ফাইল চিত্র।
এএফসি কাপে বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে হুগো বুমোস হলুদ কার্ড দেখার পরে যে আশঙ্কা এটিকে-মোহনবাগান শিবিরে দেখা গিয়েছিল, তা শেষ পর্যন্ত সত্যি হল! শনিবার মলদ্বীপের দল মাজ়িয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেছেন আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসের দলের মাঝমাঠের প্রধান অস্ত্র। যার অর্থ, বাংলাদেশের দল বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার খেলতে পারবেন না হুগো।
শনিবার ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি বুমোসকে জার্সি ধরে টেনে ফেলে দিয়েছিলেন মাজ়িয়ার রক্ষণভাগের এক খেলোয়াড়। বুমোস উত্তেজিত হয়ে তাঁর দিকে তেড়ে গেলে রেফারি দু’জনকেই হলুদ কার্ড দেখান। টিভিতে সে সময় ফাউলের ঘটনার রিপ্লে দেখানো হচ্ছিল। ফলে দর্শকেরা তাঁকে হলুদ কার্ড দেখানোর মুহূর্ত দেখতে পাননি। প্রীতম কোটালরাও নিশ্চিত ছিলেন না, রেফারি আদৌ তাঁকে কার্ড দেখিয়েছেন কি না। কিন্তু এ দিন সকালে এএফসি-র তরফে এটিকে-মোহনবাগানকে ই-মেল করে জানিয়ে দেওয়া হয়, হুগো বুমোস দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখায় বসুন্ধরার বিরুদ্ধে খেলতে পারবেন না।
এএফসি কাপে রয় কৃষ্ণদের দলের অন্যতম চালিকাশক্তি হলেন এই বুমোস। বসুন্ধরার বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলানোর জন্যই হাবাস মাজ়িয়ার বিরুদ্ধে শুরু থেকে বুমোসকে খেলাননি। প্রথমার্ধে এক গোলে পিছিয়ে যাওয়ার পরে দ্বিতীয়ার্ধে ১-১ হওয়ার পরে শেষ ৩০ মিনিটে তাঁকে মাঠে নামান। তাঁর বাড়ানো বল থেকেই গোল করেন রয় কৃষ্ণ ও মনবীর সিংহ। তার আগে আশুতোষ মেহতার ক্রস থেকে সমতা ফিরিয়েছিলেন লিস্টন কোলাসো।
তবে এই ধাক্কা নিয়ে হাবাস খুব একটা ভাবিত নন। রবিবার পুরো দলকেই ছুটি দিয়েছিলেন স্পেনীয় কোচ। ডেভিড উইলিয়ামসরা সময় কাটান সুইমিং পুল, জিমে। পরে চেনা মেজাজেই হাবাস বলে দিয়েছেন, ‘‘মাজ়িয়ার বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে আমরা পরিকল্পনামাফিক খেলতে পারিনি। উল্টে গোল হজম করতে হয়। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে রণনীতি বদল করার পরেই ম্যাচের রাশ আমাদের হাতে চলে আসে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘আমাদের পয়েন্ট এখন ৬। বসুন্ধরার ৪। ড্র করলেই পরের রাউন্ডে যাবে দল। তবে জেতা ছাড়া অন্য কিছু ভেবে মাঠে নামা যাবে না। বসুন্ধরা বেশ ভাল দল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মলদ্বীপে খুব গরম এই মুহূর্তে। মাঠের মাটি শক্ত। তাই বিশ্রাম দিয়ে ফুটবলারদের খেলাতে হচ্ছে।’’
এ দিকে পর পর দু’ম্যাচে গোল করে দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন ফিজির স্ট্রাইকার রয় কৃষ্ণ। আইএসএলে সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে প্রথম ম্যাচ ও প্রথম ডার্বিতে গত বছর গোল করে নজির গড়েছিলেন। এ বার এএফসি কাপেও প্রথম ম্যাচ ও প্রথম বিদেশি দলের বিরুদ্ধে গোল করেছেন কৃষ্ণ। শনিবার তাঁর একটি গোল শুরুতে বাতিল করেছিলেন রেফারি। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘‘ম্যাচের শুরুতে যে গোলটি অফসাইডের জন্য বাতিল হয়েছে, আমার মতে তা গোল ছিল। তবে রেফারির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তাই গোল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলাম।’’ যোগ করেছেন, ‘‘এটিকে-মোহনবাগানের আক্রমণ ভাগের শক্তি আমরা দেখিয়েছি দ্বিতীয়ার্ধে। গ্রুপের শেষ ম্যাচেও সেই ধারা বজায় থাকবে।’’
আত্মবিশ্বাসী আক্রমণ ভাগের আর এক ফুটবলার মনবীর সিংহ। তাঁর কথায়, ‘‘পিছিয়ে পড়লেও কখনও মনে হয়নি যে জিততে পারব না। প্রথম বার এএফসি কাপে খেলতে এসে গোল করে ভাল
খেলার প্রেরণা পাচ্ছি।’’