রাফায়েল নাদাল। ছবি: রয়টার্স
রাফায়েল নাদাল। ফরাসি ওপেনের লাল সুরকির কোর্টে তিনি সম্রাট। ফাইনালে দর্শকদের সর্বক্ষণ তাঁর নামে জয়ধ্বনি। সেই চিৎকার এতটাই বেশি যে, আম্পায়ারকে বার বার বলতে হল, “মারসি”। বাংলায় যার অর্থ, “ধন্যবাদ”। ম্যাচের সময় দর্শকদের থামতে বলছিলেন তিনি। দর্শকরা থামলেও নাদাল থামলেন না। তাঁর হুঙ্কার চলল। ফাইনাল জেতা পর্যন্ত লাল সুরকির কোর্টে রাজত্ব করলেন নাদাল।
প্রথম বার কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনাল খেলছিলেন ক্যাসপার রুদ। তাঁর দেশ নরওয়ের কোনও টেনিস খেলোয়াড়ের এমন কীর্তি নেই। তাঁর বাবা ক্রিশ্চিয়ান রুদ ছিলেন নরওয়ের সেরা খেলোয়াড়। বাবাকে ছাপিয়ে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু যাঁকে দেখে তাঁর টেনিস খেলা শুরু, সেই নাদালের বিরুদ্ধেই খেললেন প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল। খেললেন, কিন্তু জিততে পারলেন না ২৩ বছরের রুদ।
কোয়ার্টার ফাইনালে নোভাক জোকোভিচ এবং সেমিফাইনালে অ্যালেক্সান্ডার জেরেভ চাইছিলেন নাদালকে নেটের কাছে টেনে আনতে। দু’জনেই হেরেছিলেন। সেই ভুল করতে চাননি রুদ। প্রথম সেটে নাদালকে বেসলাইনে রাখতে চাইছিলেন তিনি। কিন্তু নাদালের ফোরহ্যান্ডের দাপট সামলাতে পারছিলেন না। ৬-৩ ব্যবধানে সেট জিতে নেন নাদাল। সময় নেন মাত্র ৫২ মিনিট।
কাকতালীয় হলেও সত্যি, পরের সেট জিততেও নাদাল নিলেন ৫২ মিনিট। সেই সেটের ফলও ৬-৩। তবে এই সেটে নাদাল পিছিয়ে ছিলেন ১-৩ গেমে। সেখান থেকে সেট জিতলেন ৬-৩। এ ভাবেও ফিরে আসা যায়! রুদ এ বার নেটের কাছে টেনে আনতে চাইছিলেন নাদালকে। যে ভুল জোকোভিচরা করেছিলেন, সেই ভুলে জেনেশুনে পা দিলেন রুদ। তাঁকে নাস্তানাবুদ করলেন নাদাল।
আর তৃতীয় সেট? ওটা নাদালেরই। রুদকে দাঁড়াতেই দিলেন না। ৬-০ গেমে হারিয়ে স্ট্রেট সেটে জিতে নিলেন ফরাসি ওপেন। ১৪ বারের মধ্যে সাত বার স্ট্রেট সেটে ফরাসি ওপেন জিতলেন নাদাল।
নাদাল, নাদাল, নাদাল। চিৎকার চলল। ম্যাচের শুরুতে। ম্যাচের মাঝে। নাদাল ট্রফি নেওয়ার সময়। যে নাদালের মূর্তি রয়েছে রোলাঁ গারোজের বাইরে, সেই নাদাল নিজের মূর্তির চেয়েও বড় হয়ে উঠলেন। ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতলেন নাদাল।
লাল সুরকির সম্রাট কি এখন টেনিস বিশ্বেরও রাজা?