গৌরমাঙ্গি সিংহ ও তার সহধর্মিনী পুষ্পাঞ্জলি পতসাংবাম।—ছবি সংগৃহীত।
ভারতীয় ফুটবল দলের জার্সি গায়ে তিনি খেলেছেন দীর্ঘদিন। প্রতিনিধিত্ব করেছেন নেহরু কাপ ও এএফসি এশিয়া কাপেও। ২০১০ সালে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের বিচারে বর্ষসেরা ফুটবলার মণিপুরের গৌরমাঙ্গি সিংহ সে সব ভুলে আপাতত গর্বিত স্ত্রীকে নিয়ে।
বিশ্বজুড়ে এই অতিমারির সময়ে গৌরমাঙ্গি গর্বিত অসহায় ভারতবাসীদের পরিষেবায় তাঁর পরিবারের নাম জড়িয়ে যাওয়ায়। যা সম্ভব হয়েছে তাঁর স্ত্রীর পরিশ্রম ও দক্ষতায়।
কী ঘটনা? গৌরমাঙ্গির সহধর্মিনী পুষ্পাঞ্জলি পতসাংবাম এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানচালক। অসমসাহসী এই মহিলা পাইলট গত চার মাসে করোনার অতিমারিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে থাকা অসহায় ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপদে উড়িয়ে এনেছেন দেশে। তাঁর পরিবারের সদস্যের এই কাজেই গর্বিত জাতীয় দলের এই প্রাক্তন ফুটবলার।
গত চার মাসে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়নি তাঁর। কারণ পুষ্পাঞ্জলি সে সময় ব্যস্ত ছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিমান চালিয়ে ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনতে। ভারত সরকারের ‘বন্দেভারত’ মিশনের একজন দক্ষ সৈনিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন গৌরমাঙ্গি-পত্নী। গত ১১ বছর ধরেই পুষ্পাঞ্জলি নিযুক্ত বিমান চালনার কাজে।
অতিমারির জেরে দেশের এই মহাবিপদে জীবন বিপন্ন করে তাঁর স্ত্রীর এই কাজ সম্পর্কে সংবাদ সংস্থার কাছে প্রাক্তন এই ডিফেন্ডারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দেশের এই বিপদে নিজের পরিবারের কোনও সদস্য এ রকম সাহসী কাজ করলে কার না ভাল লাগবে? আমারও দারুণ লাগছে। কাজটা নিঃসন্দেহে কঠিন ও পরিশ্রমসাপেক্ষ। আর স্ত্রীর জন্য চিন্তা হয়নি বললে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হবে।’’
৩৪ বছর বয়সি এই ফুটবলার যোগ করেন, ‘‘আমার স্ত্রী আন্তর্জাতিক উড়ানেই ডিউটি করে। গত সপ্তাহেই তো লাগোসে (নাইজিরিয়া) আটকে থাকা ভারতীয়দের উড়িয়ে নিয়ে এল।’’ উল্লেখ্য, প্রতিটি আন্তর্জাতিক উড়ানের আগে চালক-সহ বিমানের সব কর্মীর তিন বার করোনা-পরীক্ষা করতে হয়। যে সম্পর্কে গৌরমাঙ্গি বলছেন, ‘‘কাজটা কঠিন। তার উপরে মারণ এই ভাইরাস সংক্রমণের ভয় তো রয়েছেই। আমার স্ত্রী ও তাঁর সহকর্মীদের কুর্নিশ জানাচ্ছি। চিকিৎসক ও নার্সদের মতোই করোনা অতিমারির বিরুদ্ধে সামনে থেকে কাজ করছেন ওঁরা।’’ যোগ করছেন, ‘‘আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি উড়ে যাব। আমার স্ত্রীও সেখানেই কাজের সূত্রে থাকে। দিল্লিই এখন আমার দ্বিতীয় বাড়ি।’’