Paris Olympics 2024

ফ্রান্সে ত্রিশঙ্কু পার্লামেন্ট, অলিম্পিক্স শুরুর ১৭ দিন আগে উদ্বেগে উদ্যোক্তারা, তাকিয়ে প্রেসিডেন্ট মাকরঁর দিকে

সব কিছু ঠিকঠাক এগোচ্ছিল। গোল পাকিয়েছে ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচন। ফলাফল দেখে ইস্তফা দেওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী আটাল। তাতেই মাথায় হাত অলিম্পিক্স আয়োজকদের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৪ ১৬:১৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

প্রস্তুতি চূড়ান্ত। বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়েরা পৌঁছতে শুরু করেছেন প্যারিসে। ২৬ জুলাই অলিম্পিক্সের উদ্বোধন। হাতে মাত্র কয়েক দিন। কিন্তু এখনও অলিম্পিক্সের উদ্বোধন কে করবেন, চূড়ান্ত করতে পারছেন না আয়োজকেরা। দেশের পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর ত্রিশঙ্কু পরিস্থিতি উদ্বেগে রেখেছে অলিম্পিক্স আয়োজক কমিটিকে।

Advertisement

প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁর দল রেনেসাঁ পার্টির নেতৃত্বাধীন এনসেম্বল জোট রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। পার্লামেন্ট নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে আসন সংখ্যায় শীর্ষে চলে আসছে বামপন্থী দলগুলির জোট ‘নিউ পপুলার ফ্রন্ট’। সেই জোটও সরকার গঠনের জাদু সংখ্যা ২৮৯ থেকে অনেক দূরে। এই পরিস্থিতিতে মাকরঁর দলের প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আটাল ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত তদারকি সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কাজ চালাতে চান তিনি। প্রেসিডেন্ট মাকরঁ এখনও মুখ খোলেননি। তাতেই সমস্যায় পড়েছেন অলিম্পিক্স আয়োজকেরা।

প্রাথমিক ভাবে ঠিক ছিল, গেমসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী আটাল। কিন্তু তিনি ইস্তফা দিতে চাওয়ায় তৈরি হয়েছে সমস্যা। তদারকি সরকারের প্রধানমন্ত্রীর হাতে অলিম্পিক্সের মতো গেমসের উদ্বোধন করাতে চাইছেন না আয়োজকেরা। ২৬ জুলাইয়ের আগে ফ্রান্স নতুন প্রধানমন্ত্রী পেয়ে গেলে ভাল। তেমন সম্ভাবনা এখনও দেখা যাচ্ছে না। নতুন সরকার গঠনের জন্য কোনও জোটই অন্য কোনও জোটকে সমর্থনের কথা জানায়নি। আবার একক ভাবে সরকার গঠন করতে পারবে না কোনও জোট। বল এখন মাকরঁর কোর্টে। তিনি ধীরে চলো নীতি নিয়েছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট আটালকে প্রধানমন্ত্রী রেখে কাজ চালিয়ে যেতে চাইলে সমস্যা মিটবে না অলিম্পিক্স আয়োজকদের। ফ্রান্স প্রশাসনে প্রধানমন্ত্রীর পর গুরুত্বপূর্ণ পদ অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রীর। উদ্বোধক হিসাবে তাঁর কথাও ভাবা হচ্ছে। তবু নজর রাখা হচ্ছে মাকরঁর সিদ্ধান্তের দিকে। রয়েছে প্রশাসনিক স্তরে অস্থিরতার উদ্বেগও। অলিম্পিক্সের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হলে সংশ্লিষ্টেরা কতটা অলিম্পিক্সের জন্য সময় দিতে পারবেন, তা নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আবার নতুন সরকার এসে সংশ্লিষ্ট কোনও আধিকারিককে দায়িত্ব থেকে সরিয়েও দিতে পারে। কেউ কেউ আবার মনে করছেন, অলিম্পিক্সের সময় রাজনৈতিক অস্থিরতা বজায় থাকলে, বিশ্বের সামনে ফ্রান্সের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

Advertisement

অলিম্পিক্সের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দায়িত্বে রয়েছেন ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন। তিনি বলেছেন, ‘‘সব প্রস্তুতি শেষ। অলিম্পিক্স শুরুর অপেক্ষায় রয়েছি আমরা। গোটা বিশ্বকে স্বাগত জানাচ্ছি।’’ ফ্রান্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া বিভাগের অধ্যাপক পল দিয়েশি বলেছেন, ‘‘অলিম্পিক্সের মতো গেমসের আয়োজকদের মূল উদ্বেগ থাকে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা, অপরাধ, সন্ত্রাসবাদ, যান চলাচল ব্যবস্থার মতো বিষয়গুলি নিয়ে। এ বার নতুন একটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। যার সহজ সমাধান নেই। প্রায় সবটাই নির্ভর করছে মাকরঁর সিদ্ধান্তের উপর। আয়োজকদের একটু ধৈর্য্য ধরতেই হবে।’’

আয়োজকেরা আশাবাদী। অলিম্পিক্স আয়োজনের সঙ্গে দেশের সম্মান জড়িয়ে। তাই প্রেসিডেন্ট এবং রাজনৈতিক নেতারা বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবেন বলে মনে করছেন তাঁরা। এখনই গেমসের উদ্বোধক হিসাবে কাউকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা ভাবা হচ্ছে না। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তেমন হলে প্রেসিডেন্টকে গেমস উদ্বোধন করার জন্য অনুরোধ করা হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement