চাঞ্চল্য: বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন লাকরা। ফাইল চিত্র।
কুস্তিগির সুশীল কুমারের পরে এ বার সংবাদের শিরোনামে উঠে এলেন ভারতীয় হকি খেলোয়াড় বীরেন্দ্র লাকরা। ছোটবেলার বন্ধুকে খুন করার চক্রান্তে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। এমনই দাবি করেছেন নিহত আনন্দ টোপ্পোর বাবা।
এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ভুবনেশ্বরে একটি ফ্ল্যাটের ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল আনন্দকে। মৃতের বাবা বন্ধন অভিযোগ করেন, একটা সময় ভুবনেশ্বরে ডিএসপি হিসেবে থাকা লাকরা এই হত্যার সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু রাজ্য পুলিশ তাঁকে আড়াল করে চলেছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, চার মাস আগে ছেলের মৃত্যুর তদন্তের জন্য তিনি এফআইআর করেছিলেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করার কোনও উদ্যোগ নেয়নি রাজ্য পুলিশ। বরং তাঁকেঅপমান করা হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বন্ধন বলেছেন, “আমরা এবং বীরেন্দ্র ছিলাম এক ফ্ল্যাটের পাশাপাশি দুই বাসিন্দা। আমার ছেলে আনন্দ ছিল ওর ছোটবেলার বন্ধু। ২৮ ফেব্রুয়ারি বীরেন্দ্র আমাদের ফোন করে জানায় আনন্দ অচৈতন্য হয়ে পড়ে রয়েছে এবং ও আমার ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। পরে ওর মুখ থেকেই জানতে পারি, আনন্দ বেঁচে নেই।”
সেখানেই না থেমে তিনি আরও বলেছেন, “আমরা গোটা ঘটনা জানতে চাইলে ও আমাদের ভুবনেশ্বরে আসার কথা জানায়। পরের দিন সেখানে পৌঁছনোর পরে স্থানীয় পুলিশ জানায়, আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু আত্মহত্যা সংক্রান্ত কোনও নোট ছিল না।” তিনি আরও বলেছেন, “ছেলের দেহ দেখার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল আমাদের। সেই সময়েই লক্ষ্য করি, ওর হাতে এবং ঘাড়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অথচ পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে লেখা হয়েছে, আনন্দ আত্মহত্যা করেছে। তা কী করে সম্ভব, সেটা বুঝতে পারছি না।”
প্রসঙ্গত ৩২ বছরের লাকরা ভারতীয় হকি দলের অন্যতম প্রধান সদস্য, যিনি গত বছর টোকিয়ো অলিম্পিক্সে খেলতে গিয়েছিলেন। এমনকি, গত মাসে এশিয়া কাপে তিনিই ছিলেন ভারতীয় পুরুষ হকি দলের অধিনায়ক। খবরে প্রকাশ, ২৮ ফেব্রুয়ারি ফ্ল্যাটের মধ্যে রাত দশটা নাগাদ মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল আনন্দকে। সেই সময় উপস্থিত ছিলেন লাকরা এবং মনজিৎ টেটেনামক এক মহিলা।
কিন্তু আনন্দের বাবার দাবি, ওই সময় ফ্ল্যাটে উপস্থিত ছিলেন চার জন ব্যক্তি। তাঁরাই মিলিত ভাবে খুন করেছেন আনন্দকে। পুলিশ এখন সেই খুনিকে আড়াল করার চেষ্টা করে চলেছে। তিনি বলেছেন, “শুরুতে আমার এফআইএর নিতে চায়নি পুলিশ। তারা জানায়, এটা নিছক আত্মহত্যার ঘটনা। কয়েক দিন পরে ডিসিপি অফিসে গিয়ে এফআইার করার পরে চার মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। ফলে এখন সংবাদমাধ্যমের সাহায্যচাইছি আমরা।”
তিনি বলেছেন, “ভুবনেশ্বর পুলিশের প্রতি কোনও আস্থা নেই আমাদের। ছেলের মৃত্যুর বিচার চাই। পুলিশ লাকরাকে বাঁচানো চেষ্টা করছে। তাই এই বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।” এমনও শোনা গিয়েছে, ত্রিকোণ প্রেমের পরিণতিতে মৃত্যু হয়েছে আনন্দের। তাঁর বাবার কথায়, “১৬ ফেব্রুয়ারি ছেলের বিয়ে হয়েছিল। ২৮ ফেব্রুয়ারি সে মারা গেল। এটা মানতেই পারছি না।” তা হলে কি ধরা যেতে পারে, মনজিৎ নামক সেই মহিলার সঙ্গে আনন্দের কোনও ধরনের গোপন সম্পর্ক ছিল? তা নিয়ে বন্ধন কোনও স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেছেন, “এটুকু জানি, ভুবনেশ্বরে ওরা এক সঙ্গে পড়াশোনা করত। তার বাইরে ও আমাদের কিছুই বলেনি।”
প্রয়াত বারিন্দর : অলিম্পিয়ান এবং বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় হকি দলের অন্যতম সদস্য বারিন্দর সিংহের জীবনাবসান হয়েছে মঙ্গলবার। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। এ ছাড়া তিনি দেশের হয়ে দু’টি এশিয়ান গেমসেও খেলেছিলেন। ২০০৭ সালে পেয়েছিলেন ধ্যানচাঁদ আজীবনের সম্মান। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে হকি ইন্ডিয়া।