ডার্বির উন্মাদনা। —ফাইল চিত্র
শনিবার এই মরসুমের প্রথম ডার্বি। মুখোমুখি মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ও ইস্টবেঙ্গল। মরসুম শুরুর অনেক আগেই নিজেদের দল গুছিয়ে নিয়েছে মোহনবাগান। প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে তারা। ইস্টবেঙ্গল কিছুটা দেরিতে শুরু করলেও শেষ দিকে দল যতটা সম্ভব গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। ফুটবলে বলা হয়, মাঝমাঠের দখল যার, খেলার দখল তার। সেই কারণে প্রতিটি দলই চায় মাঝমাঠের দখল নিতে। যাতে নিজেদের মধ্যে বল ধরে খেলা যায়।
মরসুমের প্রথম ডার্বির আগে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে মাঝমাঠের নিরিখে কোন দল এগিয়ে তা দেখে নেওয়া যাক।
মোহনবাগান
দলের মাঝমাঠের প্রধান ফুটবলার হুগো বুমোস এই মরসুমেও রয়েছেন। তাঁর দলবদলের জল্পনা শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত সবুজ-মেরুনেই থেকে গিয়েছেন তিনি। এখন ভারতীয় ফুটবলে যত বিদেশি মিডফিল্ডার রয়েছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম সেরা বুমোস। ভারতীয় ফুটবলে দীর্ঘ দিন ধরে খেলছেন। যেমন ডিফেন্স চেরা পাস বাড়াতে পারেন, তেমনই গোল করতে পারেন। এ বার ডুরান্ডে একটি গোল হয়েও গিয়েছে তাঁর।
এই মরসুমে বুমোস পাশে পাবেন অনিরুদ্ধ থাপাকে। ইগর স্তিমাচের ভারতীয় দলেও মাঝমাঠে খেলেন থাপা। মাঝমাঠকে আরও শক্তিশালী করতেই তাঁকে দলে নিয়েছে বাগান। এই দু’জন ডার্বিতে দলের খেলা পরিচালনা করবেন।
দলের দুই উইঙ্গারের ভূমিকায় দেখা যাবে লিস্টন কোলাসো ও সাহাল আব্দুল সামাদকে। লিস্টন এই মরসুমে ছন্দে রয়েছেন। ডুরান্ডের প্রথম দুই ম্যাচে সেটা দেখা গিয়েছে। বাঁ প্রান্ত ধরে আক্রমণের দায়িত্ব থাকবে তাঁর হাতে। গোলও করতে পারেন। ডান প্রান্তে থাকবেন সাহাল। ভারতীয় দলের আরও এক তরুণ ফুটবলার। তিনিও জাতীয় দলে নিয়মিত।
এ ছাড়া আশিক কুরুনিয়ানও রয়েছেন দলে। লিস্টন এত ভাল খেলছেন যে আশিক সুযোগ পাচ্ছেন না। তবে পরিবর্ত হিসাবে তাঁকে দেখা যেতে পারে। চার মিডফিল্ডারের ঠিক পিছনে ব্লকার হিসাবে খেলানো হতে পারে গ্লেন মার্টিন্সকে।
ইস্টবেঙ্গল
মোহনবাগানের তুলনায় ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠ অনেকটাই অপরীক্ষিত। বেশির ভাগই নতুন ফুটবলার। স্পেনের সাউল ক্রেসপোকে এ বার নেওয়া হয়েছে। একটি ম্যাচেই তিনি খেলেছেন। পেনাল্টি থেকে গোলও করেছেন। কিন্তু ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে এখনও পরিচিত নন তিনি। বাকি ফুটবলারদের সঙ্গে তাঁর কতটা বোঝাপড়া হয়েছে তা ম্যাচের দিন বোঝা যাবে।
গত বার থেকে লাল-হলুদে খেলছেন শৌভিক চক্রবর্তী। কলকাতার পরিচিত মুখ। মোহনবাগানেও দীর্ঘ দিন খেলেছেন। ডার্বি খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু শৌভিক আর আগের ছন্দে নেই। ফলে তিনি কতটা ওয়ার্কলোড নিতে পারবেন তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
বাঁ প্রান্তে দেখা যাবে মহেশ নাওরেম সিংহকে। লাল-হলুদের এই দলের অন্যতম সেরা ফুটবলার। ভাল গতি রয়েছে। মাপা ক্রস দিতে পারেন। আবার গোল করতেও পারেন। নাওরেম কতটা সাবলীল খেলতে পারেন তার উপরেই ইস্টবেঙ্গলের সাফল্য নির্ভর করছে। বাকিদের থেকে সাহায্য না পেলে কিন্তু নাওরেমের একার পক্ষে সব করা সম্ভব হবে না।
ডান প্রান্তে দেখা যাবে নন্দকুমারকে। তিনিও এ বার নতুন এসেছেন। ভারতীয় ফুটবলের আর এক তরুণ প্রতিভা। তবে তাঁরও ডার্বি খেলার অভিজ্ঞতা নেই। ফলে কতটা চাপ নিতে পারবেন তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠের তুলনা করলে দেখা যাবে মোহনবাগান অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। কারণ, তাদের দলে ডার্বি খেলার অভিজ্ঞতা ও ভারতীয় ফুটলের অভিজ্ঞতা থাকা ফুটবলার বেশি। তা ছাড়া অনেক দিন ধরে একসঙ্গে খেলছেন তাঁরা। সেই তুলনায় ইস্টবেঙ্গলের বেশির ভাগ ফুটবলার নতুন। তাই বাগান ফুটবলারদের টেক্কা দিতে সমস্যায় পড়তে পারে তারা।