দক্ষিণ আফ্রিকার পর এ বার ওয়েস্ট ইন্ডিজ বধ। চলতি আইসিসি বিশ্বকাপে ফের বড় জয় ছিনিয়ে নিলেন বাংলার বাঘেরা। টনটনের পিচে প্রাক্তন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ৭ উইকেটে হারালেন শাকিবরা। এই জয়ের অন্যতম কারণগুলি কী কী? দেখে নেওয়া যাক এক নজরে।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেন ঘুমিয়ে পড়েছিল ক্রিস গেলের ব্যাট। শাকিবদের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমে দেখা যাবে গেল-ঝড়, এমনটাই আশা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সমর্থকদের। উল্টে শূন্য রানে ফিরে যান তিনি। ১৩ বল খেলে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মহম্মদ সইফুদ্দিনের বলে খোঁচা দিলেন গেল। উইকেটকিপার মুশফিকুর রহমান ক্যাচ ধরতে ভুল করেননি।
ক্রিস গেলের মতোই একেবারে ব্যর্থ আর এক ক্যারিবিয়ান তারকা আন্দ্রে রাসেল। বাংলাদেশ ম্যাচে তিনি যে পুরোপুরি ফিট নন, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। আইপিলের বিধ্বংসী রাসেলকে সোমবার টনটনে খুঁজে পাওয়া যায়নি। গেলের মতোই আউট হয়েছেন শূন্য রানে।
ক্রিস গেলের পর ক্যারিবিয়ানদের আর এক ওপেনার ইভিন লুইস দলের হাল ধরলেও তাঁকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি দেন শাকিব আল হাসান। শেই হোপের সঙ্গে মিলে ১১৬ রানের পার্টনারশিপের করেন লুইস। তবে ক্রিজে জমে যাওয়ার পর আউট হয়ে যান ব্যক্তিগত ৭০ রানে।
লুইসের মতোই দুরন্ত ব্যাটিং করেছেন শেই হোপ। তাঁর ইনিংসকে ৯৬ রানেই থামিয়ে দেন মুস্তাফিজুর। হোপ আরও কিছু ক্ষণ ক্রিজে টিকে ক্যারিবিয়ানদের ইনিংস নিয়ে অবশ্যই অন্য গল্প লেখা হত।
পাঁচ নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে শিমরন হেটমায়ার এক সময় ঝড় বইয়ে দিয়েছিলেন টনটনে। ২৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। তবে আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আগেই তাঁকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান।
মোক্ষম সময় এক ওভারে ২ উইকেট নিয়ে ক্যারিবিয়ানদের আরও বড় রানের টার্গেট থেকে দূরে সরিয়ে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৩৯.৩ ওভারে ফিরিয়ে দেন বিপজ্জনক হেটমায়ারকে। এর পর ওই ওভারে শেষ বলে ঘরে পাঠান রাসেলকে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্যাপ্টেন জেসন হোল্ডার ম্যাচের পরে বলেছিলেন, ৩২১ রান নয়, সঙ্গে আরও ৪০-৫০ রান প্রয়োজন ছিল তাঁদের। তবে ক্রিজে জমে গিয়েও মোক্ষম সময়ে লুইস, হোপ বা হেটমায়ারের উইকেট হারানোয় ক্যারিবিয়ানদের সে রানের টার্গেট অধরাই থেকে যায়।
৩২১ রানের টার্গেট নিয়ে খেলতে নেমে অযথা টেনশন করেননি বাংলাদেশের ওপেনাররা। ৫৩ বলে ঝকঝকে ৪৮ রান করে শুরুতেই দলকে ছন্দে এনে দেন তামিম ইকবাল। অন্য দিকে, বড়সড় রান না করলেও মাত্র ২৩ বলে ২৯ রান করেন সৌম্য সরকার।
লিটন দাসের দায়িত্বশীল ব্যাটিং দেখার পর অনেকেই বলাবলি করছিলেন, তাঁকে প্রথম এগারোর বাইরে রেখে এত দিন বিশ্বকাপে কেন খেলেছে বাংলাদেশ? শাকিবের সঙ্গে মিলে করেছেন ১৮৯ রান। তাতে লিটনের নিজের অবদান ৬৯ বলে ৯৪ রান।
টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে যেচে তিন নম্বর জায়গাটা চেয়েছিলেন শাকিব আল হাসান। চলতি বিশ্বকাপে তার ফল পাচ্ছে বাংলাদেশ। বল হাতে ২ উইকেট নেওয়ার পর এ বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করলেন তিনি। ৯৯ বল খেলে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে অপরাজিত ১২৪ রানের ইনিংস। বাংলাদেশকে স্মরণীয় জয় উপহার দেওয়া শাকিব ছাড়া এ ম্যাচের সেরা আর কে হবেন!