লড়াকু: অসুস্থতা নিয়েও ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িয়ে ইয়ান। ফাইল চিত্র
ত্বকে ক্যানসার হয়েছে ইয়ান চ্যাপেলের। প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়কের বয়স পচাত্তর। খারাপ খবর নিজেই জানিয়েছেন। সঙ্গে যদিও বলেছেন, পরের মাস থেকে শুরু হতে যাওয়া অ্যাশেজ সিরিজের জন্য টিভি বিশ্লেষকের কাজ করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
১৯৬৪ থেকে ১৯৮০। এই সময়কালে দেশের হয়ে ইয়ান চ্যাপেল ৭৫টি টেস্ট খেলেছেন। ইতিমধ্যেই পাঁচ সপ্তাহ টানা তাঁর ঘাড়, কাঁধ ও বাহুমূলে শক্তি বিকিরণ প্রক্রিয়ায় (রেডিয়েশন) চিকিৎসা হয়েছে।
এক ইংরেজি দৈনিককে তিনি বলেছেন, ‘‘বয়স সত্তর হলে এক ধরনের ভঙ্গুরতা শরীরকে গ্রাস করবেই। তবে আমার মনে হয়, বছরের পর বছর ত্বক-ক্যানসারের সমস্যার সঙ্গে লড়াই করতে করতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। হয়তো তার জন্যই আমার ত্বকে আর কোনও মেলানোমাস টিউমার এখন নেই।’’ জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে প্যাথোলজিক্যাল রিপোর্ট অনুযায়ী তাঁর ত্বকে আর সমস্যা নেই। যে কারণে ১ অগস্ট শুরু হতে যাওয়া প্রথম টেস্ট থেকে তিনি হয়তো টিভিতে বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষকের কাজ করতে পারবেন। অবশ্য রেডিয়েশন চিকিৎসা চলাকালীনও তিনি সব কাজকর্ম করেছেন। যোগ দিয়েছেন পারিবারিক অনুষ্ঠানে। গত সপ্তাহেই যেমন দুই ভাই গ্রেগ (চ্যাপেল) ও ট্রেভরের (চ্যাপেল) সঙ্গে পারিবারিক পুনর্মিলন অনুষ্ঠানে সশরীরে ছিলেন।
ইয়ান চ্যাপেলের টেস্টে রান ৫৩৪৫। ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে শোচনীয় পরিণতির জন্যও তিনি প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন, ‘‘আমার ত্বকে থাকা ক্যানসারের বিষ পুড়িয়ে নির্মূল করা গিয়েছে। এমনিতে সত্তরে পা দেওয়ার পরে আপনি নিজেকে বলতে বাধ্য হবেন যে, হে ঈশ্বর, শেষের সে দিন ক্রমশ আপনার কাছে এগিয়ে আসছে। আমি আমার মা জিয়ান্নেকে দেখেছি। মৃত্যুকে যেন নিজেই আটকে রেখেছিলেন। মা-কে দেখে শিখেছি, আমাকেও মৃত্যুর আগমন রুখতে লড়াই করতে হবে।’’ ইয়ান সঙ্গে আরও বলেছেন, ‘‘চিরতরে চলে যাওয়ার ব্যাপারে আমার কোনও তাড়া নেই। কিন্তু সে যখন আসবে, তখন যেন নিজেকে সুস্থির রাখতে পারি। মনে হয় এখন আমার সেটাই মানসিকতা। যখন সে আসবে তখন বলতেই হবে, এই পৃথিবীতে সুন্দর ভাবে সময় কাটানোর জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছি। যখন রিচি (বেনো) আর টনি (গ্রেগ) চলে গেল, তখনই জানতাম সবার মতো আমারও একদিন সময় আসবে।’’
ইয়ান শুরুতে তাঁর মারণ অসুখে আক্রান্ত হওয়ার খবর খুব বেশি কাউকে বলেননি। সব জানিয়েছেন, চিকিৎসায় সাড়া পাওয়ার পর। ‘‘আগে বেশি লোককে অসুখের কথা বলিনি। কারণ রেডিয়েশন চিকিৎসায় কতটা সুরাহা হবে তা নিয়ে নিশ্চিন্ত ছিলাম না। কিন্তু চিকিৎসায় সাড়া মেলার পরে সবাইকে সব বলেছি। এখন রাতে খুব ক্লান্ত হয়ে পড়ি। ত্বকে জ্বালা ভাবও রয়েছে। এর বাইরে আমি কিন্তু এখন বেশ ভাল আছি,’’ বলেছেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার। যোগ করেছেন, ‘‘পরিবারের সবাইকে ক্যানসারের কথা বলেছি। বলেছি পুরনো সতীর্থদের অনেককেও। অনেকেই নিয়মিত ফোন করছেন। সামনে অ্যাশেজ। আমাকে ডাকা হলে টিভিতে কথা বলতে তৈরিই আছি।’’