিউয়িদের। দল বিপদে পড়লে বল হাতে পার্টনারশিপ ভাঙতে এঁরা দু’জনেই বেশ কার্যকরী।
এই ইংল্যান্ড দলের ফিল্ডিংও বেশ ভাল। রুটের হাতেই জমা পড়েছে ১২টি ক্যাচ। উইকেটের পিছনে ভাল ফর্মে জস বাটলারও। তাঁর ১৩টা শিকারের মধ্যে ১১টি ক্যাচ ও ২টি স্টাম্প।
এই ইংল্যান্ড দলের বড় শক্তি তাঁদের ব্যাটিং গভীরতা। ১১ নম্বরে নামা উডও দরকারে ব্যাট হাতে দলকে সাহায্য করতে পারেন। এই মুহূর্তে ইংল্যান্ড যেন ওয়েল অয়েল্ড মেশিন। তারা যে ভাবে অস্ট্রেলিয়াকে ধ্বংস করেছে তাতে ফাইনালেও যে তারা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে তা বলাই যায়।
এ বারে বিশ্বকাপের ফাইনালে যেই জিতুক সে হবে প্রথমবারে জন্য বিশ্বজয়ী। তাই দুই দলের লড়াই ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে বেশ উপভোগ্য হবে। অপেক্ষা আর একদিন।