বিরাট কোহালির হাতে কি উঠবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ? নাকি শেষবেলায় বাজিমাত করবে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড? নাকি উঠে আসবে অন্য কোনও দাবিদার? ক্রিকেটমহলে এই প্রশ্নগুলোই হয়তো ঘোরাফেরা করত করোনা-পরিস্থিতি না এলে। এখন বরং চলছে অন্য চর্চা। বৃহস্পতিবার আইসিসি-র গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে। টেলিকনফারেন্স সেই বৈঠকেই ২০২০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়ার ব্যাপারে জরুরি ঘোষণা হতে পারে।
আসলে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ও নিজেদের সীমান্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া। এর পরে শেন ওয়ার্নদের দেশে গেলে সেখানে থাকতে হবে কোয়রান্টিনে। এই পরিস্থিতিতে বছরের শেষে ১৬ দলের বিশ্বকাপ আয়োজন করা কঠিন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে।
বাস্তব পরিস্থিতিতে তাই পিছিয়ে যেতেই পারে ২০২০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় বল গড়ানোর কথা ছিল এই প্রতিযোগিতার। কিন্তু করোনাভাইরাসের জন্য উদ্ভুত পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট সময়ে তা হওয়া সম্ভব নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। আর তার ফলেই জল্পনা তৈরি হয়েছে যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পিছিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে।
এখন প্রশ্ন হল, এ বারের টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যদি পিছিয়েই যায়, তা হলে কবে আয়োজন করা হবে এই প্রতিযোগিতার? কারণ, ২০২১ সালেই রয়েছে আরও একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। যা বছরের শেষে হওয়ার কথা ভারতে। তবে তা নিয়েও রয়েছে জলঘোলা।
কর-মকুব না হলে প্রতিযোগিতা অন্যত্র সরানো হতে পারে বলে বিসিসিআই-কে হুমকি দিয়েছে আইসিসি। যা আবার চাপে ফেলেছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডকে। সময় চেয়েছে বিসিসিআই। কিন্তু আইসিসি কর-মকুব নিয়ে কতটা দেরি করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে।
শুধু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নয়, ২০২১ সালে রয়েছে আইপিএলের আসরও। তাই আরও একটা কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপ হলে অতিরিক্ত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আবার দর্শকদের বিরক্তির কারণ হবে না তো? আইসিসি-র বৈঠকে এই প্রশ্নেরও উত্তর খোঁজা হতে পারে।
২০২০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অবশ্য ফেলা হতেই পারে ২০২২ সালে। কারণ সেই বছরটাই অস্ট্রেলিয়ার জন্য আদর্শ সময় হতে পারে। ২০২২ সালে আইসিসি-র কোনও ইভেন্ট নেই। আইসিসি-র মিটিংয়ে জোর আলোচনা হতে পারে ২০২২ সালের সম্ভাব্য দিনক্ষণ নিয়ে।
চলতি বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যদি পিছিয়ে যায় তা হলে ভাগ্য খুলে যেতে পারে আইপিএলের। সেক্ষেত্রে অক্টোবরের উইন্ডোতে আইপিএল হতেই পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আইসিসি-র এক বোর্ড মেম্বার জানিয়েছেন, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পিছিয়ে যাওয়ার ভাল সম্ভাবনা রয়েছে আইসিসি-র বোর্ড মিটিংয়ে। তবে সেটা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা হবে কি না, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত করে এখনই বলা যাচ্ছে না।’’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর পিছিয়ে গেলে আইসিসি-র বোর্ড মিটিংয়ে দ্বিপাক্ষিক সিরিজের উপরে জোর দেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে বছরের শেষে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল ভারতের। করোনা-অতিমারির জন্য যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ করাও লক্ষ্য আইসিসি-র।
শুধুমাত্র বোর্ড মেম্বার নয়, সম্প্রচারকারী চ্যানেলকে নিয়েও আলোচনা হতে পারে আইসিসি-র বৈঠকে। কারণ সামনে রয়েছে ভরা ক্রিকেট মরসুম। ২০২১ সালে ভারতের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়ার কথা রয়েছে। পরের বছরের আইপিএল হওয়ার কথা মার্চ থেকে মে, এই সময়ে।
মাথায় রাখতে হচ্ছে যে এ বছরই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ না হলে অক্টোবরেই হতে পারে আইপিএল। সেক্ষেত্রে পরের আইপিএলের আগে ফেব্রুয়ারি-মার্চে হতে পারে টি-টোয়েন্ট বিশ্বকাপ। কিন্তু, দুই আইপিএলের ফাঁকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হলে তা সম্প্রচার করার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা আছে কি না সেই সব দিকও আলোচনা হতে পারে আইসিসি-র বৈঠকে
এ বছর যদি আইপিএলের বল গড়ায়, তা হলে কতগুলো বিষয় নিয়েও আলোচনার রয়েছে। ফাঁকা স্টেডিয়ামে আইপিএলের ম্যাচগুলো হবে নাকি নির্দিষ্ট সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতিতে আইপিএল হবে তা নিয়েও আলোচনা হবে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সঙ্গে।
এগুলোর সঙ্গে আরও দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে আইসিসি-র বৈঠকে। আইসিসির নতুন চেয়ারম্যানের মনোনয়ন পত্র গ্রহণ ও জমা দেওয়ার শেষ তারিখ এবং নির্বাচনের দিনক্ষণ স্থির করা নিয়ে আলোচনা হতে পারে আইসিসি-র বৈঠকে।