Gymnast

Jayeeta Malik: বিশ্ব স্কুল স্পোর্টসে বাংলার জয়িতা, দারিদ্রকে হারানো জিমন্যাস্টের লক্ষ্য পদক

ভোর চারটেয় জয়িতাকে সাইকেলে বাঁশবেড়িয়ায় অনুশীলন করাতে নিয়ে যান জয়ন্ত মালিক। আবার নিয়ে যান বিকাল পাঁচটায়। মেয়ের অনুশীলনে খামতি রাখতে দেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২২ ১৯:৩৩
Share:

জয়িতা মালিক। নিজস্ব চিত্র।

আগামী ১৪ মে থেকে ২২ মে (আইএসএফ জিমনাসিয়াড) বিশ্ব স্কুল স্পোর্টস হবে ফ্রান্সে। ভারতের ১৩ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করবে। তাদের মধ্যে রয়েছে বাংলার জিমন্যাস্ট জয়িতা মালিক। হুগলি জেলার চুঁচুড়ার চকবাজার তিন নম্বর সোনাটুলীর বাসিন্দা জয়ন্ত মালিকের মেয়ে জয়িতা। হুগলি গার্লস স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী সে।

জয়ন্ত বাবু মেলায় প্লাস্টিকের খেলনা বিক্রি করেন। পাশাপাশি চকবাজার পোস্ট অফিসে প্রতিদিনের রোজে মজুরের কাজ করেন। জয়ন্তবাবু তাঁর স্ত্রী সুমিতা মালিকের গয়না বন্ধক দিয়ে এবং আত্মীয়দের থেকে ঋণ নিয়ে মেয়ের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করছেন।

Advertisement

চার বছর বয়স থেকেই জয়িতার খেলায় ঝোঁক। আগ্রহ দেখে মেয়েকে জিমন্যাস্টিক্সে ভর্তি করেন জয়ন্তবাবু। মেয়ের স্বপ্নপূরণের জন্য নিজের কাজে অসুবিধা সত্ত্বেও হাল ছাড়েননি। যদিও ফেরাতে পারেননি সংসারের আর্থিক হাল।

জয়িতার মা সুমিতা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সহায়িকার কাজ করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মেয়েকে ছোটবেলা থেকেই খেলায় উৎসাহ দিয়েছে ওর বাবা। ভোর চারটেয় উঠে মেয়েকে সাইকেল করে বাঁশবেড়িয়ায় অনুশীলন করাতে নিয়ে যায়। আবার নিয়ে যায় বিকাল পাঁচটায়। দু’বেলার অনুশীলনে যাতে কোনও খামতি না থাকে, সেই চেষ্টাই সব সময় করে ওর বাবা।’’

Advertisement

জয়ন্তবাবু বলেছেন, ‘‘আমি পোলিয়ো আক্রান্ত হয়েছিলাম। তাই দুই ছেলে মেয়েকে খেলাধূলা করাচ্ছি। যাতে ওরা বড় হয় নাম করে। মেলায় খেলনা বিক্রির সামান্য আয় দিয়েই চালিয়ে যাচ্ছি। মেয়ের পাসপোর্ট হয়ে গিয়েছে। ভিসার আবেদন করা হয়েছে। ধার করে এখনও আড়াই লাখ টাকা দিয়েছি। আরও কিছু টাকা লাগবে। জানি না কী করে সে টাকার ব্যবস্থা করব। মেয়ে ফ্রান্সে ভাল ফল করুক, এটুকুই শুধু চাই।

অলিম্পিয়ান দীপা কর্মকারের ভক্ত জয়িতা বলছে, ‘‘কঠোর অনুশীলন করেছি। বাবা-মার কষ্ট লাঘবের সঙ্গে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে চাই। সেরাটা দিতেই হবে আমাকে। খেলার পাশাপাশি পড়াশোনাও করছি মন দিয়ে।’’

ফ্রান্সের বিশ্ব স্কুল স্পোর্টসের জন্য মেয়ে ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ায় খুশি জয়ন্তবাবু এবং সুমিতা দেবী। কিন্তু আড়াই লাখ টাকার ব্যবস্থা করতে গিয়ে হিমশিম খেয়েছেন তাঁরা। জয়িতার মা বলেছেন, ‘‘আমার যেটুকু গয়না আছে সেগুলো বন্ধক দিয়েছি। ধার-দেনা করে কিছু টাকার ব্যবস্থা হয়েছে। আমরা কোনও সাহায্য পাইনি। তাঁদের কষ্ট লাঘব হোক না হোক, মেয়ের সাফল্যের জন্য প্রার্থনা করছেন বাবা-মা। তাতে যদি মেলে কিছু সাহায্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement