Sourav Ganguly

‘খেলোয়াড়দেরই আরও বেশি করে প্রশাসনে আসা দরকার’, মোহনবাগান ক্লাবে এসে বললেন সৌরভ

ভারতের খেলাধুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গেলে আরও বেশি করে এগিয়ে আসতে হবে খেলোয়াড়দেরই। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের আরও বেশি করে যুক্ত করতে হবে। মোহনবাগান ক্লাবে এসে বললেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:৪১
Share:

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

ভারতের খেলাধুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গেলে প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের নয়, আরও বেশি করে এগিয়ে আসতে হবে খেলোয়াড়দের। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের আরও বেশি করে যুক্ত করতে হবে ক্লাবে। বৃহস্পতিবার মোহনবাগান তাঁবুতে অমর একাদশের মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসে বললেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি তিনি এটাও বললেন, খেলোয়াড় হতে গেলে অর্থ কোনও বাধা হতে পারে না। ইচ্ছাশক্তিটাই আসল।

Advertisement

বৃহস্পতিবার মোহনবাগান তাঁবুতে ১৯১১-র আইএফএ শিল্ডজয়ী ১১ জন ফুটবলারের (যাঁরা অমর একাদশ নামে পরিচিত) মূর্তি উন্মোচন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন সৌরভ। সেখানে নিজের খেলা দেখা, খেলাধুলোর মান এবং প্রশাসনিক বিষয়-সহ বিভিন্ন দিকের কথা তুলে ধরলেন তিনি।

সৌরভ বলেন, “খেলাধুলো তখনই এগোবে যদি প্রাক্তন খেলোয়াড়েরা তার সঙ্গে যুক্ত থাকেন।” মোহনবাগানের সচিব দেবাশিস দত্তকে অনুরোধও করেন ক্লাবের প্রাক্তন খেলোয়াড়দের আরও বেশি করে ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে ভারতের বড় খেলাধুলোগুলিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শীর্ষ পদে রয়েছেন প্রাক্তন খেলোয়াড়েরা। ক্রিকেটে রয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী রজার বিন্নী, ফুটবলে কল্যাণ চৌবে, অ্যাথলেটিক্সে আদিল সুমারিওয়ালা, হকিতে দিলীপ টিরকে, অলিম্পিক্স সংস্থায় পিটি ঊষা প্রমুখ। সৌরভ চান, এই তালিকা আরও দীর্ঘ হোক।

Advertisement

অমর একাদশের মূর্তি। ছবি: মোহনবাগান।

মোহনবাগানের তরফে এ দিন সৌরভ এবং রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হাতে তুলে দেওয়া হয় নতুন সদস্য কার্ড। সৌরভ বলেন, “আমি এই ক্লাবের সঙ্গে দু’ভাবে যুক্ত। ছোটবেলায় বাবার কার্ড নিয়ে এসে র‌্যাম্পার্টে বসে চুটিয়ে খেলা দেখেছি। বিদেশ (বসু), মানস (ভট্টাচার্য), প্রসূন (বন্দ্যোপাধ্যায়) কোথায় খেলত এখনও বলে দিতে পারি। এত বার এসে খেলা দেখছি। আসলে ছোটবেলায় বেশি ফুটবল দেখেছি। ক্রিকেটে আসা অনেক পরে। দেখে ভাল লাগছে যে ১৯১১ সালের ফুটবলারদের সম্মান দিচ্ছে মোহনবাগান। সেই সময় থেকেই সবাই ভেবেছে আমরাও খেলতে পারি।”

সৌরভের সংযোজন, “যে কোনও খেলাতেই খেলোয়াড়ের জায়গা সবার আগে। অনেকেই বলেন, খেলতে গেলে পয়সা লাগে। কিন্তু (সুনীল) গাওস্কর, কপিলদের সময়েও তো পয়সা ছিল না। খেলা কি আটকে থেকেছে? আমিও প্রথম প্রথম রঞ্জি ম্যাচ খেলার সময় ৪০০ টাকা পেতাম। ক্রিকেটার হওয়ার পথে তা কোনও দিনই বাধা হয়নি। আসল ব্যাপার হল হৃদয় এবং জেদ। নিজের ইচ্ছা, পায়ে বল এবং মাঠ থাকলেই ফুটবলার হওয়া যায়। অর্থ সেখানে কোনও বাধা হতে পারে না।”

এ দিন মোহনবাগানের তরফে অমর একাদশের পরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। পাশাপাশি প্রাক্তন ফুটবলার সৈয়দ নইমুদ্দিন, শ্যাম থাপা, গৌতম সরকার, প্রদীপ চৌধুরি, মানস ভট্টাচার্য, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত ভট্টাচার্য-সহ বহু প্রাক্তন ফুটবলারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এসেছিলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, গায়িকা লোপামুদ্রা মিত্র এবং লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায়ও।

অনুষ্ঠানে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বাংলার ফুটবলের মান এবং রেফারিং নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। তিনি বললেন, “আমাদের ফুটবল আর আগের জায়গায় নেই। ময়দানের ফুটবল ফিরিয়ে আনতে হবে। এখানে যে প্রাক্তন ফুটবলারেরা রয়েছেন তারা আমাদের কত কত সন্তোষ ট্রফি দিয়েছেন। কিন্তু এখনকার বাংলা দল দু’বার সন্তোষের মূল পর্বেই যেতে পারল না। তেমনই হয়েছে রেফারিং। জঘন্য বললেও কম বলা হয়। কলকাতার প্রতিটি মাঠ থেকে অভিযোগ যায়। গত কালই মোহনবাগানের ম্যাচে কার্ডের ছড়াছড়ি দেখলাম। এটা ফুটবলের জন্য ভাল বিজ্ঞাপন নয়।”

মোহনবাগানের লনে স্থাপিত অমর একাদশের মূর্তিটি তৈরি করেছেন অমর হালদার এবং প্রিয়ব্রত হালদার। প্রায় সাড়ে তিন মাস লেগেছে মূর্তিটি তৈরি করতে। পাশাপাশি মোহন-সচিব দেবাশিস দত্ত জানান, এখন থেকে সদস্যদের দু’টি নয়, একটিই কার্ড দেওয়া হবে। ১ জানুয়ারি থেকে সদস্যপদের পুনর্নবীকরণ চালু হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement